কপ ২৬ কেন গুরুত্বপূর্ণ?

| রবিবার , ১৭ অক্টোবর, ২০২১ at ১০:২৬ পূর্বাহ্ণ

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনকে নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে যুক্তরাজ্যে এ বছর গুরুত্বপূর্ণ যে সম্মেলন হতে যাচ্ছে, তা সফল হলে বিশ্ববাসীর দৈনন্দিন জীবনযাত্রাতেও দেখা যেতে পারে বড় পরিবর্তন। চলতি মাসের শেষদিন, অর্থাৎ ৩১ অক্টোবর থেকে গ্লাসগোতে এ কনফারেন্স অব দ্য পার্টিজের (কপ) ২৬তম আয়োজন শুরু হচ্ছে, যা ১২ নভেম্বর শেষ হওয়ার কথা। এবারের কপে যে যে বিষয় নিয়ে আলোচনা, তর্ক-বিতর্ক হতে পারে, সম্মেলনটি সফল বা ব্যর্থ হলে মানুষের উপর তার কী কী প্রভাব পড়তে পারে?
কপ ২৬ হচ্ছে কেন? : মানুষের কারণে যে বিপুল পরিমাণ জীবাশ্ম জ্বালানি নির্গত হচ্ছে, তা বিশ্বকে ক্রমাগত আরও উষ্ণ করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত চরম ভাবাপন্ন আবহাওয়ার কারণে দাবদাহ, বন্যা ও দাবানলের মতো ঘটনা বাড়ছে এবং এগুলোর মাত্রা দিন দিন আরও তীব্রতর হচ্ছে। গত দশক ছিল রেকর্ড অনুযায়ী এখন পর্যন্ত সবচেয়ে উষ্ণ। এই পরিস্থিতি বদলাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার সম্মিলিত পদক্ষেপ নেওয়ার বিষযে একমত হয়েছে। এবারের সম্মেলনে ২০০ দেশের কাছে ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ কমানোর ব্যাপারে তাদের পরিকল্পনা কী তা জানতে চাওয়া হবে।
২০১৫ সালে এই দেশগুলো বৈশ্বিক উষ্ণতা প্রাক শিল্পায়ন যুগের চেয়ে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি যেন না বাড়ে, যেন এর চেয়ে ‘অনেক কম’ সম্ভব হলে প্রাক শিল্পায়ন যুগের তাপমাত্রার চেয়ে দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশির মধ্যে রাখা যায়, তা নিশ্চিতে ব্যবস্থা নিতে রাজি হয়েছিল। এটাই প্যারিস চুক্তি নামে পরিচিত; এই চুক্তির ফলে কার্বন নিঃসরণ ২০৫০ সালের মধ্যে কার্যত শূন্যে নামিয়ে আনতে বিভিন্ন দেশকে এখন কার্বন নিঃসরণ ব্যাপক হারে কমাতে হবে।
সম্মেলন শুরুর আগেই বেশিরভাগ দেশ কার্বন নিঃসরণ কমানো বিষয়ক তাদের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে ফেলবে; ফলে আগেভাগেই বোঝা যাবে, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে বিশ্ব থাকছে কি না। দুই সপ্তাহের এই সম্মেলনে নতুন নতুন অনেক ঘোষণাও আসতে পারে। এসব ঘোষণার বেশিরভাগই হতে পারে খুবই টেকনিক্যাল; যেমন হতে পারে প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নে আরও যেসব নিয়মকানুন থাকা দরকার, সেগুলো যোগ করা।
আরও যে যে ঘোষণা আসতে পারে, তার মধ্যে আছে-
জ্বালানিনির্ভর গাড়ি থেকে দ্রুত বৈদ্যুতিক গাড়িতে চলে যাওয়া, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের পথ থেকে সরে আসার গতি বাড়ানো, গাছ কাটা কমানো, উপকূলীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় অর্থায়নসহ জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে আরও বেশি মানুষকে রক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়া।
গ্লাসগোতে এবারের সম্মেলনে বিশ্বনেতা, মধ্যস্থতাকারী ও সাংবাদিকসহ অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ২৫ হাজার পর্যন্ত হতে পারে বলে ধারণা আয়োজকদের। হাজার হাজার পরিবেশকর্মী ও ব্যবসায়ীরাও শহরটিতে নানান অনুষ্ঠান করবে, নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াবে ও বিক্ষোভ করবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। সম্মেলন শেষে একটি ঘোষণা আসার কথা, যেখানে সবগুলো দেশের স্বাক্ষর থাকবে এবং সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি থাকবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভাটিয়ারীতে আগুনে পুড়ল ৩০ দোকান
পরবর্তী নিবন্ধজয়ার ঘরে দুই কন্যা