কাজের পরিধি বাড়লে জীবনের গতি বাড়বেই

আজিজা রূপা | বৃহস্পতিবার , ৭ এপ্রিল, ২০২২ at ৬:২৭ পূর্বাহ্ণ

যুগ পাল্টে গেছে। জীবনের গতি বেড়ে গেছে। তাই আপনার জীবন পথের দৌঁড়ও বাড়াতে হবে। আগে প্রবাদ ছিল আয় বুঝে ব্যয় করো। এখন ব্যয় বুঝে আয় করতে হবে। আয়ের ক্ষেত্র বাড়াতে হবে। পরিসংখ্যান মতে একজন মানুষ তার ব্রেনের ১৬ ভাগের দুই ভাগ মাত্র ব্যয় করে। সৃষ্টিকর্তা মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীব এমনি এমনি বলেনি। মানুষের ব্রেন যে কী! সে যদি এই ব্রেনকে অলস না বানিয়ে কিংবা কিছু গদবাঁধা গণ্ডির মধ্যে আটকে না রেখে প্রতিমূহর্তে খাটাতে থাকে তাহলে সে পরিবার ও সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেকে ঢেলে দিতে পারবে।
আমাদের শিশুকাল যায় হামাগুড়ি দিতে, কথা বলা শিখতে, হাঁটা শিখতে, আচার আচরণ শিখতে, অক্ষর শিখতে। কিশোর বেলা যাবে স্কুলে ফার্স্ট হও, পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাও। ভালো পড়ালেখার সুযোগ করে নাও। যৌবন কালে নির্দিষ্ট একটা জায়গায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করো, ব্যবসা টাকা কামাও, সংসার সামলাও। খুব মেধাবী, প্রতিভাশীল মেয়েটা, বাচ্চা কাচ্চা মানুষ করতে হবে তাই সেখানেই মনোযোগ। সবকিছু বাদ, সংসারেই জীবন পার। একটা সময় ডিপ্রেশন। আদি থেকে সমাজে এটাই সেট করা, এটাই মাথায় ঢুকিয়েছে সেটা নিয়েই আছি আমরা। আর আমরা কোনো কিছুতে মাথা খাটাইনা। নিজেকে একটু নিজেই নেড়েচেড়ে বের করি আনি না। একটা পর্যায়ে বিলীন হয়ে যাই। জীবন মানে নিজের ভিতর থেকে নিজেকে উজাড় করে বের করে আনা। আপনি যখন একটা বিষয় নিয়ে থাকবেন, ডিপ্রেশন আপনাকে ঘিরে ধরবে চব্বিশ ঘণ্টার বারো ঘণ্টা। জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়বে একটা পর্যায়ে। চল্লিশে হতাশ কেন হবেন। আমার দর্শন চল্লিশে বুড়া! নো নেভার। চল্লিশে জীবন শুরু। চল্লিশ কেন। প্রতিটা মূহর্ত থেকে জীবন শুরু করুন। হতাশার কোনো স্থান নেই জীবনে। আমি এদিকে আটকে গেছিতো ওদিকে শুরু করি। সমাজ আমাকে ঠিক করে দিয়েছে এই সময়ের মধ্যে পড়াশুনা শেষ করতে হবে, এ সময়ে প্রতিষ্ঠা, এ সময়ে বিয়ে, এ সময়ে গাড়ি, এ সময়ে বাড়ি। পারিনি। আমি হতাশ। কেন? আমি হতাশ হলে, আমার ভিতরের কষ্টের বোঝা কি সমাজ আমার থেকে নিয়ে আমাকে হালকা করে দিবে? না কখনই না। তাই আমারটা আমাকেই বুঝতে হবে। সমাজ আমাকে দশ টাকা দিবে না। আমার মাথা আমি সৎ পথে দশ দিকে খাটালে হালাল পথে আমার পকেটে টাকা আসবে। আর নয়ত হারাম পথে আসবে। আর নয়ত হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে ধুকে ধুকে জীবন শেষ করে দিতে হবে। ব্রেনের দুইভাগ নয় ১৬ ভাগই খাটান। কেউ এক সাথে অনেক গুলো ভালো কাজের চেষ্টায় থাকলে তাকে উপহাস করা ছেড়ে দিয়ে নিজেকেও বিভিন্ন কাজে জড়িয়ে নিন। আপনার থাকার জন্য যদি একটা রুম হাঁসফাঁস হয়ে যায়। কয়েকটা রুম দরকার হয় স্বাচ্ছন্দ্যে বাঁচার জন্য। আপনার কাজের ব্যাপ্তিও বড় হোক না। তাহলে যে কাজ যতক্ষণ করবেন সে কাজ নিয়ে সে ততক্ষণই ভাববেন। অন্য কোনো চিন্তা তাহলে আপনার মাথায় আসার সুযোগ পাবে না। অন্য মানুষের দিকে তাকানোর সুযোগ তো হবেই না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদুর্ব্যবহার শুধু ব্যক্তিত্ব নষ্ট করে না, ধ্বংস করে সুশাসনও
পরবর্তী নিবন্ধস্মরণ: মৌলভী হাফিজুর রহমান বিএবিটি