চট্টগ্রাম–কাপ্তাই সড়ক নিয়ে যাত্রী ও চালকদের দুঃখ যেন শেষই হচ্ছে না। সড়কটি গেল রমজানের দিকে ভোবানিমিল থেকে চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান পর্যন্ত ওয়ারিং কোর্স করা হয়েছে। কিন্তু সড়কের দুই পাশে প্রয়োজনীয় স্থানে ড্রেন নির্মাণ না করায় সামান্য বৃষ্টিতেই পাহাড়ি পানির ঢল বয়ে যায় সড়কের উপর দিয়ে। এছাড়া একই কারণে সড়কের বিভিন্ন স্পটে নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে একাধিক মরণফাঁদ। চট্টগ্রাম–কাপ্তাই সড়ক দুই লাইনে উন্নীতকরণসহ দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণের দাবি যাত্রী ও চালকদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, কাপ্তাই সড়কের রাঙ্গুনিয়ার ইছাখালী টোবাকো এলাকায় সড়কের নিচ থেকে মাটি সরে গেছে। সেখানে ছোট একটি লাল পতাকা দিয়ে দায়িত্ব সেরেছেন সংশ্লিষ্টরা। শুধু এই স্থানেই নয়, সড়কের তাপবিদ্যুৎ থেকে সত্যপীর মাজার পর্যন্ত একাধিক জায়গায় সড়কের একই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। সেখানেও বালির বস্তা দিয়ে রক্ষার চেষ্টা করেছে সওজ। এছাড়া একাধিক জায়গায় অল্প বৃষ্টিতেই সড়কের উপর পাহাড় অধ্যুষিত এলাকায় পানির ঢল নামে। তখন জল–কাদায় গাড়ি আটকে গিয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। অথচ কোটি টাকা ব্যয়ে বছরখানেক আগেই এই সড়কটি পিচঢালা করে সংস্কার করা হয়েছিল।
স্থানীয়রা জানান, ইছাখালী এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ অংশে সড়কের এই অবস্থার চিত্র দীর্ঘদিনের। বিভিন্ন সময় লোহার পাইপ গেড়ে রক্ষার চেষ্টা করা হলেও তাতে কোনো কাজ হয় না। উপরে ফিটফাট সড়ক, কিন্তু নিচ দিয়ে মাটি সরে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এর উপর দিয়ে গাড়ি চললে যেকোনো সময় উলটে গিয়ে গভীর খাদে পড়ে যেতে পারে।
রহিম উদ্দিন আশরাফী নামে এক যাত্রী বলেন, কাপ্তাই সড়ক নিয়ে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা করা উচিত। ব্যস্ততম এই সড়ক দুই লাইনে উন্নীতকরণ করা এখন সময়ের দাবি। সড়ক দখল করে স্থাপনা, বাজারসহ নানা সমস্যা রয়েছে। অপরিকল্পিত জোড়াতালির উন্নয়ন করে মাঝখান থেকে জনগণের টাকায় অপচয় করছে। কিন্তু এতে সড়কের টেকসই কোনো সমস্যার নিরসন হচ্ছে না।
এবি ট্রাভেলস বাস পরিবহন সংস্থার ব্যবস্থাপক কফিল উদ্দিন বলেন, সড়কটিতে ওয়েরিং কোর্স করার পূর্বে ড্রেনেজ ব্যবস্থার সংস্কার আগে করা উচিত ছিল। ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কার না করায় সড়কটির বিভিন্ন স্পটে ভেঙে ভেঙে পড়ে মরণ ফাঁদের সৃষ্টি হচ্ছে। গোডাউন এলাকায় যে ২০০ মিটার ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে, তা দিয়ে দীর্ঘদিনের জল–কাদার সমস্যা নিরসন হবে বলে মনে হচ্ছে না। এই সড়কের জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করে উন্নয়নে হাত দেওয়া উচিত।
রাঙ্গুনিয়া সেকশনে দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী (এসও) মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, সড়কের ইছাখালীন অংশে জরুরি সংস্কার করে দেয়া হবে। যেসব স্পটে সংস্কার প্রয়োজন, সেখানে তৎপর রয়েছে সওজ। এছাড়া এই সড়কের উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে।