কারাগারে কয়েদীকে নির্যাতনের অভিযোগ, আদালতে মামলা

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ২৬ নভেম্বর, ২০২১ at ৬:৫৬ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম কারাগারে শামীম নামের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এক কয়েদীকে নির্যাতন করা হয়েছে, এমন অভিযোগে আদালতে একটি নালিশি মামলা হয়েছে। যেখানে বিবাদী করা হয়েছে সিনিয়র জেল সুপার শফিকুল ইসলাম, জেলার দেওয়ান তারিকুল ইসলাম, ডেপুটি জেলার মো. সাইমুর, কারারক্ষী আইজি প্রিজনের গোয়েন্দা সবুজ দাশ ও সুবেদার মো. এমদাত হোসেনকে। গতকাল বৃহস্পতিবার মহানগর হাকিম সরোয়ার জাহানের আদালতে শামীমের স্ত্রী পারভিন আক্তার হিরা এ নালিশী মামলা করেন। একপর্যায়ে আদালত নালিশী মামলাটি গ্রহণ করে আগামী ৩০ নভেম্বর আদেশের জন্য রাখেন।
মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়, কারাবিধি অনুযায়ী আসামিদের ডায়েট দেয়াটা নিয়ম হলেও গত ১২ জুলাই শামীমসহ অন্য বন্দীদের ডায়েট দেয়া হয়নি। এছাড়া প্রায় প্রতিদিনই সঠিক নিয়মে বন্দীদের খাবার দেয়া হয় না। এ অবস্থায় কয়েদী শামীম ডায়েটের কথা জিজ্ঞাসা করলে তাকে মারধর করে মারাত্মক আহত করা হয়। আরজিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ১৭ জুলাই তারিখেও শামীমের উপর নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে সন্ধ্যার দিকে কুমিল্লা কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
মামলায় বাদী পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মোতাহের হোসেন রাসিব। মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে তিনি আজাদীকে বলেন, বন্দীদের খাবার সংশ্লিষ্ট অনিয়মের প্রতিবাদ করায় কয়েদী শামীমকে নির্যাতন করা হয়েছে এবং কুমিল্লা কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি বর্তমানে দাঁড়াতে পারছেন না। এসব তুলে ধরে আমরা আদালতে একটি মামলা করেছি।
এতে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু আইনের ১৩ (১) (২) এর (ক) (খ) (গ) ধারায় অভিযোগ আনা হয়। আদালত সেটি গ্রহণ করে আদেশের জন্য আগামী ৩০ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন। তিনি বলেন, এ ঘটনা আমরা চিঠি দিয়ে জেলা প্রশাসনকেও জানিয়েছি। যাতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
এ বিষয়ে জেলার দেওয়ান তারিকুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, শামীম ফাঁসির আসামি ছিল। পরে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। সাধারণ বন্দীদের সাথে তার সবসময় ঝামেলা হত। বন্দীদের সে মানসিক নির্যাতন করতো। তার একটি গ্রুপও রয়েছে। কারাগারের জন্য এসব কোনোভাবেই ইতিবাচক নয়। যার কারণে তাকে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কুমিল্লা কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
জেলার আরো বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের যে অভিযোগ আনা হচ্ছে, সেটি পুরোটাই ভিত্তিহীন। কুমিল্লা কারাগার থেকে চট্টগ্রাম কারাগারে ফেরার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করে সফল হতে না পেরে সে আমাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনছেন।
উল্লেখ্য, একটি দায়রা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে ২০০৪ সাল থেকে চট্টগ্রাম কারাগারে ছিলেন শামীম। শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগে অসুস্থ হওয়ায় তাকে কারা অভ্যন্তরের ১৫ নম্বর মেডিকেল ওয়ার্ডে রাখা হয়। গত ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি সেখানেই ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাসে কোন রুটে ভাড়া কত দেখা যাবে অ্যাপসে
পরবর্তী নিবন্ধশিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়ার মানববন্ধন থেকে চারজন আটক, পরে মুক্ত