আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের উত্তর সরেঙ্গা গ্রামের হযরত আবদুস ছমদ শাহ সড়কের কার্পেটিং কাজ প্রায় ২ বছর ধরে ঝুলে আছে। ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে সড়কের ১২শ মিটার রাস্তার এই দুরবস্থা বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। দুর্ভোগ সইতে না পেরে গতকাল শনিবার এলাকাবাসী সড়কে ধানের চারা রোপণ করে ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ জানিয়েছে। বিগত দুই বছর ধরে ঠিকাদার সড়ক খুঁড়ে ফেলে রাখার কারণে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। আনোয়ারা উপজেলা এলজিইডিই অফিস জানিয়েছে, ঠিকাদারকে এ ব্যাপারে কয়েক দফা নোটিশ করা হয়েছে। বর্ষার জন্য কাজ বন্ধ থাকলেও আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে কাজের সময় সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালে স্থানীয় ঠিকাদার মো. ইব্রাহীম ১ কোটি ২৩ লাখ টাকা বরাদ্ধে রায়পুর ইউনিয়নের উত্তর সরেঙ্গা হযরত আবদুস সমদ শাহ সড়কের ২ হাজার ৮৮ মিটার কার্পেটিং কাজ টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উন্নয়ন কাজ শুরু করে। ৮৫০ মিটার কাজ শেষ করে, বাকী ১২৩৮ মিটার সড়ক খুঁড়ে ফেলে রাখেন। বিগত দুই বছর ধরে সড়কটির কোন কাজ না করায় পরিত্যক্ত হয়ে চলতি বর্ষাতে কাদা মাঠিতে সড়কটি চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়ে।
এতে চরম দুর্ভোগের শিকার স্থানীয় কয়েক হাজার বাসিন্দা। এলাকাবাসী বারবার সড়ক উন্নয়ন কাজ শেষ করার দাবি জানালেও ঠিকাদারের দেখা না পেয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সড়কে ধানের চারা রোপণ করে প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম জানান, উত্তর সরেঙ্গা হযরত আবদুস সমদ শাহ সড়কটি চুন্নাপাড়া ও সরেঙ্গা গ্রামের প্রধান সড়ক। কিন্তু ঠিকাদার সড়কটি খুঁড়ে ফেলে রাখার কারণে সড়কটি কাঁদা মাঠিতে চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়ে। এলাকার হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ ও কষ্টের শেষ নেই। স্থানীয়রা কষ্ট সহ্য করতে না পেরে অনেকটা বাধ্য হয়ে সড়কে ধানের চারা রোপণ করে দেয়। স্থানীয়রা জানান, ঠিকাদার উপজেলা যুবলীগ নেতা হওয়ায় বিগত সরকারের আমলে কিছু বলা যেত না। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পর ঠিকাদার সড়কটি খনন করে ফেলে রাখার কারণে এলাকার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঠিকাদার মো. ইব্রাহিম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বৃষ্টির কারণে সড়কের বাকি অংশের কাজ করা যাচ্ছে না। বর্ষা শেষ হলে দ্রুত কাজ শেষ করব ইনশাল্লাহ।
আনোয়ারা উপজেলা প্রকৌশলী জাহেদুল আলম চৌধুরীর জানান, ঠিকাদার নির্দিষ্ট সময়ে সড়কটি উন্নয়ন কাজ শেষ করতে না পারায় এ বিষয়ে ঠিকাদারকে একাধিকবার নোটিশ করা হয়েছে। বর্তমানে বর্ষার কারণে কাজ শেষ করতে পারছে না। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সর্বশেষ সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে যদি কাজ শেষ করতে না পারে তাহলে তার ঠিকাদারি সনদ বাতিলও হয়ে যেতে পারে। সড়কে ধানের চারা রোপনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি জেনেছেন বলে জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আকতার জানান, এলাকাবাসী সড়কে ধানের চারা রোপনের বিষয়টি তিনি অবগত হয়েছেন। সড়কটির বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে আজ রবিবার জরুরি বৈঠক করে করণীয় ঠিক করবেন বলে জানান।