সারা দেশে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান শুরু হয়েছে। গতকাল বুধবার থেকে এ অভিযান শুরু হয়। পর্যটন জেলা কক্সবাজারে এ পর্যন্ত ১০৬টি বৈধ অস্ত্র জমা দেওয়া হয়েছে। আরও ৯৯টি বৈধ অস্ত্র এখনো জমা পড়েনি।
দেশের পট পরিবর্তনের পর বিভিন্ন থানা থেকে অস্ত্র লুট হয় এবং ভাঙচুর চলে। ফলে অনেক অস্ত্রের হদিস পাওয়া যায়নি। তাই ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি ২০০৯ থেকে চলতি বছরের ৫ অগাস্ট পর্যন্ত সকল বৈধ ও অবৈধ অস্ত্র জমা দেয়ার নির্দেশনা দেয় সরকার। অস্ত্র জমা দেয়ার শেষ সময় ছিল গত ৩ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত। কিন্তু সব অস্ত্র জমা না হওয়ায় গতকাল থেকে অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান শুরু হয়। বৈধ অস্ত্রের ব্যবহার ও আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে এ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের জেএম শাখাসূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে এ বছরের ৪ অগাস্ট পর্যন্ত কক্সবাজারের আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্সের সংখ্যা ২৭৯টির বিপরীতে প্রশাসন অস্ত্র ক্রয় করেছে ২৩৩টি। এরমধ্যে জমা প্রদান যোগ্য ২০৫টি। বিভিন্ন জনের আবেদনের প্রেক্ষিতে এবং কর্মরত সামরিক কর্মকর্তার মৃত্যুজনিত কারণে, পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য অস্ত্র বরাদ্দ রয়েছে ৭৪টি।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আতাউল গনি ওসমানী জানান, গতকাল বুধবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসকের জেএম শাখায় মোট অস্ত্র জমা পড়েছে ১০৬টি। অর্থাৎ ২০৫টি বৈধ অস্ত্র থেকে এখনো পর্যন্ত ৯৯টি অস্ত্র লাইসেন্সধারীরা জমা দেয়নি। ফলে ৯৯টি অস্ত্র বৈধ হয়েও যথাসময়ে জমা না দেওয়ায় এসব অবৈধ অস্ত্র হিসাবে গণ্য করা হবে। এছাড়া এসব অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। এদিকে অস্ত্র উদ্ধার অভিযান নিয়ে জনমনে কিছুটা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ছড়িয়েছে কিছুটা গুঞ্জনও। বিশেষ করে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর গ্রেপ্তার আতঙ্কে থাকা রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে এই আতঙ্ক কিছুটা বেশি বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, আতঙ্কে থাকায় অনেকেই বিভিন্ন সূত্রে এ বিষয়ে খবর নেওয়ার চেষ্টা করছেন। বিষয়টি শুধু অস্ত্র উদ্ধার, নাকি অস্ত্র উদ্ধারকে কেন্দ্র করে বিশেষ কোনো গ্রেপ্তার অভিযান চলবে–এ নিয়ে তাদের মধ্যে কৌতূহল রয়েছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে একটি তালিকা হয়েছে। তবে উদ্ধার অভিযান নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। যৌথ বাহিনীর যেসব সদস্য উদ্ধার অভিযানে যাবেন তারা আগে নিজের পরিচয় দেবেন। এরপর গ্রেপ্তার করবেন। তাই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। অভিযানে সন্ত্রাসী বা সাধারণ মানুষ যার কাছেই অস্ত্র পাওয়া যাবে তাকেই গ্রেপ্তার করা হবে।