কুষ্টিয়ার সবুজেরই মেয়ে অভিশ্রুতি, জানাল ডিএনএ

| সোমবার , ১১ মার্চ, ২০২৪ at ৮:৩৫ পূর্বাহ্ণ

রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে আগুনে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী পরিচয়ে সাংবাদিকতা করা যে তরুণীর মৃত্যু হয়েছে, তিনি যে কুষ্টিয়ার খোকসার শাবরুল আলম ওরফে সবুজ শেখের মেয়ে, সেটির প্রমাণ মিলেছে ডিএনএ পরীক্ষায়। গত ২৯ ফেব্রুয়ারির মর্মান্তিক সেই মৃত্যুর পর তিনি অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নাকি বৃষ্টি খাতুন, এ নিয়ে তৈরি হয় ধোঁয়াশা।

ঢাকার একটি গণমাধ্যমে কাজ করা তরুণী নিজেকে অভিশ্রুতি পরিচয় দিয়ে রমনা কালীমন্দিরে পূজাঅর্চনাও করতেন। সহকর্মীরা তাকে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হিসেবেই জানত। তবে মরদেহ নিতে এসে শাবরুলের বক্তব্যে তৈরি হয় প্রশ্ন। তিনি দাবি করেন, মেয়েটির নাম বৃষ্টি খাতুন, অর্থাৎ তিনি মুসলমান পরিবারের সন্তান। সবুজ সেই তরুণীর যে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়েছিলেন, তাতে বৃষ্টি খাতুন নাম দেখে প্রতারক ভেবে পুলিশ তাকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদের পর অবশ্য ছেড়ে দেওয়া হয়। ধর্ম পরিবর্তন বিশ্বে কোনো নতুন ঘটনা না হলেও মুসলমান কোনো পরিবারের সন্তানের হিন্দু ধর্ম গ্রহণের উদাহরণ দেখা যায় না। আর বন্ধু ও পরিচিতজনদের বক্তব্যে উঠে আসে নানা বক্তব্য।

এমন বর্ণনাও আসে যে, মেয়েটি মনে করতেন তিনি পালিত সন্তান। তার আসল বাবামা ছিলেন ভারতের, তারা হিন্দু ধর্মাবলম্বী। সবুজ যখন তার বক্তব্যে অটল, তখন ডিএনএ পরীক্ষায় পরিচয় শনাক্তের কথা বললে তাতে রাজি হন তিনি। ১০ দিন পর সেই পরীক্ষার ফল মিলেছে। খবর বিডিনিউজের।

সবুজ ও তার স্ত্রী বিউটি বেগমের দেওয়া ডিএনএ নমুনার সঙ্গে ওই নারী সাংবাদিকের ডিএনএ নমুনা মিলেছে বলে জানিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি। সিআইডির ডিআইজি একেএম নাহিদুল ইসলাম গতকাল রাতে বলেন, যে দুটি লাশের পরিচয় শনাক্ত করা যাচ্ছিল না ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তা নিশ্চিত হওয়া গেছে। এদের একজন কুষ্টিয়ার খোকসার শাবরুল আলমের মেয়ে সাংবাদিক বৃষ্টি খাতুন। আরেকজন ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের ছেলে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাজমুল ইসলাম। শনিবার তাদের ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদন হাতে পেয়েছে সিআইডি।

তবে গতকাল রাত পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে পরিবারকে কিছু জানানো হয়নি বলে জানান বৃষ্টির চাচাত ভাই টিটু হোসেন। তিনি বলছেন, বৃষ্টির বাবা মেয়ের লাশ বুঝে নিতে অপেক্ষায় আছেন। তবে এখনো পুলিশের তরফ থেকে আমাদের কিছুই জানানো হয়নি।

এক প্রশ্নে সিআইডি কর্মকর্তা নাহিদুল ইসলাম বলেন, যেহেতু পরিচয় শনাক্ত হয়েছে, এখন আমরা মরদেহ হস্তান্তর করে দেব। মরদেহ দুটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে।

অভিশ্রুতি নামে সেই তরুণী কাজ করতেন দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ নামের একটি নিউজ পোর্টালে। সম্প্রতি সেই চাকরি ছেড়ে দেন। তার যোগ দেওয়ার কথা ছিল আরেকটি সংবাদমাধ্যমে। রিপোর্ট ডট লাইভ ছেড়ে কেস্টারটেক নামে একটি অনলাইন মাল্টিমিডিয়া কোম্পানিতে যোগ দেওয়া তুষার হাওলাদারের সঙ্গে গ্রিন কোজি কটেজে কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁয় গিয়েছিলেন অভিশ্রুতি। তুষারও মারা যান সেই রাতে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৩৩ বছর পর ফেরা
পরবর্তী নিবন্ধউন্নয়নে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে এসেছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী