২০১৬ সালে প্রণীত চট্টগ্রাম ওয়াসার মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী নগরে খাল আছে ৫৭টি, যার দৈর্ঘ্য ১৬৩ দশমিক ৫০ কিলোমিটার। অথচ মাস্টার প্ল্যানটির ওপর ভিত্তি করে সিডিএর গৃহীত মেগা প্রকল্পে খাল আছে ৩৬টি। ২০১৮ সালে অনুমোদিত এ প্রকল্পটির কাজ এখনো শেষ হয়নি। এছাড়া ১৯৯৫ সালে প্রণীত সিডিএর ড্রেনেজ মাস্টার প্ল্যানে তিনটি নতুন খাল খননের প্রস্তাব ছিল। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) উদ্যোগে বর্তমানে মাত্র একটি নতুন খাল খননের কাজ চলছে। সেটার অগ্রগতিও সামান্য। ফলে অল্প বৃষ্টিতে ডুবে যায় নগর। জলাবদ্ধতার দুর্ভোগে কষ্ট পায় নগরবাসী। এ অবস্থায় নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনসহ দৃষ্টিনন্দনভাবে খালসমূহ উন্নয়নে করণীয় খুঁজছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে ১২ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত ৯ জুন গঠিত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে করণীয়গুলো তুলে ধরবে। স্থানীয় সরকার বিভাগের (পানি সরবরাহ) অতিরিক্ত সচিবকে আহ্বায়ক এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিবকে (সিটি কর্পোরেশন-২) কমিটির সদস্য সচিব করা হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ শামছুল ইসলাম জানান, কমিটি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সার্বিক জলাবদ্ধতা নিরসনসহ দৃষ্টিনন্দনভাবে খালসমূহ উন্নয়নের বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে প্রতিবেদন দাখিল করবে। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে এ প্রতিবেদন বা সুপারিশগুলো দাখিল করবে। কমিটি প্রয়োজনে যে কোনো সদস্যকে কো-অপ্ট করতে পারবে।
কমিটি গঠন সংক্রান্ত স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অফিস আদেশ সূত্রে জানা গেছে, কমিটির অন্য সদস্যরা হচ্ছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের (নগর উন্নয়ন-১) যুগ্মসচিব, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক। এছাড়া গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি সদস্য থাকবেন। চট্টগ্রাম ওয়াসা, সিডিএ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধিকেও কমিটির সদস্য সচিব করা হয়।
এদিকে নগরে জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান প্রকল্পগুলোর মধ্যে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সমপ্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক সিডিএর মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সেনাবাহিনী। ১ হাজার ৬২০ কোটি ৭৩ লাখ ৫০ হাজার টাকায় ‘চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলমগ্নতা বা জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশন উন্নয়ন’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ২ হাজার ৩১০ কোটি ২৪ লাখ ২০ টাকায় ‘কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সিডিএ।
এছাড়া সিডিএর মাস্টার প্ল্যানে মুরাদপুরের সিডিএ এভিনিউতে মির্জা খালের সমান্তরালে একটি খাল, বহদ্দারহাট খাজা রোডের সমান্তরালে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত একটি খাল ও শীতল ঝর্ণা খাল খননের সুপারিশ করা হয়। এর মধ্যে বহদ্দারহাট বাড়ইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত নতুন খাল খনন প্রকল্পটি ১ হাজার ৩৭৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করছে চসিক।