কক্সবাজার রেলপথে হাতির নিরাপদ চলাচল

ছাইফুল হুদা ছিদ্দিকী | বুধবার , ২৩ অক্টোবর, ২০২৪ at ৯:০৮ পূর্বাহ্ণ

সম্প্রতি চট্টগ্রাম কক্সবাজার রেলপথে একটা বাচ্চা হাতি রেলের ধাক্কায় মারাত্মক আহত। আহত হাতির যথাসম্ভব চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। অনেক চেষ্টার পরেও হাতিটিকে প্রকৃতির বুকে দলের সাথে ফেরানো সম্ভব হয়নি। দুঃখজনক হাতিটি আর বেঁচে রইলো না। চুনতি ফরেস্ট অফিসের কয়েকশ গজের মধ্যে, ওভারপাস সংলগ্ন স্থানে রেলের সাথে এই অবুঝ প্রাণীর আহত এবং মৃত্যু বাস্তবে জানান দিলো ওরা উন্মুক্ত চলাচলে বাধাপ্রাপ্ত।

দক্ষিণ চট্টগ্রামের অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত উপজেলা লোহাগাড়া। শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় আধ্যাত্মিকতায় সমৃদ্ধ চুনতি গ্রাম ও ইউনিয়ন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের এক অপূর্ব লীলাভূমি। ছোট ছোট টিলা ঘেরা দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ বনানী, জীব বৈচিত্র্য সমৃদ্ধ চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য যা এশিয়ান হাতির প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে বিশ্বখ্যাত। চুনতি অভয়ারণ্য সামাজিক বনায়ন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১২ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক ইউএন ইকুয়েডর পুরস্কারে ভূষিত হয়। চুনতি ডটকম ম্যারাথন ২০২৩ এর থিম হিসেবে মেডেলে ছিলো এই বিশ্বখ্যাত অভয়ারণ্যের ছবি। একদিকে হাতি আর হরিণের বিচরণ, আর লাঙ্গল গরু নিয়ে কৃষকের চাষাবাদ। এবছরের চুনতি ডট কম ম্যারাথন ২০২৪ আসছে আগামী ১৩ ডিসেম্বর। চুনতিতে অনুষ্ঠিত হলো গত দুটো বছর সফল ও সার্থক মানুষের জন্য নিরাপদ দৌড় প্রতিযোগিতা ম্যারাথন। আর এদিকে শত শত বছর ধরে চলমান চুনতি অভয়ারণ্যের মাঝে বুনো হাতির ম্যারাথন তথা অবাধ বিচরণ এখন নিরাপদ নয়। দোহাজারি থেকে কক্সবাজার এর রেলপথ। যার দশ কিলোমিটার জুড়ে চুনতি অভয়ারণ্য। দক্ষিণ এশিয়ার সর্বপ্রথম রেলপথে হাতির জন্য ওভার পাস নির্মিত হয়েছে এই চুনতি অভয়ারণ্য এলাকায়। তবুও প্রাণ গেলো এক অবুঝ বাচ্চা হাতির। মা হাতিটি হলো সন্তান হারা। চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য রক্ষায় সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে আরো সচেতন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে বাস্তবভিত্তিক কাজ করতে হবে। অভয়ারণ্যের ভেতর বৃক্ষ নিধন, মাটি কাটা ও খাল দখল প্রতিরোধ এবং অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়ে উচ্ছেদ করতে হবে। দুর্ঘটনায় বন্য প্রাণীর মৃত্যু রোধ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট সবাই ও বন গবেষকদের দিয়ে বন্যপ্রাণী চলাচলের রাস্তা চিহ্নিত করে সেসব স্থানে পর্যাপ্ত ওভারপাস বা বনসেতু স্থাপন করুন। পাশাপাশি বনের ভেতর রেলপথ নির্মাণের কারণে বন ও বন্যপ্রাণীর যে ক্ষতি হয়েছে তা নিরসনে কার্যকর যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশব্দ দূষণ বন্ধ হোক
পরবর্তী নিবন্ধবন্দরনগরী চট্টগ্রামে অনন্য আয়োজন