হঠাৎ করে ওয়াসার পানিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে গেছে। সহনীয় পর্যায় থেকে লবণাক্ততার পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় নগরীর অনেক এলাকার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। জোয়ারের সঙ্গে সাগরের লোনা পানি কর্ণফুলী ও হালদা নদীতে প্রবেশ করায় পান করার অযোগ্য হয়ে পড়েছে নগরীর অনেক এলাকায় চট্টগ্রাম ওয়াসার সরবরাহ করা সুপেয় পানি। ফলে নগরবাসীর দুর্ভোগের পাশাপাশি দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির সংকট। তবে এই ব্যাপারে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ কয়েকদিন ধৈর্য ধরতে বলেছে। বৃষ্টি হলেই লবণাক্ততার পরিমাণ সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে বলে জানায় তারা।
এদিকে দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়া এবং কাপ্তাই লেকের পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হালদায় কর্ণফুলীর পানি বেশি প্রবেশ করেছে। এই কারণে ওয়াসার পানিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে গেছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় ওয়াসা কর্তৃপক্ষ হালদার দুটি প্রকল্প (শেখ রাসেল পানি সরবরাহ প্রকল্প এবং মদুনাঘাট পানি শোধনাগার প্রকল্প) থেকে দৈনিক ৪ কোটি থেকে ৬ কোটি লিটার পানি উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানা গেছে। সাগরে জোয়ারের পানি বৃদ্ধির কারণে এবং উজান থেকে মিঠা পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় কর্ণফুলী ও হালদা নদীতে লবণাক্ততা বাড়ছে। জোয়ারের সময় কাপ্তাই হ্রদের পানি ছাড়া হচ্ছে না। এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম আজাদীকে জানান, তিনটি কারণে ওয়াসার পানিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে গেছে। একটি হলো- কাপ্তাই লেকে পানির পানির লেভেল কমে গেছে। কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটের মধ্যে এখন সীমিত পরিসরে একটি ইউনিট চালু রয়েছে। যার ফলে কাপ্তাই লেকের পানি হালদায় আসছে না। দ্বিতীয়ত সম্প্রতি ইয়াসের কারণে সমুদ্রে পানির উচ্চতা বেড়ে গেছে। সমুদ্রে পানির উচ্চতা বেড়ে গেলে সাগরের পানি হালদায় বেশি প্রবেশ করে। সমুদ্রের পানি যত বেশি প্রবেশ করবে স্যালাইনিটির পরিমাণ তত বেড়ে যাবে। তৃতীয়ত- পূর্ণিমার কারণে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে বেশি পানি হালদায় প্রবেশ করেছে। জোয়ারের সময় স্যালাইনিটি বেড়ে যায়। এসময় আমরা পানি নিই না। সহনীয় মাত্রায় চলে এলে তখনই পানি নিই। বৃষ্টি হলেই এই পরিসি’তি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে বলে জানান তিনি। এজন্য নগরবাসীকে একটু ধৈর্য ধরতে বলেছেন আরিফুল ইসলাম। তবে এখন যেই মাত্রায় স্যালাইনিটি পরিমাণ রয়েছে তা সহনীয় বলে জানান প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম। প্রসঙ্গত, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী প্রতি লিটার পানিতে ১৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৬০০ মিলিগ্রাম লবণ থাকলে তা পান করা যায়।