সাহিত্য পত্রিকা কালি ও কলমের সম্পাদক, কবি ও সাংবাদিক আবুল হাসনাত মারা গেছেন। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে গতকাল রোববার সকাল ৮টায় ধানমণ্ডির আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। আবুল হাসনাতের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক শোকবার্তায় তিনি বলেছেন, দেশে প্রগতিশীল ও মুক্ত সংস্কৃতি চর্চায় আবুল হাসনাতের অবদান জাতি সবসময় শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। জাতীয় কবিতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তারিক সুজাত বলেন, কবি আবুল হাসনাতের আসলে অনেক সমস্যাই ছিল। বেশ কয়েকদিন ধরে তার শরীরে ব্যথা ছিল। গলব্লাডারের স্টোন ছিল, তারপরে আর অপারেশন করা যায়নি। শেষ মুহূর্তে তার নিউমোনিয়ার ট্রিটমেন্ট হচ্ছিল। তার কোভিড টেস্টের রেজাল্ট নেগেটিভ এসেছিল।
ছায়ানটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রোববার বেলা সাড়ে ১২টায় ধানমণ্ডির ৭ নম্বর রোডের বায়তুল আমান জামে মসজিদে তার নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। তার আগে তার কফিন বেঙ্গল ফাউন্ডেশন ও ছায়ানটে নিয়ে যাওয়া হয় শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য। পরে বিকালে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। খবর বিডিনিউজের।
আবুল হাসনাত ১৯৪৫ সালের ১৭ জুলাই পুরান ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। সাহিত্যে তার ছদ্মনাম ছিল মাহমুদ আল জামান। ‘জ্যোৎস্না ও দুর্বিপাক’, ‘কোনো একদিন ভুবনডাঙায়’, ‘ভুবনডাঙার মেঘ ও নধর কালো বেড়াল’ আবুল হাসনাতের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। তার প্রবন্ধগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে সতীনাথ, মানিক, রবিশঙ্কর ও অন্যান্য ও জয়নুল, কামরুল, সফিউদ্দীন ও অন্যান্য। শিশু ও কিশোরদের জন্য তিনি লিখেছেন ‘ইস্টিমার সিটি দিয়ে যায়’, ‘টুকু ও সমুদ্রের গল্প’, ‘যুদ্ধদিনের ধূসর দুপুরে’, ‘রানুর দুঃখ-ভালোবাসা’।
দীর্ঘ ২৪ বছর দৈনিক সংবাদের সাহিত্য সাময়িকী সম্পাদনা করা আবুল হাসনাত আমৃত্যু কালি ও কলমের সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। পাশাপাশি চিত্রকলা বিষয়ক ত্রৈমাসিক ‘শিল্প ও শিল্পী’রও তিনি সম্পাদক ছিলেন।
১৯৮২ সালে ‘টুকু ও সমুদ্রের গল্প’ র জন্য আবুল হাসনাত অগ্রণী ব্যাংক শিশু সাহিত্য পুরস্কার পান। ২০১৪ সালে তিনি বাংলা একাডেমির সম্মানসূচক ফেলো মনোনীত হন।