এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্পের কাজের খোঁড়াখুঁড়ির কারণে নগরীর ইপিজেড থানাধীন ২নং মাইলের মাথা থেকে ব্যারিস্টার সুলতান আহমদ ডিগ্রি কলেজ পর্যন্ত সড়কটি এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
টানা কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টির মধ্যে র্যাম্প নির্মাণের খোঁড়াখুঁড়ির কারণে সড়কে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। পানি জমে এসব গর্তের সাথে কাদামাটি একাকার হয়ে আছে। এর ফলে সল্টগোলা ক্রসিং থেকে ইপিজেড পর্যন্ত সড়কের পূর্ব পাশ বন্ধ হয়ে আছে। সড়কের অপর পাশে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভয়াবহ যানজট লেগে থাকে। এতে ইপিজেডের হাজার হাজার শ্রমিক কর্মচারী–কর্মকর্তাসহ ৩৮ ও ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েক লাখ মানুষের প্রতিদিনের চলাফেরায় সীমাহীন দুর্ভোগ বেড়েছে। বিশেষ করে স্কুল–কলেজগামী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, একদিকে চলছে র্যাম্পের কাজ; অন্যদিকে সড়ক জুড়ে বড় বড় গর্ত। পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় কাদামাটি আর বৃষ্টির পানি একাকার হয়ে গেছে। লোকজন হাঁটা চলাও করতে পারছেন না। সড়কের পূর্ব পাশের দোকান গুলোতে হাঁটু সমান পানি ঢুকে পড়ার অভিযোগ করেছেন স্থানীয় দোকানদাররা। বন্দরের শত শত ট্যাংকলরি, কাভার্ডভ্যান সড়কে দুই সারি করে দাঁড়িয়ে আছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শেষে এখন র্যাম্পের (মূল উড়ালসড়ক থেকে ওঠানামার পথ) কাজ করছে ম্যাঙ ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। এলাকারবাসীর এই দুর্ভোগের বিষয়টি তারা চিন্তা করছেন না।
গতকাল সোমবার সরেজমিন দেখা যায়, নগরীর ইপিজেড থানাধীন ২ নং মাইলের মাথা এলাকা থেকে ব্যারিস্টার সুলতান আহমদ ডিগ্রি কলেজ পর্যন্ত বিমান বন্দর সড়কে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্পের কাজ চলছে। টানা কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিতে ভারী যন্ত্র দিয়ে মাটি খোঁড়াখুঁড়ির কারণে প্রধান এই সড়কটির একপাশ কাদাজলে সয়লাব হয়ে গেছে। তাতে যানবাহন চালাতে ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে। গর্তে যানবাহনের চাকা আটকে গাড়ি বিকল হচ্ছে, বাড়ছে যানজট। সেখানে গত তিনদিন ধরে রাতে দিনে যানজট স্থায়ী হয়ে গেছে। ঘন্টার পর ঘন্টা গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় ইপিজেডের হাজার হাজার শ্রমিক কর্মচারীসহ এই এলাকার কয়েক লাখ মানুষকে চলাফেরায় সীমাহীন দুর্ভোগের সম্মুখীন হতে হয়েছে।
স্থানীয় একটি পরিবহন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মো. কায়েস ও ব্যবসায়ী মিজানসহ স্থানীয়দের অভিযোগ অপরিকল্পিত ভাবে ২ নং মাইলের মাথা এলাকা থেকে ব্যারিস্টার সুলতান আহমদ ডিগ্রি কলেজ পর্যন্ত এলিভেটেড এঙপ্রেসওয়ের র্যাম্পের কাজ করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন থেকে র্যাম্পের কাজের কারণে পুরো এলাকা জুড়ে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজট লেগে আছে। এই এলাকায় ইপিজেড, চট্টগ্রাম বন্দর, কাস্টমস, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন, দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত অনেক প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয়। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সিডিএ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্পের কাজ করছে–যা সুর্নিদিষ্ট পরিকল্পনা ছাড়া। মানুষের দোকানপাট ভেঙে–র্যাম্পের কাজ করা হচ্ছে–অথচ র্যাম্প থেকে গাড়ি গুলো নেমে বন্দরটিলা থেকে ঘুরে আসতে হবে। র্যাম্প থেকে নেমে গাড়ি গুলো ঘুরার কোনো ব্যবস্থা নেই।
এই ব্যাপারে এই ব্যাপারে সল্টগোলা এলাকার দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) শহীদুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্পের কাজের কারণে সল্টগোলা ক্রসিং থেকে ইপিজেড পর্যন্ত সড়কের পূর্ব পাশ বন্ধ হয়ে আছে। আমরা এই পুরো এলাকায় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি। টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে এখানে হাঁটু সমান পানির সাথে কাদামাটি মিশে যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। এখানে সবচেয়ে বড় অসুবিধা হচ্ছে পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। এখানে আমাদের করার কিছু নেই। আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চুপ করে আছি। এখানে সড়কে বড় বড় গর্ত। গাড়ি চলতে পারছে না; মানুষ চলতে পারছে না।
ইপিজেড এলাকার পুলিশ সার্জেন্ট উচিং মং বলেন, গত ২/৩ সপ্তাহ ধরে এই অবস্থা। সড়ক খোঁড়াখুঁড়ির কারণেই এখানে বেহাল দশা।