কাল মহান বুদ্ধ পূর্ণিমা

ঝর্না বড়ুয়া | বুধবার , ৩ মে, ২০২৩ at ৫:৫৬ পূর্বাহ্ণ

কাল শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা তথা বৈশাখী পূর্ণিমা। বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে কপিলাবস্তুর রাজা শুদ্ধোধন আর রানী মহামায়াদেবীর রাজনন্দন সিদ্ধার্থ গৌতমের জন্ম লুম্বিনী উদ্যানে। তিনি অহিংসার বানী নিয়ে অশান্ত বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা আর মানবজাতির দুঃখমুক্তিসহ জন্ম, জরা, ব্যাধি, মৃত্যু থেকে মুক্তির উপায় খুঁজতে রাজসিংহাসন, পরমা সুন্দরী স্ত্রী যশোধরা ও সদ্যজাত পুত্র রাহুলের মায়ার বন্ধন ছিন্ন করে ২৯ বৎসর বয়সে গৃহত্যাগী হয়ে নীল আকাশের নীচে প্রকৃতির ছায়াতলে নেমে এসেছিলেন আড়াই হাজার বছরেরও আগে।

৬ বৎসর কঠোর সাধনা, গবেষণা ও তপস্যার পর ৩৫ বৎসর বয়সে গয়ার বোধিমূলে বুদ্ধত্বলাভ করেছিলেন। দীর্ঘ ৪৫ বৎসর দেব মানবের প্রভূত কল্যাণ সাধন করে ৮০ বৎসর বয়সে কুশীনগরে যমকশাল বৃক্ষের নীচে মহাপরিনির্বান প্রাপ্ত হয়েছিলেন। সিদ্ধার্থ গৌতমের জন্ম, বুদ্ধত্বলাভ আর মহাপরিনির্বান এই তিনটি বিশেষ ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল প্রকৃতির ছায়াতলে শুভ বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে যা বুদ্ধ পূর্ণিমা নামে সর্বাধিক সুপরিচিত।

সভ্যতার ক্রমবিকাশের সাথে সাথে মানুষের জীবনের অনেক উন্নতি ও পরিবর্তন হলেও মানুষ কিন্তু মানসিক ভাবে তেমন সুখী নয়। তার প্রকৃত কারণ বুদ্ধের শিক্ষা থেকে নৈতিকতার আদর্শ মানবজাতির যাপিত জীবনে ধারণ, গ্রহণ ও প্রতিপালন করতে পারেননি মনেপ্রাণে। বিশ্বব্যাপী যে যুদ্ধবিগ্রহ, দন্ধ, সংঘাত তা থেকে পরিত্রাণ লাভ করতে হলে আজকের এই সকল শান্তিকামী মানুষকে বুদ্ধের অমৃতময় শিক্ষা মৈত্রী, করুণা, মুদিতা, উপেক্ষার চর্চা করতে হবে। তবেই বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব। তথাগত বুদ্ধ বলেছেন, ‘জগতে শত্রুতার দ্বারা শত্রুতার উপশম হয় না, মৈত্রী দ্বারাই শত্রুতার উপশম হয়’ ধম্মপদ৫। তাই আজকের এই পবিত্র দিনে বিশ্ববাসীর কাছে বিনীত আহবান করবো, সকল ভেদাভেদ ভুলে চলুন, আমরা মৈত্রীই সেতুবন্ধনে আবদ্ধ হই। একমাত্র গৌতম বুদ্ধ পৃথিবীর সর্বজীবের প্রতি মৈত্রী, করুণা, মুদিতা আর উপেক্ষা দ্বারা বলেছিলেন, জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক। সকলকে মহাপবিত্র বুদ্ধ পূর্ণিমার মৈত্রীময় শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানাই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজীবন মানে যুদ্ধ
পরবর্তী নিবন্ধদূরের টানে বাহির পানে