সাঁতরে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া চ্যানেল পাড়ি দিলেন ১৫ জন সাঁতারু। চার কিলোমিটার দীর্ঘ চ্যানেলটি পাড়ি দিতে প্রথম জন সময় নিয়েছেন মাত্র ১ ঘণ্টা ২৫ মিনিট। বাংলাদেশ ওপেন ওয়াটার সুইমিং এই সাঁতারের আয়োজন করে। জল দূষণ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি এবং জল পর্যটন ও সাঁতারের প্রতি মানুষকে উৎসাহিত করতে এ উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
বাংলাদেশ ওপেন ওয়াটার সুইমিং (বোয়াস) এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো দেশের অন্যতম দুঃসাহসিক ওয়াটার স্পোর্টস ইভেন্ট “পাহাড় থেকে ডট কম কুতুবদিয়া চ্যানেল সুইমিং ২০২৫”।
একদল সাতারুর রোমাঞ্চকর সমুদ্রযাত্রা। সুনিপুণ কৌশলে চারপাশের অথৈ জলকে বশে এনে সামনের দিকে এগিয়ে চলে সাতারুরা। হাত-পায়ের দক্ষতায় নোনাজলের শরীর ভাসিয়ে রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার এ এক অনন্য অভিজ্ঞতা। গন্তব্য ৪ কিলোমিটার দূরের সাগরবেষ্টিত দ্বীপ কুতুবদিয়া। কুতুবদিয়া চ্যানেল পাড়ি দিতে প্রথম স্থান অর্জন করা সাতারু সাইফুল ইসলাম রাসেলের সময় লাগে মাত্র ১ ঘন্টা ২৫ মিনিট।
এ বছর এই চ্যানেল সুইমিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে ১৫ জন সাহসী সাতারু, যারা পেকুয়া উপজেলার মগনামা ঘাট থেকে শুরু করে দীর্ঘ ৪ কিলোমিটার সাঁতরে পৌঁছান কুতুবদিয়ার বড়ঘোপ ঘাটে।
ইভেন্টটির শুভ উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ওপেন ওয়াটার সুইমিং (বোয়াস)-এর উপদেষ্টা জনাব শিমুল চৌধুরী। এসময় পরিবেশ বিষয়ক নাগরিক সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা’র) পেকুয়া উপজেলা সিনিয়র সহ সভাপতি পেকুয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল হাসেম উপস্থিত ছিলেন।
সকাল ১১টায় শুরু হওয়া এই প্রতিযোগিতা ছিল অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং, যেখানে অংশগ্রহণকারী সাতারুরা প্রদর্শন করেন অসাধারণ দক্ষতা ও মানসিক দৃঢ়তা।
অন্যান্য অংশগ্রহণকারী ছিলেন, মোঃ মাহমুদুল হাসান, মোঃ জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, এসএম শাহরিয়ার মাহমুদ, শাহনেওয়াজ বাবু, মোঃ আব্দুল মাতিন, আলি রওনক (সৌরভ), মোঃ শহীদুল্লাহ্ বাগমার প্রান্তিক, মোঃ হাবিবুর রহমান, মোঃ জিহাদ হোসেন, শরীফ মোঃ ফয়সাল, নাসির আহমেদ সৌরভ, মোঃ শাখাওয়াত হোসেন সাকিব এবং মোঃ ফয়সাল জিয়া।
ইভেন্টটির টাইটেল স্পনসর ছিল “পাহাড় থেকে ডট কম” এবং রেসকিউ পার্টনার হিসেবে পাশে ছিল “কক্সবাজার ট্রায়াথলেট”।
উল্লেখযোগ্য যে, অংশগ্রহণকারী সাতারুদের মধ্যে রয়েছেন এমন অনেকে যারা সফলভাবে বাংলা চ্যানেল পার করেছেন এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতাও রয়েছে।
কুতুবদিয়া চ্যানেলটি প্রথম আবিষ্কৃত হয় ২০২২ সালে তিনজন তরুণ সাতারু – জিহাদ হোসেন, শরীফ মোঃ ফয়সাল এবং নাসির আহমেদ সৌরভ এর মাধ্যমে। সেই ধারাবাহিকতায় এই বছরও অনুষ্ঠিত হলো এই প্রতিযোগিতা।
আয়োজক কমিটির সমন্বয়ক জিহাদ হোসেন বলেন, আমরা তরুণ প্রজন্মকে সাতারে উৎসাহিত করতে চাই, তাদের সাহস ও শারীরিক সক্ষমতার বিকাশে কাজ করতে চাই। ভবিষ্যতে দেশের আরও বিভিন্ন জেলায় এমন আয়োজন করার পরিকল্পনা আছে আমাদের।
বাংলাদেশে ওপেন ওয়াটার সুইমিংকে জনপ্রিয় করতে বোয়াসের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।