‘কক্সবাজারে বিএনপি নেতা রহিম হত্যায় জামায়াত নেতা দায়ী’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির অভিযোগ

কক্সবাজার প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ১৭ জুলাই, ২০২৫ at ১০:১৫ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারে হামলায় বিএনপি নেতা রহিম উদ্দীন সিকদার হত্যায় জামায়াত নেতাকে দায়ী করেছেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ। গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেছেন সদর উপজেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দ। দুপুর ১২টায় কক্সবাজার শহরে অবস্থিত জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতারা দাবি করেন, সদর উপজেলার ভারুয়াখালী ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রহিম উদ্দিন সিকদারকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ‘মব’ সৃষ্টি করে হত্যা করা হয়েছে। এতে নেতৃত্ব দিয়েছেন জামায়াতের কক্সবাজার শহর শাখার ওয়ার্ড ইউনিটের সভাপতি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান।

লিখিত বক্তব্যে সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল মাবুদ বলেন, ১৩ জুলাই রহিম উদ্দিন সিকদার পানিরছড়া বটতলী বাজারে যাচ্ছিলেন। পথে জামায়াত নেতা আবদুল্লাহ আল নোমানের নেতৃত্বে একদল দুর্বৃত্ত দেশি অস্ত্র নিয়ে রহিম উদ্দিনের ওপর হামলা করে। খবর পেয়ে ছাত্রদলের ভারুয়াখালী ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি সাকিব উদ্দিনসহ স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করতে যান। এ সময় তাঁদের ওপরও হামলা চালানো হয়। এতে রহিম উদ্দিন সিকদার ও সাকিব উদ্দিনসহ চারজন আহত হন। পরে তাঁদের উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে আনা হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রামে পাঠান। মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রহিম উদ্দিন সিকদার মারা যান।

লিখিত বক্তব্যে এই বিএনপি নেতারা অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার পর থেকে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, হামলায় নেতৃত্বদানকারী আবদুল্লাহ আল নোমান দলটির সঙ্গে সম্পৃক্ত কেউ নন। কিন্তু জামায়াতের তিনি কক্সবাজার শহর শাখার ওয়ার্ড ইউনিটের নেতা বলে প্রমাণিত হয়েছে এবং তার বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের ছবিও রয়েছে। কিন্তু দলটির নেতারা ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে মসজিদের জায়গা নিয়ে বিরোধ থেকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করছে।

নিহত রহিম উদ্দীনের বড় ভাই ভারুয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শফিক রহমান সিকদার অভিযোগ করে বলেন, ‘সামনের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমি প্রার্থী হবো। এটা জামায়াতের মাথাব্যাথা হয়ে গেছে। তাই বিএনপি ও আমাকে কোণঠাসা করতে দীর্ঘদিন নানা প্রপ্রাগান্ডা ও কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে জামায়াতের নেতৃবৃন্দ। এর জের ধরে জমির বিরোধের ঘটনাকে ইস্যু বানিয়ে পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে।’

বিএনপি নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী ও অপরাধীদের জামায়াতে ইসলামীতে পদপদবি দিয়ে পুনর্বাসন করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত জামায়াত নেতা আবদুল্লাহ আল নোমানও ১৫ বছর আওয়ামী লীগের সাথে ছিলো। পটপরিবর্তনের পর রাতারাতি তিনি জামায়াতের ওয়ার্ড ইউনিটের সভাপতি হয়ে গেছেন! সংবাদ সম্মেলনে হামলায় নেতৃত্বদানকারী আবদুল্লাহ আল নোমানসহ অন্য অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের দাবি করা হয়।

ঘটনার পর থেকে বিএনপি জামায়াতকে অভিযুক্ত করে আসছিলো। তারই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার গণমাধ্যমে একটি ভিডিও বিবৃতি পাঠান জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যক্ষ নুর আহমদ আনোয়ারী। এতে বলেন, মসজিদের জায়গা নিয়ে মুসল্লিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় এক ব্যক্তি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। ঘটনার সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর কোনো সম্পর্ক নেই। কিছু লোক ওই ঘটনাকে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জড়িয়ে দলের দুর্নাম সৃষ্টি করছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআরও ৬০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সরল শেখ পরিবারের নাম
পরবর্তী নিবন্ধচকরিয়ায় পুলিশের বাসায় চুরি, দুই শিশুকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ