কাপ্তাই হ্রদের মাছ শিকার ও বাজারজাতকরণ বন্ধ

ঘাটে অবতরণের সময় বৃদ্ধির দাবি, বিপাকে বিএফডিসি

রাঙামাটি প্রতিনিধি | শুক্রবার , ১৭ অক্টোবর, ২০২৫ at ৮:৪৯ পূর্বাহ্ণ

রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের মাছ বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে ফিশারিঘাটে অবতরণ (ল্যান্ডিং) সময় বৃদ্ধির দাবিতে হ্রদের মাছ বাজারজাতকরণ বন্ধ রেখেছে ব্যবসায়ীরা। মাছ বাজারজাত বন্ধ থাকায় অনেক জেলেই মাছ শিকার করছেন না। হ্রদে মাছ শিকার ও বাজারজাতকরণ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি)

এদিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বিএফডিসির কর্মকর্তাকর্মচারীরা বিপণনকেন্দ্রে অবস্থান করলেও ফিশারিঘাটে দিনভরই ছিল সুনসান নীরবতা। যেখানে অন্য সময়ে শ্রমিকের হাঁকডাকে কর্মব্যস্ততা ছিল। এতে করে বিএফডিসির মাছের শুল্কহার আদায় বন্ধ হয়ে পড়েছে। মূলত বুধবার সন্ধ্যার পর থেকেই ব্যবসায়ীরা এ দাবিতে মাছ পরিবহন বন্ধ রেখেছে।

মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, বিগত দুই বছর থেকে মাছ শিকার করে অবতরণ ঘাটে অবতরণ করার জন্য স্বল্প সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়। এতে করে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। জেলার দূরদূরান্ত থেকে মাছের বোট ফিশারিঘাটে আসতে কিছুটা দেরি হলে সে মাছের রাজস্ব আদায় করে না বিএফডিসি। এতে মাছের গুণগত মান নষ্ট ও পচে যায়, ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে জেলেরাও মাছের দাম পান না। ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪টা এবং রাত ৮টা থেকে ১টা পর্যন্ত মৎস্য অবতরণ ঘাট খোলা রাখার দাবি জানান। অন্যথায় দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত মাছ শিকার ও বাজারজাতকরণ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন তারা। বৃহত্তম কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. শুক্কুর জানান, কাপ্তাই হ্রদ নির্ভরশীল প্রায় ২৬ হাজার জেলে রয়েছে। এখন আমরা যদি একেবারে মাছের ব্যবসা বন্ধ রাখি, তাহলে এই ২৬ হাজার জেলের কর্ম বন্ধ হয়ে যাবে। বিএফডিসির কমান্ডারের (বিপণনকেন্দ্র ব্যবস্থাপক) কাছে আমাদের দাবি দাওয়া নিয়ে বেশ কয়েকটি চিঠি দেয়া হলেও এর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বিএফডিসির অবতরণ কেন্দ্রে মাছ অবতরণে জন্য সময় বৃদ্ধি না করায় ব্যবসায়ী ও জেলেরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।

বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) রাঙামাটি বিপণনকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. ফয়েজ আল করিম জানান, অবতরণ ঘাটে মাছ আসতেছে না, এটা সঠিক। তবে আমাদের ল্যান্ডিং কার্যক্রম ও বরফ বিক্রি চালু রয়েছে। তারা চাইলে আমরা দিতে পারি। আমরা গত বছর রাত ৯টা পর্যন্ত ল্যান্ডিং চালু করে দিয়েছি। এবারও তাদের অনুরোধে ৯টা ৩০মিনিট পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু উনারা যেভাবে রাত ১টা পর্যন্ত চাচ্ছেন, সেভাবে হলে হ্রদ থেকে অতিরিক্ত মাছ আহরণ হয়ে যাবে। অতিরিক্ত মাছ আহরণের ফলে হ্রদের মাছের যে আধিক্যতা সেটা হ্রাস পাবে। এতে করে যদি আমরা রাতে ল্যান্ডিং কার্যক্রম চালু করি, তাহলে হ্রদের জন্য ক্ষতিকারক একটা সিদ্ধান্ত হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাবের চৌধুরী ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের ৪ মামলা
পরবর্তী নিবন্ধশ্রেণিকক্ষে ছাদের পলেস্তারাখসে দুই শিক্ষার্থী আহত