সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ধর্ষণের প্রেক্ষাপটে দেশের সরকারি–বেসরকারি কলেজগুলোর ক্যাম্পাসে বিনা প্রয়োজনে সাধারণ মানুষকে ঢুকতে মানা করা হয়েছে। করোনা মহামারীর মধ্যে কলেজগুলোর ছাত্রাবাস বন্ধ রেখে সেগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশের সব কলেজের অধ্যক্ষদের মঙ্গলবার চিঠি পাঠিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। সেই চিঠিতে একটি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কলেজ ক্যাম্পাসে বিনা প্রয়োজনে জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে। সারাদেশেই কলেজগুলোতে মুক্ত হাওয়ায় ঘুরতে যান স্থানীয়রা। এক্ষেত্রে কোনো নিষেধাজ্ঞা কখনও ছিল না। গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেটের এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে স্বামীর সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হন স্থানীয় এক নববধূ।
ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের কয়েক কর্মীর এই ধর্ষণকাণ্ড নিয়ে সারাদেশে নিন্দা–সমালোচনার ঝড় বইছে। এর মধ্যেই মাউশির নির্দেশনা এল; যাতে বলা হয়েছে, ‘নিরাপত্তার স্বার্থে’ এই পদক্ষেপ। খবর বিডিনিউজের।
করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে গত মার্চ থেকে অদ্যাবধি দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার বিষয়টি তুলে ধরে চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার ফলে কলেজ ক্যাম্পাসগুলোতে নিরাপত্তা বজায় রাখাসহ কলেজের সকল সরকারি সম্পদ ও সরঞ্জামের সুরক্ষা নিশ্চিত করার ব্যাপারে প্রতিষ্ঠান প্রধানগণকে সচেষ্ট থাকতে হবে। অধ্যক্ষদের নয় দফা নির্দেশনা দিয়ে জরুরিভিত্তিতে তা বাস্তবায়নের জন্য ‘বিশেষভাবে’ অনুরোধ জানিয়েছে মাউশি। জনসাধারণকে ঢুকতে বারণ করা ছাড়া অন্য নির্দেশনাগুলো হল–
১. ছাত্রাবাসসমূহ বন্ধ রাখতে হবে এবং ছাত্রাবাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ২. স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় ক্যাম্পাসে পুলিশ টহল জোরদার করতে হবে। ৩. প্রতিষ্ঠানের মূল ফটকসহ সকল প্রবেশপথে সার্বক্ষণিক প্রহরী নিয়োজিত রাখতে হবে। ৪. প্রতিষ্ঠানে ভিজিল্যান্স টিম গঠন করতে হবে এবং প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে নিয়মিত পরিদর্শন প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। ৫. অনলাইন ক্লাস কার্যক্রম চালু রাখতে হবে এবং আঞ্চলিক পরিচালককে নেওয়ার তথ্য দিতে হবে। ৬. শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাসে অংশগ্রহণ মনিটরিং এবং অভিভাবকের সঙ্গে সংযোগ সাধন করতে হবে। ৭. শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা প্রদান করতে হবে। ৮. কলেজের বিজ্ঞানাগার ল্যাব, আইসিটি ল্যাব, লাইব্রেরিসহ সার্বিক সরকারি সম্পত্তি ও নথি রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।