কাপ্তাই লেকে প্রতিদিন পানির পরিমাণ কমছে। রুলকার্ভের চেয়ে কাপ্তাই লেকে এখন প্রায় ৭ ফুট পানি কম রয়েছে। রুলকার্ভ অনুযায়ী লেকে এখন ১০২ ফুট এমএসএল (মিন সি লেভেল) পানি থাকার কথা। কিন্তু লেকে পানি রয়েছে ৯৫ ফুট এমএসএলের একটু বেশি। দিন দিন কমছে পানির লেভেল। এভাবে চলতে থাকলে শুষ্ক মৌসুমে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন বিঘ্ন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কাপ্তাই লেকে প্রতিনিয়ত পানি কমার কথা স্বীকার করেন কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী এটিএম আব্দুজ্জাহের। তিনি বলেন, কাপ্তাই লেক একটি প্রাকৃতিক জলাধার। শুধুমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনকে উপলক্ষ করেই এই প্রাকৃতিক লেক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এর পাশাপাশি এই লেকের পানিতে মৎস্য চাষ, কৃষি জমিতে সেচ, নৌ চলাচল ইত্যাদিও তৎকালীন লেক পরিচালনা কর্তৃপক্ষের মাথায় ছিল। সেই হিসেবে বছরের পর বছর চলে আসছিল। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে রাঙ্গামাটিতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর শহরের মানুষের পানির সমস্যা নিরসনের জন্য আধুনিক উপায়ে কাপ্তাই লেকের পানি ব্যবহার করছে। রাঙ্গামাটি শহরের প্রায় প্রতিটি পরিবার কাপ্তাই লেকের পানির উপর নির্ভরশীল। মোটর বসিয়ে লেক থেকে সরাসরি পানি তুলে গৃহস্থালী কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এরফলে দৈনিক লাখ লাখ লিটার পানি কাপ্তাই লেক থেকে কমে যাচ্ছে। যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে।
তিনি আরও বলেন, রুলকার্ভ অনুযায়ী কাপ্তাই লেকে পানি থাকলে এখন (ডিসেম্বর মাসে) ৫টি জেনারেটর চালু রেখে ২২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা সম্ভব হতো। অথচ আমরা এখন ২টি জেনারেটর চালু রেখে ৮০/৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে পারছি। ‘আপাতত বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই। কাপ্তাই লেকে পানি বৃদ্ধির একমাত্র উপায় হলো বৃষ্টি এবং ঝর্ণাধারা। বৃষ্টি না থাকলে ঝর্ণা ধারা থেকেও পানি পাবার কোন সম্ভাবনা নেই।’ বৃষ্টি না হলে এবং কাপ্তাই লেকে পানি না বাড়লে বিদ্যুৎ উৎপাদনে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির আশঙ্কা করেন তিনি।
গণহারে কাপ্তাই লেকের পানি ব্যবহার ব্যতিরেকে বিকল্প উপায়ে পানির উৎস খুঁজে বের করার জন্য প্রচেষ্টা নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ আহ্বান জানিয়েছে।