নগরের কালুরঘাটে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জায়গায় একটি ডেন্টাল কলেজ ও ডেন্টাল হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। একইসঙ্গে হাটহাজারী ও কর্ণফুলী উপজেলায়ও পৃথক দুটি হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা আছে সরকারের।
গতকাল সকালে নগরের সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত ‘চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন এবং অক্সিজেন–হাটহাজারী মহাসড়কের উন্নয়ন সংক্রান্ত’ সভায় এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। সভায় চট্টগ্রামে একটি পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নির্মাণের দাবি জানান সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এরপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা কালুরঘাটে ডেন্টাল কলেজ ও ডেন্টাল হাসপাতাল নির্মাণের তথ্য জানান।
এছাড়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওপর রোগীর ব্যাপক চাপ সংক্রান্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা দুই উপজেলায় দুটি হাসপাতাল নির্মাণের বিষয়টি সভায় অবহিত করেন।
ডেন্টাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল : সভায় সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘চট্টগ্রামে একটি পূর্ণাঙ্গ ডেন্টাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল দরকার। আমি মনে করি, এটা সিআরবিতে রেলওয়ে হাসপাতালে হলে ভালো হবে।
এ বক্তব্যের প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা কী বলেছেন জানতে চাইলে ডা. শাহাদাত আজাদীকে বলেন, তখন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, রেলওয়ে হাসপাতালে করতে পারছি না। কালুরঘাটে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের ৫ একর একটা জায়গা আছে, সেখানে করার পরিকল্পনা আছে।
জানা গেছে, গত ১৬ এপ্রিল সিটি মেয়রের সঙ্গে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মো. আবদুর রব, সহযোগী অধ্যাপক ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটের প্রধান ডা. মনোজ কুমার বড়ুয়া, ডা. এস এম সারোয়ার আলম, ডা. মো. কামাল উদ্দিন, ডা. মো. আবুল হোসেন, ডা. রাহাত খানসহ একটি প্রতিনিধি দল নগরে ডেন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠা নিয়ে বৈঠক করেন। টাইগারপাস নগর ভবনের অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে নগরে ডেন্টাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নির্মাণে চারটি জায়গার প্রস্তাব করা হয়। এগুলো হল– রেলওয়ে হাসপাতাল, কালুরঘাট মোহরার বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট, হামিদচর, চান্দগাঁও বন্দর মৌজা (আনুমানিক ৭৩ একর খাস) সমন্বিত সরকারি অফিস স্থানান্তর এলাকা এবং আমিন জুট মিলস এলাকা। ওই বৈঠকে সবাই নগরের সিআরবিতে অবস্থিত রেলওয়ে হাসপাতালে একটি পূর্ণাঙ্গ ডেন্টাল কলেজ বাস্তবায়নে একমত হন।
হাটহাজারী ও কর্ণফুলীতে হবে হাসপাতাল : গতকালের সভায় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম হাটহাজারী ও কর্ণফুলী এলাকায় পৃথক দুটি হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানান। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আমি পরিদর্শন করেছি। আমি দেখেছি ধারণক্ষমতা দুই হাজার হলেও রোগী প্রায় ৫ হাজার। ব্রেইন সার্জারির রোগীকে ফ্লোরে শুইয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়, টয়লেটের পাশেও রোগী ফ্লোরে শুয়ে চিকিৎসা নেয়। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হাটহাজারী ও কর্ণফুলী এলাকায় দুটি হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে। এতে রাঙামাটি–কাপ্তাই ওদিকের অঞ্চলের রোগীরা হাটহাজারী হাসপাতালে সেবা নিতে পারবেন এবং পটিয়া–সাতকানিয়া–চন্দনাইশ অঞ্চলের রোগীরা কর্ণফুলী হাসপাতালে সেবা নিতে পারবেন।