আওয়ামী লীগের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা আসে কিনা বিএনপি তা দেখার অপেক্ষায় ছিল মন্তব্য করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করার পর এখন মির্জা ফখরুলদের ‘মুখ শুকিয়ে গেছে’। তার ভাষায়, ভিসা পলিসি দেখে বিএনপির রাতের ঘুম হারাম। দিনের আরাম হারাম। তারা ভয় পেয়ে গেছে। ফখরুল কথা বলে মুখ লুকিয়ে। মুখ শুকিয়ে গেছে, কারণ সেখানে যেগুলো নেগেটিভ সবই তাদের জন্য। যারা নির্বাচন বন্ধ করতে জ্বালাও–পোড়াও করে, তাদের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ওই ভিসা নীতি কার্যকর করে কিনা, এখন তা দেখার অপেক্ষায় থাকার কথাও বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের। খবর বিডিনিউজের।
গতকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কর্যালয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার রাজশাহীর বিএনপি নেতা আবু সাঈদ চাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এ সমাবেশ হয়। সমাবেশে অন্যান্য প্রসঙ্গের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি নিয়েও কথা বলেন কবাদের।
গত বুধবার বাংলাদেশের জন্য নতুন ওই ভিসানীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র জানায়, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের এই নীতির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ভিসা দেওয়া হবে না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কথায় কথায় আগুন, বাসে আগুন, গাছ কাটে, বিদ্যুতের স্টেশনে আগুন দেয়, ভূমি অফিস পুড়িয়ে দেয়, রেললাইন পুড়িয়ে দেয়, হাজার হাজার মানুষকে পুড়িয়ে মারে এই অপরাজনীতি ভিসানীতির মধ্যে এই বিষয়গুলো পড়ে। আমরা তো তো নির্বাচন করতে চাই। আমরা বাধা দেব কেন? যারা বাধা দেয় তাদের বিরুদ্ধে আপনাদের এই পলিসি কার্যকর হয় কিনা আমরা দেখব।
তিনি বলেন, তারা তাকিয়ে ছিল নিষেধাজ্ঞা আসবে কবে। শেখ হাসিনার ওপর নিষেধাজ্ঞা। নিষেধাজ্ঞার আশায় আশায় কেউ যায় লন্ডনে, কেউ যায় ওয়াশিংটনে, লবিস্ট নিয়োগ করে। ভিসানীতি আসছে, নিষেধাজ্ঞা কই? এখানে তো নিষেধাজ্ঞার কিছু নেই। আমাদের নির্বাচন আমরা করব। আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থা আমরা তৈরি করব। আমাদের গণতন্ত্র আমাদের সিস্টেমে চলবে। আমরা কারো ভয়ে ভীত নই। আমরা আমাদের লাখো শহীদের রক্তে রঞ্জিত সংবিধান মেনে চলব। কারো হুমকি ধমকি, কারো নিষেধাজ্ঞায় কাবু হয়ে মাথা নত করার মানুষ শেখ মুজিবের বেটি নয়। এ কথা যেন সবার মনে থাকে।
গাজীপুরে যেভাবে নির্বাচন হয়েছে তেমনি সব নির্বাচন ‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ হবে মন্তব্য করে কাদের বলেন, আমরা নির্বাচন চাই, আমরা বাধা দেব কেন? সেই পরামর্শ তো আমাদের দেওয়ার দরকার নেই। নির্বাচনে বাধা দেওয়ার দিন শেষ। যারা নির্বাচন চায় না, তত্ত্বাবধায়ক চায়… খালেদা জিয়া বলেছেন… পাগল ছাড়া নিরপেক্ষ নেই। তত্ত্বাবধায়ক হবে না। কোনো বিদেশি বন্ধু একবারও আমাদের কাউকে বলেননি যে, তারা তত্ত্বাবধায়ক চান। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত দাওয়াত করেছিল, তার সঙ্গে আলাপকালে আমি জানতে চেয়েছিলাম তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আপনাদের কোনো পরামর্শ আছে কিনা। তখন পিটার হাস আমাকে যেটা বলেছেন, উই ডোন্ট কেয়ার অ্যাবাউট কেয়ারটেকার। আমরা চাই বাংলাদেশের একটা অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন, বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন।
আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রতিনিয়ত কীভাবে অনলাইনে বক্তব্য দিচ্ছেন, সেই প্রশ্ন তুলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, অর্থপাচারে দণ্ডিত হয়েছে। বিদেশে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এই দণ্ডিত ব্যক্তি তারেক রহমান কি করে প্রতিদিন অনলাইনে রাষ্ট্রদ্রোহী বক্তব্য দিচ্ছে? এর কি কোনো প্রতিকার নেই? আইন কি তারা মানবে না? আদালতের আদেশ কেন মানছে না তারেক? তারা আইন মানে না, আদালত মানে না। নির্বাচনের রেজাল্ট যদি কমিশন বলে দেয় বিএনপি জিতবে তাহলে ভালো। নিরপেক্ষ নির্বাচনের গ্যারান্টি তখনই তারা যাবে, যখন নির্বাচন কমিশন বলবে, বিএনপিই জিতবে। বিএনপির কাছে জেতার গ্যারান্টি মানে নিরপেক্ষ নির্বাচন। এই নিরপেক্ষ নির্বাচন আমরা চাই না।