করোনায় ঘরহারা তিন ওয়ার্ড

চিকিৎসা পাচ্ছেন না চর্মরোগ ও ফিজিক্যাল মেডিসিনের রোগীরা ।। চমেক হাসপাতাল

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৯ অক্টোবর, ২০২০ at ১০:২৪ পূর্বাহ্ণ

করোনা রোগীদের চিকিৎসায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে আলাদা করোনা ব্লক চালু হয় মে মাসের শেষ দিকে। হাসপাতালের নিচতলায় তৎকালীন জরুরি বিভাগের পার্শ্ববর্তী ক্যাজুয়াল্টি, চর্ম ও যৌন রোগ এবং ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগ সরিয়ে সেখানেই দেড়শ শয্যার করোনা ব্লক তৈরি করা হয়। ওই সময় তিনটি ওয়ার্ডের মধ্যে দুটি ওয়ার্ডকে (চর্ম ও যৌন রোগ এবং ফিজিক্যাল মেডিসিন) নতুন ভবনে (এনসিলারি বিল্ডিং) স্থানান্তর করে হাসপাতাল প্রশাসন। তবে নতুন ভবনে স্থানান্তর করা হলেও সেখানে পর্যাপ্ত জায়গা বা কক্ষ কোনটাই পায়নি এ দুটি বিভাগ। ফলে ইনডোরে রোগী ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়ারও সুযোগ নেই বিভাগ দুটির। পুরনো ওয়ার্ডে (আগের জায়গায়) ফিজিক্যাল মেডিসিনে ২০ শয্যা, চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগে ২০ শয্যা এবং ক্যাজুয়াল্টি বিভাগে ২৫ শয্যায় রোগী ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হতো। এখন জায়গা স্বল্পতায় বিভাগগুলোর কেবল আউটডারের (বহিঃবিভাগ) চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে রোগীরা। ইনডোরে ভর্তি রেখে চিকিৎসা সেবা দেয়ার সুযোগ নেই। এতে করে এ সংক্রান্ত জটিলতা থাকা রোগীরা প্রায় ৫ মাস ধরে ইনডোরের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন। এর বাইরে বিভাগ দুটির অধিকাংশ চিকিৎসকদের বসার সুযোগও নেই স্থানান্তরিত নতুন ভবনে। সবমিলিয়ে করোনায় হাসপাতালের এই তিনটি ওয়ার্ড যেন ঘর হারা।
তবে নতুন ভবনের কয়েকটি ফ্লোরের কাজ এখনো শেষ না হওয়ায় জায়গা সংকট রয়েছে জানিয়ে চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর আজাদীকে বলেন, চর্ম রোগ ওয়ার্ডের বিষয়টি আমি নিজে গিয়ে দেখে এসেছি। নতুন ভবনের ৫ম তলায় সাময়িকভাবে তাদের জন্য জায়গা দেয়া হয়েছে। ওখানে চিকিৎসকরাও বসার সুযোগ পাবেন। আর বাকি ফ্লোরগুলোর অসম্পূর্ণ কাজ শেষ হলে এ সংকট থাকবে না। হাসপাতাল পরিচালক বলেন, আমরা আশা করছি কয়েক মাসের মধ্যেই ভবনের পুরো কাজটি আমরা বুঝে পাবো। তখন এ বিভাগগুলোর জায়গা সংকট থাকবে না।
সরেজমিন দেখা গেছে, নতুন ভবনের দুটি কক্ষে আউটডোরে (বহিঃবিভাগ) চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগ। দুটি কক্ষে দুজন বা তিনজন চিকিৎসক রুটিন মেনে এখানে চিকিৎসা সেবা দেন। একইভাবে আউটডোরে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগও। তবে বিভাগ দুটির অধিকাংশ চিকিৎসকদের বসার তেমন ব্যবস্থা নেই।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগে প্রায় ১০ জন, ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগে ৬/৭ জন এবং ক্যাজুয়াল্টি ওয়ার্ডে ৫/৬ জন নিয়মিত চিকিৎসক আছেন। এর বাইরে প্রতিটি ওয়ার্ডে এমএস বা এমডিসহ বিভিন্ন কোর্সে অধ্যয়নরত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অনারারি চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করেন। তাঁরাও রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেন।
ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. শওকত হোসেন বলেন- বিভাগের চিকিৎসকরা এখন আউটডোরে এবং কোভিড ব্লকে রোস্টার মেনে দায়িত্ব পালন করেন। তবে ইনডোর চিকিৎসা সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে- ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগকে নতুন ভবনের ৯ তলায় এবং চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগকে ১০ তলায় জায়গা দেয়ার কথা। সেখানেই নতুন করে বিভাগ দুটি সাজানোর কথা রয়েছে। কিন্তু ভবনের কাজ শেষ না হওয়ায় এ দুটি বিভাগ সম্পূর্ণভাবে স্থানান্তর হতে পারছে না। হাসপাতাল পরিচালক বলেন- ক্যাজুয়াল্টি জটিলতা নিয়ে আসা রোগীদের জরুরি বিভাগ (ইমার্জেন্সি) ও সার্জারিসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅবৈধভাবে আলু মজুদ রাখলেই ব্যবস্থা
পরবর্তী নিবন্ধঅনলাইনে যে কোনো স্থান থেকে দেয়া যাবে খাজনা : ভূমিমন্ত্রী