কদমতলী বাস স্ট্যান্ডে শ্রমিক বহিরাগত ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া

সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাসে পরিস্থিতি শান্ত

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১৩ জুন, ২০২২ at ৮:০৬ পূর্বাহ্ণ

নগরীর কদমতলী বাস স্ট্যান্ডে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের চাঁদা দাবি ও আন্তঃজিলা বাস মালিক সমিতির নেতা মো. ইউনুছ ও মো. আবুল কাশেমের ওপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিবহন শ্রমিকদের সাথে বহিরাগতদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা বহিরাগত সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও হামলার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত গাড়ি চালাতে অস্বীকৃতি জানান। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও পরিবহন মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে পরিস্থিতি শান্ত হয়। উভয় পক্ষ সিদ্ধান্ত নেয় যে আজ সোমবার বিআরটিসি ভবনস্থ আন্তঃজিলা বাস মালিক সমিতি কার্যালয়ে বেলা এগারটায় উভয় পক্ষের মধ্যে এ সংক্রান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে সমাধান না এলে পরিবহন নেতৃবৃন্দ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণসহ কঠোর কর্মসূচি দেবেন।
ঘটনার বিবরণে আন্তঃজিলা পরিবহন মালিক সমিতির নেতা মো. আবুল কাসেম আজাদীকে জানান, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তিনি, পরিবহন নেতা মো. ইউনুছসহ কয়েকজন কদমতলী বাস স্ট্যান্ডস্থ নিজেদের অফিসে বসে কথা বলছিলেন। এ সময় স্থানীয় পরিবহন ব্যবসায়ী বদরুল হুদা মুরাদ, ইউছুফ, নাহিদসহ বেশ কয়েকজন অতর্কিতে অফিসে ঢুকে পড়ে। তারা পরিবহন নেতা ইউনুছকে চেয়ার থেকে টেনে হেঁচড়ে তুলে দেয়। নাহিদ অপর নেতা আবুল কাসেমকে ঘুষি মারে। তারা শাসিয়ে যায়, স্ট্যান্ড থেকে গাড়ি বের হলেই স্থানীয় হিসেবে তাদের চাঁদা দিতে হবে। এ সময় তারা বিভিন্ন পরিবহনের কয়েকজন শ্রমিককেও মারধর করে। পরে পরিবহন শ্রমিকরা সংঘবদ্ধ হয়ে হামলাকারীদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে বাঁচে।
তিনি জানান, এ ঘটনার বিচারের দাবিতে ক্ষেপে ওঠে শ্রমিকরা। তারা জানিয়ে দেয় প্রশাসন এর সুষ্ঠু বিচার না করলে আগামীকাল (আজ সোমবার) বেলা সাড়ে বারোটা পর্যন্ত কদমতলী বাস স্ট্যান্ড থেকে কোনো গাড়ি বের হবে না এবং এ সড়কে কোনো যানবাহন চলতে দেওয়া হবে না। কিন্তু দূর দূরান্তের অনেকেই টিকিট কেটে ততক্ষণে বাসে ওঠে বসেছিলেন। এর মধ্যে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গও আসেন সমঝোতার জন্য। পরে সবদিক বিবেচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নিই, আগামীকাল বেলা সাড়ে এগারটায় উভয় পক্ষ বসে এর সমাধান করা হবে। নয়তো মামলা করা হবে আন্তঃজিলা বাস মালিক সমিতির পক্ষ থেকে। কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল কবির জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, কমিটি গঠন নিয়ে আন্তঃজিলা বাস মালিক সমিতির মধ্যে সাধারণ মিটিংয়ে ঝামেলার বিষয়টি শুনেছি। এ ব্যাপারে একপক্ষ থানায় জিডি করেছে। যদি মামলার প্রসঙ্গ আসে তখন অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেবো।
এদিকে চট্টগ্রামে পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা ফিরে আনা, অবাঞ্চিত ও বহিরাগতদের সংগঠন বিরোধী অপতৎপরতা বন্ধের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের উদ্যোগে বিভিন্ন বেসিক মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের এক সমন্বয় সভা গতকাল ১২ জুন রোববার বিকেলে বি.আর.টি.সি মার্কেটস্থ আন্তঃজিলা বাস মালিক সমিতির মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব মঞ্জুরুল আলম মঞ্জুর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন-বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও আন্তঃজিলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কফিল উদ্দিন আহমদ। সভায় ১৭টি মালিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় সর্ব সম্মতিক্রমে আগামী ১৪ জুন মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাচার করা অর্থ ফেরানোর সুযোগের সমালোচনা সংসদে
পরবর্তী নিবন্ধডলারের বিপরীতে ফের টাকার মান কমলো