কাছে কী মিলল সিরিয়ার কুখ্যাত কারাগারে

৩৩ বছর পর মুক্ত হয়ে যমজের

| বুধবার , ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ৮:৩৪ পূর্বাহ্ণ

কারাগারের অন্ধকারে তিন দশকের বেশি সময়, কখনো আর পৃথিবীর আলোবাতাস দেখবেন, সে আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন। কিন্তু অভাবনীয় এক পরিবর্তনে ৩৩ বছর পর সিরিয়ার কুখ্যাত কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে নিজ দেশ লেবাননে ফিরেছেন সুহেইল হামাউই। খবর বিডিনিউজের।

সিএনএন জানিয়েছে, লেবাননের চেকা গ্রামে সুহেইল ফিরে এলে তাকে জানানো হয় উষ্ণ স্বাগতম। মাত্র ১২ দিনের মাথায় সিরিয়ান বিদ্রোহীরা গত রোববার রাজধানী দামেস্কের দখল নিলে প্রেসিডেন্ট বাশার আলআসাদের দুই যুগের শাসনের অবসান ঘটে। ওইদিনই বিদ্রোহীরা স্বৈরশাসক বাশারের অনেক কারাগার থেকে বন্দিদের মুক্ত করে দেয় বিদ্রোহীরা। অনেকের সাথে মুক্তি পান ৬১ বছর বয়সী সুহেইলও। দারুণ এক অনুভূতি, সত্যিই দারুণ অনুভূতি।

দেখছি, এখানে এখনো অনেক ভালোবাসা আছে, আমার পরিবারও এখানে আছে, নিজের গ্রামে ফেরার পর এভাবেই নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন সুহেইল। সুহেইলের যমজ নিকোলাস হামাউই ফিরে আসা ভাইকে নায়কের চেয়েও বেশি উল্লেখ করে বলেন, তারা ফিরে আসাটা পুনর্জন্মের মতো। ত্রেত্রিশটা বছর হারিয়ে গেছে কিন্তু মনে হচ্ছে আমরা যমজ হিসেবে পুনর্জন্ম লাভ করেছি। যেকোনো দিক থেকেই এটি পুনর্জন্ম, বলছিলেন নিকোলাস। ঘরে ফেরার পর সুহেইলও বুঝতে পারছিলেন সত্যিকার অর্থেই কতগুলো বছর হারিয়ে গেছে।

সুহেইল বলেন, আমার নাতিনাতনি আছে। কিন্তু আমার ছেলের কন্যাটি আমাকে দাদা বলে ডাক না দেওয়া পর্যন্ত বয়স টেরই পাইনি।

তখনই বুঝতে পারলাম, আসলেই লম্বা একটা সময় জীবন থেকে হারিয়ে গেছে। বাশার আলআসাদের পতনের পর সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের উপকণ্ঠে কুখ্যাত সেদনায়া বন্দিশালার সুড়ঙ্গে সুড়ঙ্গে বন্দিদের অনুসন্ধান চালানো হয়েছে। সিরিয়ার নাগরিক সুরক্ষা গোষ্ঠী হোয়াইট হেলমেটস জরুরি বিশেষজ্ঞ দল পাঠিয়ে এই অনুসন্ধান কাজ করে।

সেদনায়া কারাগারের মাটির নিচের বিভিন্ন কুঠুরিতে বন্দিরা থাকতে পারে এমন খবরে সেখানে বহু মানুষ বন্দিশালার বাইরে ভিড় করে।

সিএনএন জানিয়েছে, অনুসন্ধানের খবরে সেদনায়া কারাগারমুখী যানবাহনের লাইন কয়েক মাইল ছাড়িয়ে যায়। লাইনের শেষ মাথায় গাড়ি রেখে অনেককেই একটি পাহাড়ের দিকে হাঁটতে দেখা গেছে, যে জায়গাটি নির্বিচার আটক, নির্যাতন আর হত্যার সমার্থক হয়ে উঠেছে। বাশারের শাসনকালে আটক কয়েক হাজার বন্দি এখনো সেদনায়া কারাগারের রেড সেকশন নামের ভূগর্ভস্থ সেলে আটকে আছে, এমন খবর পেয়েই মানুষজন ভিড় করতে শুরু করে ওই এলাকায়। তিন ভাই আর জামাতার খোঁজে দক্ষিণের শহর দেরা থেকে সেদনায়া কারাগারের কাছে হাজির হয়েছেন মেসুন লাবুত। সেখানকার পরিস্থিতিতে আবেগতাড়িত এই নারী যেন নিঃশ্বাসও ভুলে যাচ্ছিলেন। কারাগারের রেড সেকশনে পৌঁছাতে তারা (উদ্ধারকর্মীরা) কয়েকদিন ধরেই চেষ্টা করছে। সেখানে কোনো অক্সিজেন নেই, কারণ বাতাস চলাচলের জায়গাও নেই। শেষ পর্যন্ত তারা মারাও যেতে পারে। আল্লাহ তাদের সহায় হোন, বলেন মেসুন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিরিয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হলেন মোহাম্মাদ আল-বশির
পরবর্তী নিবন্ধকোটি টাকা আমানতের হিসাব কমেছে