ওসি প্রদীপসহ ১৫ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন

সিনহা হত্যা মামলার বিচার শুরু

টেকনাফ প্রতিনিধি | সোমবার , ২৮ জুন, ২০২১ at ৬:২৭ পূর্বাহ্ণ

টেকনাফে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈলের আদালতে গতকাল রোববার ওসি প্রদীপসহ ১৫ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আলোচিত এ মামলার বিচার শুরু হয়েছে। আগামী ২৬, ২৭ ও ২৮ জুলাই এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে। আদালতে শুনানিকালে চার্জশিটভুক্ত ১৫ জন আসামি আদালতের কাটগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। চাঞ্চল্যকর এ মামলার ধার্যদিন উপলক্ষে সকল আসামিকে আদালতে আনায় এদিন সকাল থেকেই আদালত অঙ্গনে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়। এসটি ৪৯৩/২১ মামলায় আসামি পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, অ্যাডভোকেট দিলীপ দাশ, মহি উদ্দিন খান, মোবারক হোসেন, অ্যাডভোকেট চন্দন দাশ।
রাষ্ট্র পক্ষে ছিলেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম ও বাদী পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মোস্তফা, সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর।
এজাহারে ৯ জন আসামি থাকলেও তদন্ত কর্মকর্তা ১৫ জনকে আসামি ও ৮২ জনকে সাক্ষী করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ১২ জন আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আদালতে। শুধুমাত্র প্রদীপ দাশ, রুবেল শর্মা, সাগর দেব স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি।
দীর্ঘ শুনানি শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২/২০১/১০৯/১১৪/১২০খ/৩৪ ধারায় অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
কঙবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম বলেন, আগের নির্ধারিত সময় অনুযায়ী শুনানি শেষে চার্জ গঠন করা হয়েছে।
এ মামলায় জামিন আবেদন করেছেন টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত ও কনস্টেবল সাগর দেব।
এর আগে ৯ জুন নন্দ দুলাল ও ১০ জুন ওসি প্রদীপের আইনজীবীরা জামিন আবেদন করেন। গত ২৪ জুন মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি কনস্টেবল সাগর দেব আদালতে আত্মসমর্পণের পর বর্তমানে ১৫ আসামিই কারাগারে রয়েছেন।
মামলায় কারাগারে থাকা ১৫ আসামি হলো : বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, তার দেহরক্ষী বলে পরিচিত কনস্টেবল রুবেল শর্মা, টেকনাফ থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাগর দেব, এপিবিএনের এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ, পুলিশের দায়ের করা মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নিজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।
উল্লেখ্য, আলোচিত মেজর সিনহা হত্যা মামলায় ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খায়রুল ইসলাম। ওই বছরের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে গাড়ি তল্লাশিকে কেন্দ্র করে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
এ ঘটনায় গত ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ এসআই লিয়াকত আলীকে প্রধান আসামি করে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ নয়জন পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়। আদালত র‌্যাবকে মামলাটি তদন্ত করার আদেশ দেন।
এরপর গত ৬ আগস্ট প্রধান আসামি এসআই লিয়াকত আলী ও টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ ৭ পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
পরবর্তীতে সিনহা হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশের দায়ের করা মামলার তিনজন সাক্ষী ও শামলাপুর চেকপোস্টের দায়িত্বরত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এ ছাড়া একই অভিযোগে পরে গ্রেপ্তার করা হয় টেকনাফ থানার সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মাকেও।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঠাঁই নেই অবস্থা, শয্যা ৩২ থেকে ৫০ হচ্ছে
পরবর্তী নিবন্ধকাটেনি ৮৫ হাজার ড্রাইভিং লাইসেন্সের অনিশ্চয়তা