চট্টগ্রাম ওয়াসার ভান্ডালজুড়ি পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় আসছে কর্ণফুলী-পটিয়া ও আনোয়ারা উপজেলা সদরের ১১ হাজার আবাসিক গ্রাহক। এই তিন উপজেলা সদরের ১১ হাজার গ্রাহক প্রথমবারের মতো ওয়াসার সুপেয় পানি পেতে যাচ্ছে। কর্ণফুলী-পটিয়া ও আনোয়ারা উপজেলা সদরের বাসিন্দাদের মধ্যে পানি সরবরাহের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ১২০ কিলোমিটার পাইপ লাইন বসানোর কাজ শেষ করেছে চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। এখন আনোয়ারার কোরিয়ান ইপিজেড এবং পটিয়ায় রিজার্ভার এবং পাম্প হাউজের কাজ চলছে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক।
প্রকল্প পরিচালক সূত্রে জানা গেছে, পটিয়া পৌরসভা সদরসহ আশপাশের ৮ হাজার আবাসিক গ্রাহক, আনোয়ারা উপজেলা সদরের ২ হাজার গ্রাহক এবং কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা এলাকার ১ হাজার গ্রাহকসহ মোট ৭০ হাজার মানুষ ওয়াসার ভান্ডালজুড়ি পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় আসছে। এছাড়াও আনোয়ারার কোরিয়ান ইপিজেড, চায়না ইপিজেড, কাফকো, সিইউএফএলসহ সমস্ত শিল্পকারখানা, পটিয়ার ইন্দ্রিপোল লবণ মিলে সংযোগ দেয়া হবে। এই প্রকল্প থেকে দৈনিক ৬ কোটি লিটার পানি উৎপাদন হবে। বোয়ালখালীর ভান্ডালজুড়ি ট্রিটমেন্ট প্লান্ট থেকে সরাসরি সাড়ে ৪ কোটি লিটার পানি চলে যাবে আনোয়ারাস্থ কোরিয়ান ইপিজেডের রিজার্ভারে। দেড় কোটি লিটার পানি চলে যাবে পটিয়ার রিজার্ভারে। এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম ওয়াসার ভান্ডালজুড়ি পানি সরবরাহ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মাহবুবুব উল আলম আজাদীকে জানান, প্রকল্পের কাজ পুরোদমে চলছে। এখন পর্যন্ত প্রকল্পের ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ভান্ডালজুড়ি পানি সরবরাহ প্রকল্প থেকে আগামী বছরের শেষের দিকে পানি পাওয়া যাবে। এ লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। পুরো প্রকল্পের ১৩০ কিলোমিটার পাইপ লাইনের মধ্যে ১২০ কিলোমিটার পাইপ লাইনের কাজ শেষ হয়েছে। ভান্ডালজুড়ি প্রকল্প এলাকায় ট্রিটমেন্ট প্লান্টের কাজ চলছে। ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বোয়ালখালীর ভান্ডালজুড়ি প্রকল্প এলাকা থেকে পটিয়া পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার ডিস্ট্রিবিউশন লাইন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে এবং পটিয়া পৌরসভাসহ আশপাশ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার সার্ভিস লাইনের কাজও শেষ হয়েছে। এদিকে পটিয়া বাইপাস থেকে এস আলম শিল্প কারখানার পাশদিয়ে কর্ণফুলী সিডিএ আবাসিক হয়ে আনোয়ারা কোরিয়ান ইপিজেড পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার পাইপ লাইনের কাজও শেষ হয়েছে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মাহবুবুব উল আলম। মইজ্জ্যারটেক থেকে ওয়াই জংশন পর্যন্ত, অপরদিকে কালারপোল থেকে বোয়ালখালীর মিলিটারি পোল পর্যন্ত মোট ১৫ কিলোমিটার পাইপ লাইনের কাজ বাকি আছে বলেও জানান তিনি।
সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী জানান, কর্ণফুলী নদীর তীরঘেঁষে রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালী উপজেলার মধ্যবর্তী জৈষ্ঠপুরার ভান্ডালজুড়ি এলাকায় নদীর তীরে ও দুই পাহাড়ের পাদদেশে ৪১ দশমিক ২৬ একর জায়গায় চলছে ওয়াসার ভান্ডালজুড়ি মেগা প্রকল্পের কাজ। প্রকল্পের অধীনে পটিয়া বাইপাস এলাকায় পাঁচ একর জায়গায় ও আনোয়ারা দৌলতপুর মৌজায় ২ দশমিক ৯৪ একর জায়গায় পৃথক দুটো জলাধার নির্মাণের কাজও একই সাথে এগিয়ে চলছে। প্রকল্প ব্যয় এক হাজার ১৯৫ কোটি টাকাসহ সর্বসাকুল্যে (ভূমি অধিগ্রহণসহ) ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা।