করোনাভাইরাসে সারা বিশ্ব ছেয়ে যাওয়ার পর তার প্রতিষেধক টিকা জোগাড়ের জন্য নানা দেশ এখন মরিয়া। টিকা তৈরির গবেষণা মূলত চলছে ধনী দেশগুলোতে। করোনার কার্যকর টিকা তৈরির পর এই দেশগুলো যে নিজের নাগরিকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই টিকা সরবরাহ করবে তাতে সন্দেহ নেই। ফলে এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকায় বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে এসব ধনী দেশের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে। আর এই সংকট খুলে দিয়েছে ভ্যাকসিন কূটনীতির দুয়ার। টিকা নিয়ে কূটনীতি লড়াইয়ে থাকা দেশগুলোর মধ্যে আছে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান। খবর বিবিসি বাংলার।
কোভিড-১৯ এর গবেষণা ও উৎপাদনের সাথে জড়িত কিছু দেশ এই ভ্যাকসিনকে ব্যবহার করছে তাদের প্রভাব বিস্তার ও স্বার্থসিদ্ধির কাজে। ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত এক নিবন্ধের হিসেব অনুযায়ী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদস্য ১৯৪টি দেশে করোনার দুটি টিকার জন্য ১৫০০ কোটিরও বেশি ডোজের প্রয়োজন হবে। এই হিসেবটা করা হয়েছে যদি কে আগে কে পরে পাবে সেই বিবেচনা করা না হয়। নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে, করোনার ২৭৩টি ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা চললেও মোট ১২টি ভ্যাকসিন গবেষণার তৃতীয় ধাপ পার হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকটি ভ্যাকসিনের ৭০% থেকে ৯৫% কার্যকারিতা লক্ষ্য করা গেছে। এর মধ্যে ছয়টি ভ্যাকসিনকে বিভিন্ন দেশের সরকার জনগণের ওপর ব্যবহারের জন্য অনুমতি দিয়েছে। এগুলো হলো ফাইজার-বায়োএনটেক কোম্পানির তৈরি টোজিনামেরান, মডার্না কোম্পানির এমআরএনএ-১২৭৩, চীনা কোম্পানি সিনোফার্ম ও সিনোভ্যাকের দুটি ভ্যাকসিন, রুশ কোম্পানি গামালেয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তৈরি একটি এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি একটি ভ্যাকসিন। আর এসব ভ্যাকসিন হাতে পাওয়ার জন্য ধনী দেশগুলো আগে থেকেই আগাম বুকিং দিয়ে রেখেছে।
চরম স্বাস্থ্য সংকটের মুখে দরিদ্র দেশগুলোও চেষ্টা করছে যত দ্রুত সম্ভব এই টিকা সংগ্রহ করতে। আর এখানেই সুযোগ তৈরি হয়েছে প্রভাব বিস্তারের।
ভার্জিনিয়া কমনওলেথ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জুডি টুইগ বলেন, দ্রুত ভ্যাকসিন পাওয়ার প্রশ্নে নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মধ্যে একটি মরিয়া ভাব তৈরি হয়েছে।