কর্পোরেট করহার হ্রাস করায় বিনিয়োগ উৎসাহিত হবে

মাহবুবুল আলম

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১০ জুন, ২০২২ at ৬:৩২ পূর্বাহ্ণ

জাতীয় সংসদে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনের প্রেক্ষিতে চিটাগাং চেম্বার পরিচালকমন্ডলীর পক্ষ থেকে সভাপতি মাহবুবুল আলম তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, বাজেটে কর্পোরেট করহার হ্রাস করায় বিনিয়োগ উৎসাহিত হবে, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং রপ্তানি বহুমূখীকরণ সম্প্রসারিত হবে, তবে ৫.৬% মূল্যস্ফীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে সেই অনুপাতে ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়-সীমাও বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তিনি এ বাজেট করোনা মহামারী পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া এবং যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির কারণে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় সময়োপযোগী বলে মন্তব্য করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার উত্থাপিত বাজেট উপলক্ষে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে চিটাগাং চেম্বার সভাপতি এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

চেম্বার সভাপতি বলেন, বাজেটে মোট ব্যয় ৬ লক্ষ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা, মোট আয় ৪ লক্ষ ৩৬ হাজার ২শত ৭১ কোটি টাকা এবং ঘাটতি ২ লক্ষ ৪১ হাজার ৭শত ৯৩ কোটি টাকা। পরিচালন ব্যয় ৪ লক্ষ ১১ হাজার ৪শত ৬ কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ২ লক্ষ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। বাজেট ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ নেয়া হবে। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ বাবদ ৭৩ হাজার ১শত ৭৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে যা সরকারের বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে চাপ সৃষ্টি করতে পারে। ঘাটতি মোকাবেলায় ক্রমবর্ধমান ঋণের ক্ষেত্রে সরকারের সচেতন হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।

বাজেটে পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানির করহার ২২.৫% থেকে কমিয়ে ২০%, পাবলিকলি ট্রেডেড নয় এমন কোম্পানির কর ৩০% থেকে কমিয়ে ২৭.৫% এবং এক ব্যক্তি কোম্পানির ক্ষেত্রে ২৫% থেকে কমিয়ে ২২.৫% করা হয়েছে যা বিনিয়োগ বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করবে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়ক হবে। ট্রেডিং পণ্য সরবরাহের উপর উৎসে কর ৭% থেকে কমিয়ে ৫% করা হয়েছে যা ইতিবাচক। ম্যানুফ্যাকচারারদের নিকট কাঁচামাল সরবরাহে উৎসে কর ৭% থেকে কমিয়ে ৪% করা হয়েছে যা স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যের মূল্য হ্রাসে ভূমিকা রাখবে। আইসিটি খাতে স্টার্ট-আপ উদ্যোক্তাদের টার্নওভার করহার ০.৬% এর পরিবর্তে ০.১% করা এই উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করবে। বিনিয়োগজনিত আয়কর রেয়াতের হার রেয়াতযোগ্য বিনিয়োগের ১৫% করা হয়েছে।

স্টিলজাত পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত এইচ আর কয়েল এবং অন্যান্য কাঁচামাল আমদানিতে করহার ৫% থেকে কমিয়ে ৩% করা, স্বর্ণ আমদানিতে অগ্রিম কর বিলোপ এসব পণ্যের মূল্য হ্রাস করবে। তবে ব্যাংক সুদের উৎসে করহার কোম্পানী করদাতার জন্য ১০% থেকে ২০% করা এবং রপ্তানিকৃত পণ্যদ্রব্যের উৎসে কর ০.৫% এর পরিবর্তে ১% করা হয়েছে যা পুনর্বিবেচনা করা যেতে পারে। তৈরিপোশাক শিল্পের মত অন্যান্য সকল রপ্তানিমূখী শিল্পের ক্ষেত্রেও একই হারে কর ধার্য্য করার ফলে রপ্তানি পণ্য বহুমূখীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। একই মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সরবরাহের বিপরীতে ব্যাংকিং চ্যানেলে লেনদেনের বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহার করা এবং মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেন করলেও রেয়াত প্রদান ব্যবসায়িক কর্মকান্ড সহজ করবে। ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্ট্রার আমদানিতে ১০% এবং ল্যাপটপ ও কম্পিউটারে ব্যবহৃত টোনার, প্রিন্টার ইত্যাদি আমদানিতে ১৫% শুল্ক প্রত্যাহার করার প্রস্তাব করছি। দেশে ২৫০০ সিসি পর্যন্ত মোটর গাড়ী উৎপাদনে ২০৩০ সালের জুন পর্যন্ত কর অব্যাহতি দেশীয় শিল্পকে উৎসাহিত করবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় নেতৃত্বে বাজেট বাস্তবায়ন করা সম্ভব
পরবর্তী নিবন্ধএ বাজেট ব্যবসাবান্ধব ও গণমুখী