কালুরঘাট সেতুতে সিগন্যাল অমান্য করে ট্রেনের সাথে মোটরসাইকেল ও ও সিএনজি চলাচল এখনো থামেনি। সেতুতে কক্সবাজারগামী ট্রেন আসা–যাওয়ার আগ মুহূর্তে গেটকিপার সিগন্যাল দেওয়ার পরও মোটরসাইকেল ও সিএনজি চালকরা সিগন্যাল অমান্য করে সেতুতে উঠে যাচ্ছেন। এর ফলে যে কোনো মুহূর্তে আবারও সেতুর উপর বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
গতকাল বিকেলে কালুরঘাট সেতুতে দেখা যায়, সেতুর পশ্চিম পাশে রেলওয়ের গেটকিপার সিগন্যাল দেওয়ার পরও মোটরসাইকেল চালক ও সিএনজি চালকরা সিগন্যাল অমান্য করে ট্রেনের পেছনে পেছনে এক সাথে চলতে শুরু করেছেন।
কালুরঘাট সেতু এলাকার অস্থায়ী গেইটকিপার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচলে কোনো ধরনের নিয়মনীতি মানছেন না মোটরসাইকেল ও সিএনজি চালকরা। সেতুতে ট্রেন ওঠার আগে সিগন্যাল দেয়া হলেও বেপরোয়া মোটরসাইকেল, সিএনজি টেক্সিসহ ছোটখাট গাড়িগুলো সিগন্যাল অমান্য করে ট্রেনের পেছন পেছন ছুটতে থাকে। সেতু দিয়ে ট্রেন পার হওয়ার ৫ মিনিট সময়ও অপেক্ষা করতে চান না তারা। সেতুতে ট্রেন ওঠার সাথে সাথে ব্যারিয়ার নিজেরা তুলে সেতুতে গাড়ি তুলে দেন।
এদিকে গত ৫ জুন রাত সাড়ে ১০টার দিকে কালুরঘাট সেতুর পূর্ব প্রান্তে বোয়ালখালী উপজেলার ওই অংশে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা পর্যটক এক্সপ্রেসের ধাক্কায় কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল দুমড়ে–মুচড়ে যায়। এই ঘটনায় এক শিশুসহ তিনজন নিহত হয়েছিলেন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওইদিন সিগন্যাল অমান্য করে অন্তত আটটি গাড়ি একসঙ্গে সেতুর ওপর উঠে যায়। এর মধ্যে একটি অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয় দ্রুতগামী পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি।
শতবর্ষী কালুরঘাট সেতুটি মূলত কক্সবাজারগামী ট্রেন চলাচলের জন্য ১৪ মাস সংস্কার কাজ শেষে নতুন রূপ দেয়া হয়েছে। সংস্কারের পর এখন এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন ঢাকা–কক্সবাজার এবং চট্টগ্রাম–কক্সবাজার ৪টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। পাশাপাশি দোহাজারী বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তেলবাহী ওয়াগন চলাচল করে।
কক্সবাজারগামী আন্তঃনগর ট্রেনগুলো দ্রুতগতির ট্রেন। এই সেতু দিয়ে এখন কোনো লোকাল ট্রেন চলছে না।
ট্রেন পারাপারের ৫ মিনিট আগে থেকে সেতুতে কোনো ধরনের যানবাহন যাতে উঠতে না পারে এজন্য গেটম্যান ব্যারিয়ার ফেলে দেন। এসময় মোটরসাইকেল চালক ও সিএনজি যাত্রীরা ব্যারিয়ার তুলে ট্রেনের পেছনে পেছনে সেতুতে ওঠে যান। তাদেরকে নিষেধ করলেও শোনেন না। এভাবে ট্রেনের পেছন পেছন সেতু পার হওয়া বিপজ্জনক। যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় র্দুঘটনা।
সেতুর পশ্চিম পাশের স্থানীয় দোকানদার রফিকুল ইসলাম বলেন, সেতুতে ট্রেন পারাপারের সময় সেতুর ওপর কোনো ধরনের যানবাহন না ওঠার জন্য রেলওয়ের গেটম্যান ব্যারিয়ার ফেলে দেন। অপরদিকে বোয়ালখালী অংশে সেতুর ইজারাদার প্রতিষ্ঠান বাঁশ দিয়ে গাড়ি ব্লক করে দিলেও বাঁশ উল্টিয়ে মোটরসাইকেল ও সিএনজি টেক্সিগুলো সেতুতে উঠে যায়। প্রায় সময় ট্রেনের পেছনে পেছনে চলতে থাকে। অনেক সময় ট্রেনের সামনেও পড়ে যায়। ট্রেনের চালক দেখার পর ট্রেনের গতি কমিয়ে দেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ কালুরঘাট সেতুতে গত জুন মাসে ঈদের আগে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলেও এখনো নিয়মনীতি মানছেন না মোটরসাইকেল চালক ও সিএনজি চালকরা।