পটিয়ায় ভুয়া জন্ম সনদে বিয়ে দেয়ার অভিযোগে কনের পিতা ও মাতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। পটিয়ার সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তাররাহুম আহমেদ গত ১৩ জানুয়ারি এ পরোয়ানা জারি করেন। এর আগে ভুয়া জন্ম সনদ তৈরি করে গত বছরের ৫ জানুয়ারি নাবালিকা মেয়েকে সাবালিকা দেখিয়ে সামাজিকভাবে বিয়ে দেন তার মা–বাবা। বিয়ের ৬ মাস পর গত বছরের ২৭ জুলাই যৌতুক দাবির অপরাধে বরের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা করেন কিশোরীর মা বুলু আক্তার। মামলার শুনানিকালে কিশোরীর জন্ম সনদ পর্যালোচনা করে আদালত জানতে পারে বিয়ের সময় প্রদত্ত জন্ম সনদটি ভুয়া। কিশোরী বিয়ের উপযুক্ত ছিল না। এ কারণে বরের বিরুদ্ধে ২৭ জুলাই কনের মায়ের আদালতে দায়ের করা মামলা আদালতের বিচারক তাররাহুম আহমেদ খারিজ করে দেন। সেই সাথে আদেশ দেন নাবালিকা হওয়ার পরও ভুয়া জন্ম সনদ তৈরি করে সাবালিকা দেখিয়ে বিয়ে দেয়ার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়েরের জন্য। আদালতের নির্দেশ পেয়েই পুলিশ কনের বাবা পটিয়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডস্থ হাবিবুর পাড়ার বাসিন্দা ফরিদ উদ্দিন ও তার স্ত্রী বুলু আক্তারের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
বরের বাড়ি উপজেলার হাইদগাঁও ইউনিয়নের আমির আলী ফকিরের বাড়িতে। বর মোহাম্মদ মামনুর রশিদ ওই এলাকার বাসিন্দা ফজল আহমদের ছেলে, পেশায় তিনি ব্যাংকার। তিনি বলেন, গত বছরের ৫ জানুয়াারি সামাজিকভাবে বিয়ের পর মাত্র ১৬ দিন তাদের সংসার হয়েছে। তার স্ত্রী বাবার বাড়ি বেড়াতে গিয়ে আর ফিরেননি। আর মা তার বিরুদ্ধে যৌতুকের মিথ্যা মামলা করতে আদালতে গিয়েছিলেন। সেখানে বিচারকের হাতেই ভুয়া জন্ম সনদ তৈরির বিষয়টি ধরা পড়ে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলার আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, যাচাই–বাছাই ছাড়া কিশোরীর বিয়ে রেজিস্ট্রি করার অপরাধে রেজিস্ট্রার (কাজী) সোলাইমান চৌধুরীকেও আদালতে তলব করা হয়। গত বছরের ২৪ জুলাই কাজী আদালতে হাজির হয়ে কনের পিতা ও মাতার উত্থাপন করা জন্ম সনদ মোতাবেক বিয়ে নিবন্ধন করা হয় বলে জানান। আদালত ভুয়া জন্ম সনদ তৈরিতে কাজীর সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেন। পরে আদালতের নির্দেশে গত বছরের ১৯ আগস্ট এসআই আকরাম হোসেন বাদী হয়ে কিশোরীর বাবা ফরিদ উদ্দিন ও মা বুলু আক্তারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোহেল জানান, ওই মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ ভুয়া জন্ম সনদ তৈরির সাথে কনের পিতা ও মায়ের সংশ্লিষ্টতা পায়। এ কারণের তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট প্রদান করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৩ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।