কুয়েতে শ্রমিক ভবনে আগুন, নিহত ৪৯

বাংলাদেশি হতাহতের তথ্য নেই দূতাবাসের কাছে

| বৃহস্পতিবার , ১৩ জুন, ২০২৪ at ৮:৫৫ পূর্বাহ্ণ

কুয়েতের দক্ষিণাঞ্চলীয় আহমাদি গভর্নরেটের মানগাফ এলাকায় বিদেশি শ্রমিকদের বসবাসের জন্য বরাদ্দ করা একটি ভবনে আগুন লেগে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৯ জনে পৌঁছেছে। গতকাল বুধবার স্থানীয় সময় ভোররাতে ভবনটিতে আগুন লাগে। ওই সময় ভবনটি থাকা অধিকাংশ শ্রমিকই ঘুমিয়ে ছিলেন। ঘুমের মধ্যেই অনেক আগুনের ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান। নিহত শ্রমিকরা কোন কোনদেশের নাগরিক তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট জানা যায়নি। তবে কুয়েতে বিপুল সংখ্যক বিদেশি কর্মীর বেশিরভাগই এসেছে দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলো থেকে। আগুনে আহত শ্রমিকদের দেখতে এর মধ্যে হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন ভারতের রাষ্ট্রদূত। নিহতদের মধ্যে অন্তত ৪০ জন ভারতীয় শ্রমিক আছে বলে জানানো হচ্ছে ভারতের পত্রপত্রিকাগুলোতে। এ ঘটনায় বাংলাদেশি কারো হতাহত হওয়ার কোনো তথ্য এখনও পায়নি দূতাবাস। খবর বিডিনিউজের।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, একটি হাসপাতালে ৩০ জনের বেশি ভারতীয় শ্রমিককে ভর্তি করা হয়েছে এবং আরও অন্তত ৭৪ জন শ্রমিক হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে স্যোশাল মিডিয়ায় জানিয়েছে ভারতীয় দূতাবাস। ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডের খবরকে খুবই দুঃখজনক অভিহিত করে স্যোশাল মিডিয়া এঙে পোস্ট দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

কুয়েতের উপপ্রধানমন্ত্রী শেখ ফাহাদ গতকাল সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এ অগ্নিকাণ্ডের জন্য আবাসন মালিকদের দায়ী করে বলেছেন, তাদের লোভ ও নিয়মনীতি লঙ্ঘনের কারণেই ঘটনাটি ঘটেছে। বুধবার স্থানীয় সময় ভোর ৬টায় কর্তৃপক্ষ আগুন লাগার খবর পায় বলে জানিয়েছেন কুয়েত পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মেজর জেনারেল ইদ রাশিদ হামাদ। রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনকে জেনারেল হামাদ বলেন, যে ভবনে আগুন লেগেছে সেটিতে শ্রমিকরা থাকত। সেখানে বহু শ্রমিক ছিল। তাদের অনেককে উদ্ধার করা হয়েছে, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আগুনের ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে তাদের অনেকের মৃত্যু হয়েছে। ভবনগুলোতে একসঙ্গে অনেক শ্রমিককে না রাখার জন্য তারা ‘সবসময় সতর্ক করে আসছেন’ বলে দাবি করেছেন তিনি।

স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভবনটিতে ১৯৬ জন শ্রমিক বাস করতেন। আগুন লাগার সময় সেখানে ‘বিপুলসংখ্যক মানুষ’ ছিল বলে রাষ্ট্রীয় টিভিকে জানিয়েছেন কুয়েতের এক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা। কুয়েত দমকল বাহিনীর জনসংযোগ বিভাগ জানিয়েছে, দমকল বিভাগ ভোররাত সাড়ে ৪টার দিকে আগুন লাগার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ নেয় আর দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের অধিকাংশই ঘুমের মধ্যে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। তবে ভবনটি থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাসিন্দাকে বের করে আনা হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অগ্নিদগ্ধদের বিস্তৃত চিকিৎসা সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কী থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল তা র্নিধারণ করতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

বাংলাদেশি হতাহতের তথ্য নেই : কুয়েত সিটিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের শার্জ দা অ্যাফেয়ার্স আবুল হোসেন গতকাল রাতে বলেন, কুয়েতে যে কোম্পানির ভবনে আগুন লেগেছে, সেখানে আমাদের জানামতে কোনো বাংলাদেশি কাজ করেন না। মূলত ভারতীয় এবং নেপালিরা কাজ করে। তারপরও ওই ঘটনায় বাংলাদেশিদের কেউ আছে কিনা, আমরা সেই ভবনে খোঁজখবর করেছি। বাংলাদেশি নার্সের মাধ্যমে হাসপাতালেও খোঁজখবর নিয়েছি। এখন পর্যন্ত কোনো বাংলাদেশি ওই ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর আমাদের কাছে নাই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবল এখন ইসরায়েলের উঠানে : হামাস
পরবর্তী নিবন্ধদুয়েক সময় আমাদের ট্রলার-টহল বোটে গুলি লেগেছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী