ভাঙনের কবলে পড়ে অনেকটা শ্রীহীন হয়ে পড়েছে সমুদ্র সৈকত। তাতে কি, ভাঙন ঠেকাতে ফেলা বালুভর্তি জিও ব্যাগের ওপর দাঁড়িয়ে সৈকতের সৌন্দর্য অবলোকনে ব্যস্ত হাজারো পর্যটক। আর সবার চোখের সামনে আবির রঙ ছড়িয়ে সাগরের লোনা জলে ডুব দিল সন্ধ্যার সূর্য।
গতকাল শুক্রবার বিকালে এমন দৃশ্য দেখা গেল বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্টে। যে দৃশ্যে রাঙিয়ে গেল হাজারো পর্যটকের মন। শুধু লাবণী পয়েন্ট নয়, পূজার ছুটি উপলক্ষে সৈকতের সী-গাল, সুগন্ধা, কলাতলীসসহ বিভিন্ন পয়েন্ট ছিল পর্যটকে মুখর।
সমুদ্র সৈকত ছাড়াও মেরিন ড্রাইভ ধরে ইনানী, হিমছড়ি ও দরিয়ানগর সৈকতে ছুটছে পর্যটকরা। এছাড়া রামু বৌদ্ধ বিহার, চকরিয়ার বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক ও নিভৃতে নিসর্গ এবং শৈলদ্বীপ মহেশখালীতেও পর্যটক সমাগম ঘটেছে। তবে পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছেন, পূজার ছুটি আর সাপ্তাহিক বন্ধের দিন শুক্রবার হিসাবে পর্যটক সমাগম আশানুরূপ নয়। পর্যটন ব্যবসায়ী ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিনের বৈরি আবহাওয়ায় সমুদ্র উত্তাল থাকায় পর্যটক কম এসেছেন। এছাড়া পদ্মা সেতু চালুর পর অনেকেই কুয়াকাটা ও সুন্দরবনের দিকে ঝুঁকেছেন। যে কারণে কক্সবাজারে আশানূরূপ পর্যটক আসেনি।
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থেকে সৈকতে ভ্রমণে আসেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অদিতি বড়ুয়া বহ্নি। তিনি বলেন, মামার বাড়িতে বেড়াতে এসেছি, সেই সুযোগে মামা-মামিসহ সবার সঙ্গে সমুদ্র সৈকতে এসেছি। আজ সৈকতে অস্বাভাবিক ভিড় নেই। সবকিছুই সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। সব মিলে দারুন উপভোগ করেছি। কক্সবাজার বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্যসচিব ও পর্যটন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপক রায়হান উদ্দিন বলেন, কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকদের বাড়তি বিনোদনের জন্যে চিন্তা ভাবনা চলছে। কক্সবাজার শহর ও মেরিন ড্রাইভ সড়কে ৫০০ মতো হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও কটেজে ১ লাখ ৭০ হাজার পর্যটক রাতযাপনের সুযোগ রয়েছে। এ সংগঠনের সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, তারকা মান ও মাঝারি হোটেলগুলোতে বেশিরভাগ কক্ষ ভাড়া হয়েছে। ছোটখাটো রিসোর্ট ও কটেজগুলোতে কক্ষ ফাঁকা আছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার চৌধুরী মিজানুজ্জামান বলেন, লাবণী, সুগন্ধা, কলাতলীসহ আশপাশে প্রচুর পর্যটকের সমাগম হয়েছে। তবে আমরা আশা করেছিলাম সমাগম আরও বেশি হবে। তিনি বলেন, পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ সার্বক্ষণিক মাঠে রয়েছে। পাশাপাশি টহলও বাড়ানো হয়েছে।
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা, সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো ও সেবা নিশ্চিত করার জন্য অংশীজনদের সাথে আমরা কয়েক দফায় মিটিং করেছি। এছাড়াও পর্যটক হয়রানি বন্ধে জেলা প্রশাসনের একাধিক টিম বিচে কাজ করছে।