একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক বলেছেন, কাবাডি আমাদের ঐতিহ্য। গ্রাম বাংলায় একসময় পাড়ায় পাড়ায় কাবাড়ি খেলার আয়োজন হতো। গ্রামের কিশোর–তরুণরা এই খেলায় মেতে উঠত। গ্রামে এমন কোনো কিশোর–যুবক পাওয়া যেত না যারা কাবাডি খেলত না। ধানী জমির মাঠ থেকে স্কুলের মাঠ সর্বত্রই ব্যাপক প্রচলন ছিল কাবাডির। শুধু বিকাল বা সন্ধ্যায় নয়, চাঁদনী রাতেও কাবাডির জমজমাট আসর বসত। আর এভাবে কাবাডি আমাদের জাতীয় খেলায় পরিণত হয়।
চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি গোল্ড কাপ কাবাডি টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্বের খেলার ট্রফি বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে নগরীর হালিশহর বিকেএসপিতে কাবাডি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। আজাদী সম্পাদক বলেন, আমাদের সেই ঐতিহ্য ক্রমে হারিয়ে যাচ্ছে। এখনকার কিশোর–যুবকদের অনেকে কাবাডি খেলা দূরের কথা, অনেকে জানেও না কীভাবে এই খেলা খেলতে হয়। আমাদের সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হবে। ঐতিহ্য ধরে রাখতে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরেআলম মিনা যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। ডিআইজি সাহেবের এই উদ্যোগ আমাদের হারানো ঐতিহ্য উদ্ধারে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
খেলোয়াড়দের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, খেলার মোটো হচ্ছে জয়েন, উইন নয়। আপনারা অংশগ্রহণ করেই আজকের দিনটিকে সবার জন্য সুন্দর করে দিয়েছেন।
গ্রুপ পর্বে গতকাল কুমিল্লা জেলা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মধ্যে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এতে কুমিল্লা জেলা দল বিজয়ী হয়। বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) নুরেআলম মিনা। তিনি বলেন, কাবাডি গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলা হলেও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে। দেশের এ জাতীয় খেলাটি ধরে রাখার দায়িত্ব আমাদের সকলের। এই দায়বোধ থেকেই আমরা এই টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছি। সামনের দিনগুলোতে আমরা এই খেলার আরো আয়োজন করব।
তিনি বলেন, দেশে অন্য খেলাগুলোর আয়োজন নিয়মিত হয়ে আসছে। কিন্তু কাবাডির আয়োজন নগন্য। তাই বাংলাদেশ পুলিশ এ আয়োজন করেছে। এটি আমাদের জাতীয় খেলা। আমরা চাই এ খেলার চর্চা আরও বাড়ুক। পাশাপাশি ঐতিহ্য ফেরাতে কাবাডিতে প্রয়োজন পৃষ্ঠপোষকতা। এ আয়োজনে সব ধরনের সহযোগিতা করছে বিকেএসপি। আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছে কেএসআরএম। তিনি বিকেএসপি ও কেএসআরএমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্পন্সর প্রতিষ্ঠান কেএসআরএমের পরিচালক জসিম উদ্দীন। উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (প্রশাসন ও অর্থ) প্রবীর কুমার রায়, কমান্ডেন্ট (আরআরএফ) শাহজাদা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, পুলিশ সুপার (অ্যাডমিন) সঞ্জয় সরকার, পুলিশ সুপার (অপারেশন্স) মোহাম্মদ নেসার উদ্দিন, পুলিশ সুপার (ইন্টেলিজেন্স) মোহাম্মদ সফিজুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) কবীর আহম্মেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রওশন আরা রব, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) দেবদূত মজুমদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) ওয়াসিম ফিরোজ, স্টাফ অফিসার টু ডিআইজি এএসপি সৌমিত্র চাকমা ও দৈনিক আজাদীর চিফ রিপোর্টার হাসান আকবর।
কেএসআরএমের পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত কাবাডি টুর্নামেন্টে ১১ জেলার ১১টি এবং পুলিশের একটি দল মিলে ১২টি দল অংশগ্রহণ করে। ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত ৪টি গ্রুপে দলগুলো অংশ নেয়।