চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে গ্রাম্য সালিশ বিচারের নামে এক যুবককে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগে নিজ শ্বশুর ও ইউপি সদস্যসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৬ এ ভুক্তভোগী যুবক মো. আবু শফি (৩৩) বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। যার সি.আর মামলা নং-৩৪৩।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন-কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যা ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান (৪৫), তাঁর ছোট ভাই আবদুল গণি প্রকাশ কালু (৪০), মেম্বারের কথিত পিএস মামুন (৩২), বাদীর শ্বশুর আবছার (৫০), ৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার নুর উদ্দিন বাদশা (৩২) এবং কায়ছার (৩৫)।
ভুক্তভোগী মো. আবু শফি (৩৩) চরলক্ষ্যা ১ নম্বর ওয়ার্ডের গোলাম কাদেরের বাড়ির মো. বেসাদ উল্লাহর ছেলে। তাঁর স্ত্রী একই ওয়ার্ডের শাহসূফী আবদুল আজিজের বাড়ির আবছারের মেয়ে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বাদীর সাথে তাঁর স্ত্রীর মনমালিন্য হলে বাদীর শ্বশুর এসে স্ত্রীকে নিয়ে যায়। পরে গত ১৯ জুলাই সন্ধ্যায় বাদীর শ্বশুর বাড়ির আত্মীয় চরলক্ষ্যা (৩ নম্বর ওয়ার্ড) এর মেম্বার ও মামলার ১ নম্বর আসামি সালিশ বিচারের জন্য তাঁর অফিসে ফোন করে ডেকে নেন।
পরে শ্বশুরসহ মেম্বারের নেতৃত্বে বাদীকে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে এসএস পাইপ, লোহার তার দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেন।
মামলা সূত্রে জানা আরও জানা গেছে, নির্যাতনের পর বাদীর ব্যবহৃত ২০ হাজার টাকা দামের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে জোরপূর্বক কয়েকটি খালি স্ট্যাম্পে সাক্ষর নেন। পরে তার পরনে থাকা কাপড় খুলে আসামিরা লুঙ্গি পরিয়ে ছেড়ে দেন। এসব নির্যাতনের কথা কাউকে বললেও আইনের আশ্রয় নিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেন বলে জানান।
ভুক্তভোগী মো. আবু শফি বলেন, ‘আমার স্ত্রীর সাথে আমার মনমালিন্য হলে তাঁর বাবা এসে স্ত্রীকে নিয়ে যান। পরে আমাকে ফোন করে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বারের অফিসে ডেকে নিয়ে মারধর ও নির্যাতন করে। তিনি আমার ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নয়। আমি ১ নম্বর ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা এবং আমার শ্বশুর বাড়িও ১ নম্বর ওয়ার্ডে। সালিশ বিচার করলে আমাদের ওয়ার্ডের মেম্বার করতো। তিনি কেন আমাকে ডেকে নিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করলেন। আমি এটার বিচার চাই।’
এ প্রসঙ্গে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কর্ণফুলী থানার এসআই সেকান্দর মিয়া বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। আদালতে শিগগরই প্রতিবেদন পাঠানো হবে।’