কাশবন গ্রামটি ছিলো শরতের রূপকথার মতো। শরৎ এলেই চারিদিক সাদা কাশফুলে ভরে যেত। শিশুরা মাঠে দৌড়াতো, বাতাসে উড়তো কাশফুলের রেশমি সুতো। তবে কাশবনের সবচেয়ে মজার ঘটনা ছিল কাশবনের রাজকুমার একটি ছোট্ট, সাদা কাশফুল যার রাজত্ব ছিলো পুরো কাশবন জুড়ে!
রাজকুমারের নাম ছিলো কাশু। সে ছিলো খুবই দুষ্টু, হাওয়ার সাথে দৌড়াতো, পাখিদের সাথে খেলতো, আর বাচ্চাদের সাথে লুকোচুরি খেলতে খুব পছন্দ করতো। সে ভাবতো পুরো কাশবনটাই তার রাজ্য, আর সে এই রাজ্যের একমাত্র রাজকুমার। তার সাদা–সুন্দর পোশাক আর উড়ন্ত ভাব দেখে সবাই তাকে খুব ভালোবাসতো।
একদিন কাশু হাওয়ার সাথে মিশে উড়তে উড়তে অনেক দূর চলে গেল। সে ভাবলো, “আচ্ছা, আমার রাজ্য কত দূর পর্যন্ত বিস্তৃত? আমি কোথায় গিয়ে শেষ করি?”
কাশু উড়ে উড়ে এল এক বিশাল পুকুরের ধারে। সেখানে শাপলা ফুলেরা মিটিমিটি হাসছিলো। তারা বলল, “তুমি তো আমাদের রাজ্যে এসেছো! এখানে আমরা রাজকুমারী।”
কাশু হেসে বলল, “আমি তো কাশবনের রাজকুমার, শাপলাদের রাজ্যে কি করবো?”
শাপলারাও হেসে বলল, “তুমি একদিন আমাদের রাজকুমার হয়ে দেখো না! আমরা তোমাকে নতুন পোশাক দেবো।”
কাশু খুশি হয়ে রাজি হল। শাপলারা তাকে পরিয়ে দিলো গোলাপি আর সাদা পাপড়ির মুকুট। এখন কাশু শুধু কাশবনের রাজকুমার না, শাপলাদের রাজ্যেরও রাজকুমার!
কিন্তু বিকেল হলে হাওয়া এসে বলল, “কাশু, এবার তোমার রাজ্যে ফিরে যাও, সবাই তোমার অপেক্ষায় আছে।”
কাশু আবার হাওয়ার সাথে উড়তে উড়তে কাশবনে ফিরে এল। সেখানে সবাই তাকে দেখে খুব খুশি হলো। কাশু বুঝতে পারলো, তার রাজ্য আসলে সবখানেই যেখানে সে ভালোবাসা পায়, যেখানে সে খুশি থাকে, সেখানেই তার রাজত্ব।
শিশুরা কাশুর গল্প শুনে হাসতে হাসতে মাঠে দৌড়াতে লাগলো, আর কাশফুলেরা হাওয়ার সাথে উড়ে উড়ে বলল, “কাশবনের রাজকুমার কাশু!”