কক্সবাজারে ১১০ কিলোমিটার সাইক্লিং প্রতিযোগিতা সম্পন্ন

কক্সবাজার প্রতিনিধি | শনিবার , ১ মার্চ, ২০২৫ at ১১:১৮ পূর্বাহ্ণ

সাগর আর পাহাড়ের মিতালিতে এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখা গেলো কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ সড়কে। ফাগুনের সকালে ঝিরিঝিরি শীতের আবেশ মেখে এই সড়কে ৪০০ সাইক্লিস্টের এক দারুন প্রতিযোগিতা। সারি সারি সাইকেল ছুটে চলেছে। কে কার আগে লক্ষ্যে পৌঁছাবেন তার তীব্র প্রতিযোগিতা চলছে। এমন দৃশ্যে কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়কে গতকাল শুক্রবার এক ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। দেশবিদেশের ৪০০ সাইক্লিস্ট নিয়ে আয়োজিত ‘মেরিন ড্রাইভ রেস ২০২৫’ নামে এই প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয়। ‘রাইড ফর গ্লোরি’ প্রতিপাদ্যে যৌথভাবে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশন ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। ছয়টি ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতায় অংশ নেন সাইক্লিস্টরা। প্রতিযোগিতায় সার্বিক সহায়তা দেয় বাংলাদেশ সাইক্লিং ফেডারেশন। আয়োজকরা জানিয়েছেন, দেশবিদেশে শীর্ষ সাইক্লিস্টদের নিয়ে এই মর্যাদাপূর্ণ প্রতিযোগিতাটির আয়োজন করা হয়। এই নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে জোরেশোরে কাজ করা হয়েছে। শুক্রবার ভোর ছয়টায় প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন সেনাবাহিনীর রামু ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও কক্সবাজার এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুল্লাহ মিনহাজুল আলম। উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। এর আগেই দিকে কক্সবাজারটেকনাফ মেরিন ড্রাইভের দরিয়ানগর পয়েন্টে অবস্থান নেন দেশবিদেশের সাইক্লিস্টরা।

পেশাদার ও অপেশাদার; দুটি ক্যাটাগরিতে এই সাইক্লিং প্রতিযোগিতা হয়। পেশাদার ক্যাটাগরির সাইক্লিস্টরা দরিয়ানগর (প্যারাসেইলিং পয়েন্ট) থেকে শুরু করে টেকনাফের জিরো পয়েন্ট হয়ে বেওয়াচ হোটেলের সম্মুখে এসে সাইক্লিং শেষ করেন। পেশাদার গ্রুপের ফিনিশিং টাইম ছিল ৩ ঘণ্টা। আবার অপেশাদার ক্যাটাগরির প্রতিযোগীরা প্যারাসেইলিং পয়েন্ট থেকে হোটেল বেওয়াচ, বালিয়াখালী কাঁকড়া বিচ হয়ে আবার হোটেল বেওয়াচে সম্মুখে এসে শেষ করেন সাইক্লিং। তাঁদের ফিনিশিং টাইম ছিল আড়াই ঘণ্টা।

পরে সকাল ১০টায় মেরিন ড্রাইভের ইনানীতে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকারউজজামান। এ সময় তিনি বলেন, ্তুনৈসর্গিক সৌন্দর্যের পীঠস্থানকে এই প্রতিযোগিতার জন্য বেছে নেয়া হয়েছে। মেরিন ড্রাইভে প্রথমবারের মতো মেরিন ড্রাইভ রেসের আয়োজন করা হয়েছে। এই প্রতিযোগিতা অব্যাহত রাখা হবে।্থ জেনারেল ওয়াকারউজজামান বলেন, সুন্দর দেশ ও সুস্থ জাতি গঠনে এ ধরনের প্রতিযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আশা করি বাংলাদেশের যুবসমাজ প্রতিনিয়ত এই ধরনের শারীরিক কার্যকলাপে জড়িত থাকবে। প্রতিযোগিরা বলেন, মেরিন ড্রাইভের এই রেস অসাধারণ। মূলত একপাশে সমুদ্র, অন্যপাশে পাহাড়ের সারি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এই রেসকে অনন্য মাত্রা দিয়েছে। এই অসাধারণ পরিবেশ প্রতিযোগিদের এক অসাধারণ অসাধারণ অনুভূতি উপহার দিয়েছে।

এই প্রতিযোগিতায় নারীরাও অংশ নিয়েছে। প্রতিযোগি তানহা বলেন, তুনারীরা যেন এ ধরনের আয়োজনে বেশি অংশ নিতে পারেন সে লক্ষ্যে উদ্যোগ ও প্রচারণা দরকার।’ এই প্রতিযোগিতা বিশেষত্ব ছিলো বিদেশিরা। তারা এমন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পেরে দারুণ খুশি হয়েছেন। এই নিয়ে তাদের অভিব্যক্তি বাংলাদেশের মানুষ খুবই আন্তরিক। তাঁদের সঙ্গে এত সুন্দর মেরিন ড্রাইভে সাইক্লিং করা বেশ আনন্দ দিয়েছে।

এসময় তারা কক্সবাজারের সৌন্দর্যে অভিভূত হন। প্রতিযোগিতায় প্রফেশনাল (১৩৪৪ বছর) ১১০ কিলোমিটারে নারী ও পুরুষ ক্যাটাগরিতে আলাদাভাবে বিজয়ী হয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্পোরাল ফাতেমা খাতুন ও মিজানুর রহমান। ৫৫ কিলোমিটারের অ্যামেচার ক্যাটাগরিতে (১৩৪৪ বছর) সেরা হন ব্রাজিলের লরা ও সৈয়দ মুবিন। এ ছাড়া নারীপুরুষ উভয় ক্যাটাগরিতে (১৩৪৪ বছর বয়সী) প্রথম ১০ জনকে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন সেনাবাহিনী প্রধান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন রামু ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও কক্সবাজার এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুল্লাহ মিনহাজুল আলম, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপটিয়া মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব চ্যাম্পিয়ন
পরবর্তী নিবন্ধবাবিসাসের অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠান