কুকুর যেখানে মানুষ ও প্রকৃতির জন্য সমস্যা

সেন্টমার্টিনে বন্ধ্যাত্বকরণ কর্মসূচি

টেকনাফ প্রতিনিধি | শনিবার , ২৫ নভেম্বর, ২০২৩ at ৮:৩৭ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপে লোকসংখ্যা অনুপাতে কুকুরের সংখ্যা বেশি। মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন বলে কুকুরগুলো অন্য এলাকায় যেতে পারে না। কুকুরের উৎপাতে সৈকতে মা কাছিম ডিম পাড়তে আসে না। আক্রান্তের ভয়ে অনেক সময় স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকরা কুকুরের প্রতি নির্দয় আচরণ করে। তাই এবার দ্বীপের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কুকুরের বন্ধ্যাত্বকরণ কর্মসূচি শুরু করছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনে। গতকাল শুক্রবার বিকাল ৩টার দিকে সেন্টমার্টিন সৈকতের জেটিঘাটে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ও টেকনাফ উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এ কর্মসূচি শুরু হয়। কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী।

এ সময় সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান, স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা ও চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন। কর্মসূচিতে জানানো হয়, দেশের অন্য এলাকার কুকুরের সঙ্গে সেন্টমার্টিনে বসবাসরত কুকুরের মধ্যে পার্থক্য আছে। এখানকার কুকুরের স্বাভাবিক প্রজনন হার অনেক বেশি এবং কুকুরছানার মৃত্যুহারও কম। এ কারণে অনিয়ন্ত্রিত কুকুর বৃদ্ধিতে দ্বীপের সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য, স্বাভাবিক বাস্তুসংস্থানের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার পক্ষে ক্রমশ হুমকি হয়ে উঠছে। এ জন্য ঢাকা থেকে ৩ জন রেজিস্টার্ড ভেটেরিনারি ডাক্তার, ৫ জন ভেট সহকারি ও ২৫ জন প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবকের টিম কাজ করছেন।

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বোর্ড সদস্য মো. জামাল উদ্দিন বলেন, ‘কুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে তাদের নৃশংস নিধন কিংবা অপসারণ কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। কুকুর নিধন, অপসারণের কাজটি বেশ অমানবিক, বিপজ্জনক। পরিবেশ দূষণ ও রোগ সংক্রমণের বড় কারণ। এতে ব্যয়ও অনেক। এতে তাদের সংখ্যা আপাতত কমছে মনে হলেও পরবর্তীতে উল্টো বেড়ে যায়। কুকুর নিধন কিংবা অপসারণ বৈজ্ঞানিকভাবে অকার্যকর প্রমাণিত। উদ্ভূত সমস্যা নিরসনে একমাত্র বন্ধ্যাকরণই সেন্টমার্টিনে কুকুরের সংখ্যাধিক্য হ্রাস ও নিয়ন্ত্রণের টেকসই এবং বিজ্ঞানসম্মত সমাধান।’ টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ‘দ্বীপে প্রতিনিয়ত কুকুরের সংখ্যা বাড়ছে। কুকুরের কারণে দ্বীপের বাহিরে যেতে না পারেনা পর্যটকেরা। তাই এটি একটি ভালো উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছেন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধমনোনয়ন ফরম নেননি রওশন এরশাদ ও সাদ
পরবর্তী নিবন্ধগাছিদের ব্যস্ততা বেড়েছে