চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার চার ইউনিয়নের চেয়ারম্যানেরা বেশির ভাগ উপস্থিত থাকার পরও হঠাৎ প্রশাসক নিয়োগ হওয়ায় জনপ্রতিনিধিদের মাঝে নানা ধরনের অভিযোগ আর মন্তব্য পাওয়া যাচ্ছে। অথচ কোন চেয়ারম্যান আত্মগোপনে থাকলে আর প্যানেল চেয়ারম্যানেরা দায়িত্ব নিতে অনিহা প্রকাশ করলে প্রশাসক নিয়োগের কথা উল্লেখ্য রয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিপত্রে। যদিও গত ৫ আগস্ট সরকারের পদত্যাগের পর থেকে নিরাপত্তাজনিত কারণে অনেক জনপ্রতিনিধি আত্মগোপনে রয়েছেন। তাঁদের অনুপস্থিতিতে নাগরিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
কর্ণফুলী উপজেলার পাঁচ ইউনিয়ন পরিষদে শিকলবাহা, চরপাথরঘাটা ও বড়উঠানের ইউপি চেয়ারম্যানেরা দাবি করেন তাঁরা এখনো এলাকায় উপস্থিত। তবে মাঠের চিত্রে কর্মকাণ্ডে অনেক ভাটা পড়েছে। তথ্য বলছে, চরলক্ষ্যার ইউপি চেয়ারম্যান আত্মগোপনে এবং জুলধার চেয়ারম্যান গত ১২ জুলাই পরলোকগমন করেন। স্থানীয় রাজনীতি সচেতন লোকজন বলছেন, পাঁচ ইউনিয়নের শিকলবাহা ও চরপাথরঘাটার চেয়ারম্যান ছিলেন স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিত। চরলক্ষ্যা, জুলধা ও বড়উঠান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত। যদিও শিকলবাহা ও চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ও বর্তমান সহ-সভাপতি। দল থেকে মনোনয়ন না দেওয়ায় বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচন করে তাঁরা বিজয়ী হন।
কিন্তু বিগত সরকার পতনের পর কর্ণফুলীর পাঁচ ইউনিয়নের চার ইউপি চেয়ারম্যানদের সিংহাসনেও আঘাত লাগে। কারণ জাতীয় রাজনীতিতে বড় পরিবর্তনের ফলে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত সরকারের আমলে নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যানকেও ছাত্র-জনতাসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা পুনর্বাসিত করতে চায় না। ফলে, ১৮ আগষ্ট চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ তোলে অবস্থান কর্মসূচি ও তালা ঝুলানো হয়। এতেই নাগরিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে উপজেলা প্রশাসন দ্রুততম সময়ে স্থানীয় সরকার বিভাগকে জ্ঞাত করেন চেয়ারম্যানেরা অনুপস্থিত। কিন্তু কর্ণফুলীর বড়উঠান, চরপাথরঘাটা ও শিকলবাহার চেয়ারম্যান এ দাবি মানতে নারাজ। তাঁরা জানান, বরাবরেই সকলেই এলাকায় আছেন। উন্নয়নমূলক কাজে অংশগ্রহণ ও সালিশ বিচারে নাগরিক সেবা দিচ্ছেন।
এরমধ্যে গত ১৯ আগস্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের ধারাবাহিকভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিতির কারণে জনসেবা কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে বলে উপলব্ধি করে তা দূরীকরণে স্থানীয় সরকার বিভাগ একটি আদেশ জারি করেন। স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯-এর ধারা ৩৩, ১০১ এবং ১০২ অনুযায়ী বিভাগীয় কমিশনার বা জেলা প্রশাসক স্ব স্ব অধিক্ষেত্রের সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যানগণকে আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণ করতে পারবেন বলে আদেশে জানান। এমনকি প্যানেল চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে অথবা যে কোন জটিলতা পরিলক্ষিত হলে বর্ণিত আইন প্রয়োগ করে বিভাগীয় কমিশনার বা জেলা প্রশাসক স্ব স্ব অধিক্ষেত্রে তাঁর অধীনস্থ কর্মকর্তা যেমন-ইউএনও বা এসিল্যাণ্ডকে আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণ করে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদগুলোকে সচল রাখবেন।
কিন্তু এই পরিপত্রে চেয়ারম্যানদের ধারাবাহিকভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিতি ও প্যানেল চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে ইউএনও-এসিল্যাণ্ডকে আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণের কথা বলা হলেও সেক্ষেত্রে কর্ণফুলীর ৪ ইউনিয়নে স্থানীয় সরকার বিভাগের সেই পরিপত্রের আদেশ লঙ্ঘিত হয়েছে বলে চেয়ারম্যানদের দাবি। স্বয়ং জনপ্রতিনিধিরা জানান, ‘জোর করে চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে ক্ষমতা নিয়ে ফেলা হয়েছে।’ এমনকি প্যানেল চেয়ারম্যানেরা কোথাও অনুপস্থিত নেই বলেও জানান। এছাড়াও কর্ণফুলীর পার্শ্ববর্তী উপজেলা পটিয়া ও আনোয়ারা উপজেলায়ও এখনো কোন চেয়ারম্যানের আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়নি বলে তাঁরা মন্তব্য করেন।
নথিপত্র বলছে, গত ২০ আগষ্ট চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখা থেকে ইউনিয়ন পরিষদের সকল গ্রাম আদালতকে অধিকতর কার্যকর করার জন্য ৭টি নির্দেশনা দিয়ে চেয়ারম্যানদের কাছে একটি চিঠি দেওয়া হয়। সেখানেও ৬ নম্বর ক্রমিকে বলা আছে, ‘চেয়ারম্যান এর অনুপস্থিতিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেল চেয়ারম্যান বিচারিক কাজ পরিচালনা করবেন’। এরপর হঠাৎ ২১ আগষ্ট কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে ইউএনও মাসুমা জান্নাত স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে জানানো হয়, কর্ণফুলীর ইউপি চেয়ারম্যানগণ তাঁদের অফিসে উপস্থিত হতে পারছেন না। ফলে জনগণের জন্মসনদ ও মৃত্যুসনদ সংক্রান্ত সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। দ্রুত সেবা প্রদানে উপজেলার উপ-সহকারি প্রকৌশলী, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, সমাজ সেবা কর্মকর্তা, প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ও সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তাকে পাঁচ ইউনিয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
পরবর্তী ৪ সেপ্টেম্বর কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালতের বিচারিক সেবা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে চেয়ারম্যানদের কাছে আরেকটি চিঠি প্রেরণ করেন। এতে তিনি জানান, ‘যে সকল ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান অনুপস্থিত। সে সকল ইউনিয়ন পরিষদে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ ধারা ৩৩ (২) অনুযায়ী প্যানেল চেয়ারম্যানদের মধ্য হতে অগ্রাধিকারক্রমে একজন সদস্য চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কোন কারণে গ্রাম আদালতের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বপালন করতে অসমর্থ হলে বা তাঁর নিরপেক্ষতা সম্পর্কে কোন পক্ষ কর্তৃক প্রশ্ন উত্থাপিত হলে সেক্ষেত্রে নির্ধারিত পদ্ধতিতে গ্রাম আদালত আইন মেনে চেয়ারম্যান নির্ধারিত হবেন।’
গত ১৯ সেপ্টেম্বর আবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকেেএক অফিস আদেশে জানান, ‘কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা ও শিকলবাহা ইউনিয়নের আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতাপ্রাপ্ত হন ইউএনও মাসুমা জান্নাত। বড়উঠান ও জুলধা ইউনিয়নের আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতাপ্রাপ্ত হন এসিল্যাণ্ড রয়া ত্রিপুরা। আদেশে রহস্যজনক ভাবে চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের নাম আসেনি। এতেই কর্ণফুলী জুড়ে জনপ্রতিনিধিদের মাঝে প্রশ্ন উঠে, ২১ আগষ্ট কিংবা ৪ সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে কর্ণফুলীর পাঁচ ইউনিয়ন নিয়ে একটি গোপন প্রতিবেদন পাঠিয়েছে জেলায়। সেই প্রতিবেদনে হয়তো উল্লেখ ছিলো চার ইউপি চেয়ারম্যানের আমলনামা। নির্ভরশীল একটি সূত্রের দাবি, সে প্রতিবেদনে উল্লেখ্য ছিলো-চেয়ারম্যানেরা কে কোন দলের অনুসারী। কার কোন দলীয় পদবি। কারা মাঠে উপস্থিত এবং অনুপস্থিত। কোন কোন প্যানেল চেয়ারম্যান কোন দলের অনুসারী। কোন দলের সমর্থক। সেসব বিবেচনায় চেয়ারম্যানদের ক্ষমতা খর্ব করা হয় বলে একাধি ইউপি সদস্যরা ধারণাসূচক মন্তব্য করেন।
ওদিকে, গত ২৩ সেপ্টেম্বর হঠাৎ চরপাথরঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের ১১ ইউপি সদস্য (ইউপি সদস্য সাইদুল হক ব্যতিত) রেজুলেশন করে সবার সম্মতিক্রমে প্যানেল চেয়ারম্যান (১) আবু তাহের কে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। যা বাস্তবায়নে স্থানীয় সরকার বিভাগের বিধি মোতাবেক আবু তাহের কে প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণের সুপারিশ করে একটি আবেদনও করেন। পাশাপাশি এতে উল্লেখ করেন, চরপাথরঘাটা ইউনিয়ন একটি শিল্পজাত এলাকা। এখানে প্রায় ১ লক্ষ মানুষের বসবাস। প্রতিনিয়ত আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক ও গ্রাম্য সালিশি বিচার ব্যবস্থা সচল রাখতে একজন প্যানেল চেয়ারম্যানের খুবই দরকার।
এর একদিন পর গত ২৪ সেপ্টেম্বর চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের ১১ ইউপি সদস্য (ইউপি সদস্য নুর মোহাম্মদ ব্যতিত) চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কাছে ইউনিয়ন পরিষদের নাগরিক সেবা সচল করার লক্ষ্যে একটি আবেদন দেন। এতে প্যানেল চেয়ারম্যান (০১) মো. জয়নাল আবেদীনকে দায়িত্ব প্রদান করতে সদস্যরা সুপারিশ করেন। তাঁকে নিয়ে কোন আপত্তি থাকলে প্রশাসক নিয়োগের কথাও জানান। একই আবেদনটি ইউএনও’র কাছেও পাঠানো হয়।
অপর এক বিশ্বস্ত সূত্র জানান, চরলক্ষ্যা ইউনিয়ন পরিষদ এর ১১ ইউপি সদস্য প্রশাসক চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করলেও পরে বিএনপি পন্থী এক ইউপি সদস্য কে প্যানেল চেয়ারম্যান বানাতে একটি অংশ পুনরায় ইউপি সদস্যদের চাপ প্রয়োগ করে স্বাক্ষর নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলেও খবর রটে। তবে এসব খবরের সত্যতা নিশ্চিতে ধোঁয়াশা কাটছে না। কর্ণফুলীর কিছু সাধারণ নাগরিকের দাবি, বর্তমান জনপ্রতিনিধিরা বিগত শেখ হাসিনা সরকারের আর্শিবাদপুষ্ট। তাঁদের অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ করা উত্তম। বিগত সব নির্বাচন এমন হয়েছে যে, নির্বাচন নিয়ে মানুষের মনে অনেক নেগেটিভ প্রশ্ন রয়েছে। সরকার পরিবর্তনের ফলে মানুষ এখন ক্ষোভ প্রকাশ করছে। জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ চাইছে।
সামগ্রিক বিষয়ে জানতে চাইলে বড়উঠান ও শিকলবাহা ইউনিয়নের সদ্য আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা হারা ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ দিদারুল আলম ও জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সবদিকে একটা অস্থিরতা। প্রথমে স্থানীয় সরকার বিভাগ আমাদের ইউনিয়ন পরিষদ সচল রাখতে পরিপত্র দিলেন। এরপর ডিসি অফিসও ৭ টি নির্দেশনা দিলেন পরিষদে সেবা চালু রাখার। কিন্তু ইউএনও চিঠি দিয়ে চেয়ারম্যানদের বাদ দিয়ে ট্যাগ অফিসার নিয়োগ দিলেন। এরপর জন্ম ও মৃত্যু সনদের দায়িত্ব দিলেন উপজেলা কর্মকর্তাদের। হঠাৎ আবার প্রশাসক নিয়োগ কেন তা আমাদের বোধগম্য নয়। কিন্তু আমাদের পাশের উপজেলা পটিয়া ও আনোয়ারায়ও এখনো এ রকম কিছু ঘটেনি। আমরা ডিসি মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি পুনর্বিবেচনার। কেননা, কেউ হয়তো কাগজে কলমে আমাদের অনুপস্থিত দেখিয়েছেন। যা সত্য নয়। আমরা জনগণের প্রতিনিধি সুতরাং জনগণই এটার সিদ্ধান্ত নেবেন।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও ইউপি প্রশাসক মাসুমা জান্নাত বলেন, ‘নাগরিক সেবা সচল করার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ যে সিদ্ধান্ত দেন তা আমরা শুধু মাঠে বাস্তবায়ন করি। গত ১৯ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে চেয়ারম্যান এর আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করেছেন। সরকারি নির্দেশনা ও আদেশ অনুযায়ী আমরা কাজ করব।’
কর্ণফুলীর চার ইউনিয়নে প্রশাসককে দায়িত্ব দিলেও চরলক্ষ্যা ইউনিয়নে কেন দায়িত্ব দেওয়া হয়নি এবং চেয়ারম্যানেরা উপস্থিত থাকার পরও কেন প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হলো। এসব পুনর্বিবেচনার কোন সুযোগ রয়েছে কিনা জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) মো. সাদি উর রহিম জাদিদ বলেন, ‘কর্ণফুলীর চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের বিষয়টি এখনো পেন্ডিং রয়েছে। আর চেয়ারম্যানেরা উপস্থিত এ রকম কেউ তো কোন লিখিত আবেদন করেনি। যদি করে থাকে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অপরদিকে, চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান হাজী ছাবের আহমদ বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে নিজস্ব অর্থায়নে ও জনস্বার্থে জনগণের সহযোগিতায় ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সের কাজ নির্মাণাধীন। ইতিমধ্যে ৫০ ভাগের উপরে কাজ শেষ। বিষয়গুলো বিবেচনা করে ডিসি মহোদয়ের পুনরায় বিবেচনা করার জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।’
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ আইনজীবী আবু তৈয়ব বলেন, ‘যেসব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা নেই সে সব ইউনিয়ন পরিষদে প্যানেল চেয়ারম্যানকে নিয়োগ দেওয়া উচিত। এমনি প্রশাসক নিয়োগের আগে স্ব স্ব ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যানগণ থেকে দায়িত্ব নিতে আগ্রহী কিনা আবেদন নেওয়া উচিত ছিলো। যারা আগ্রহী তাঁদেরকে আইনানুসারে দায়িত্ব দেওয়া যেত। কারণ জনগণকে জনপ্রতিনিধিদের কাছাকাছি রাখলে সেবা প্রদান সহজ হয়। এমনকি একজন নির্বাহী কর্মকর্তা একই সাথে একাধিক ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব নিয়ে কাজ করা খুবই কঠিন। তাছাড়া জনবলের অভাব রয়েছে। সবশেষে বলবো, সরকার যদি পুরো পরিষদ বাতিল করে সেটা ভিন্ন কথা।’
প্রসঙ্গত, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘বিশেষত ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষেত্রে এ সমস্যাগুলো অত্যন্ত প্রকট।
ইউনিয়ন পরিষদগুলোর চেয়ারম্যানদের এখনই অপসারণ করা হচ্ছে না। এক্ষেত্রে যে সব জায়গায় চেয়ারম্যানরা অনুপস্থিত রয়েছেন সেখানে কাজ চালিয়ে নিতে প্যানেল চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব পালন করতে পরিপত্র জারি করা হয়েছে। আগামীতে পর্যায়ক্রমে সব চেয়ারম্যান অপরসারণ করা হবে।’