কঠোর লকডাউনের কারণে চট্টগ্রাম কাস্টমসে নিলাম অনুষ্ঠান স্থগিতের দাবি জানিয়েছে কাস্টম নিলাম ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি। এই বিষয়টি নিয়ে কাস্টমস কমিশনার মো. ফখরুল আলমের কাছে চিঠি লিখেন সমিতির নেতারা। উল্লেখ্য, আগামী ৮ জুলাইয়ে ফেব্রিক্স, কেমিক্যাল-মাল্টাসহ ৫৬ লট পণ্যের নিলাম আহ্বান করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম শাখা। নিলামকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে পণ্যের ক্যাটালগ বিক্রিও শুরু করেছে সরকারি নিলাম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান কে এম কর্পোরেশন। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোরশেদ বলেন, আগামী ৮ জুলাই বেলা আড়াইটায় নিলাম অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বিডাররা (নিলামে অংশগ্রহণকারী) আগামী ৭ জুলাই দরপত্র কিনে তারপর বেলা দুইটার মধ্যে নির্ধারিত বক্সে জমা দিতে পারবেন। তারপর বরাবরের মতো সবার উপস্থিতিতে দরপত্রের বঙ খোলা হবে। এদিকে কাস্টম কমিশনার বরাবর লিখা চিঠিতে ব্যবসায়ীরা উল্লেখ করেন, করোনা মহামারী নিয়ন্ত্রণে সরকার গত পহেলা জুলাই থেকে আগামী ৭ জুলাই পর্যন্ত একাধিক বিধি নিষেধযুক্ত করে কঠোর লকডাউন জারি করে। এই সময়ে বিনা কারণে কোনো ব্যক্তিকে ঘরের বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। একই সাথে গণপরিবহন চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে জরুরি সেবা চালু রাখতে বলা হয়েছে। সারাদেশের লকডাউন নিশ্চিতকরণে প্রশাসনেক নির্দেশ দেওয়া হলেও আপনার দপ্তরের নিলাম শাখা আগামী ৮ জুলাই নিলামের দিন ধার্য্য করেছে। এই সময়ে নিলাম অনুষ্ঠিত হলে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকবে না। গণপরিবহন বন্ধ এবং ঘরের বাইরে যেতে নিষেধাজ্ঞা থাকায় প্রতিযোগিতামূলক উপস্থিতি নিশ্চিত করা যাবে না। ব্যাংকের কার্যক্রম সীমিত হওয়ায় সঠিক সময়ে পে-অর্ডার ইস্যু না হওয়ায় আশঙ্কা রয়েছে। করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পরিবহন স্বল্পতার কারণে সঠিক সময়ে দরপত্র জমা দেওয়া সম্ভব হবে না। নির্দিষ্ট বিডারের মাধ্যমে নিলাম নিয়ন্ত্রিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া সরকারি রাজস্ব হানির আশঙ্কাও রয়েছে।
জানতে চাইলে কাস্টমসের নিয়মিত বিডার জহিরুল ইসলাম নঈম দৈনিক আজাদীক বলেন, কাস্টমসকে অবশ্যই জীবন ও জীবিকা দুটো বিষয় মাথায় নিয়েই কাজ করতে হবে। এই কঠোর লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় অনেকে নিলামে অংশ নিতে পারবে না। এতে অসম প্রতিযোগিতা হবে বলে আমি মনে করি।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপ-কমিশনার (নিলাম শাখা) মো. আল আমিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, বিডাররা আমাকে এই বিষয়ে মৌখিক কিংবা লিখিতভাবে জানাননি। তবে আমি কমিশনার স্যারের সাথে কথা বলেছি। এখন কভিডের কারণে দেশজুড়ে কঠোর লকডাউনে চলছে। তবে আমাদের এখন পণ্যের জটের কারণে অফডকগুলোর পারফরম্যান্স খারাপ হয়ে গেছে। তাই পণ্য নিলামে তুলে আমাদেরকে জট নিরসন করতে হবে। আগামী নিলামে ৫৬ লটের মধ্যে ১৩ লট হচ্ছে মাল্টা। মাল্টা পচনশীল পণ্য। এখন যদি এসব মাল্টা নিলামে বিক্রি করতে না পারি, তাহলে মাল্টাগুলো পচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া করোনা পরিস্থিতি যে আগামী দুই তিন সপ্তাহের মধ্যে উন্নতি হবে, তারও নিশ্চয়তা নেই। তাই আমাদের দিক থেকে পেছানোর অপশন নেই। আমাদের চেষ্টা থাকবে অন্তত পচনশীল পণ্যগুলো যাতে বিক্রি হয়। এখন নিলামে তুলতে না পারলে আবার কোরবানির ঈদের পর হয়ে যাবে।