বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট (বাস্তুই), চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের পক্ষে স্থপতি আশিক ইমরান বলেছেন, চিকিৎসা মানুষের সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার এবং একটি হাসপাতাল স্থাপন যে কোনো শহরের জন্য জরুরি। চট্টগ্রামের মতো দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ও বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে একটি বৃহত্তম হাসপাতাল অবশ্যই কাঙ্ক্ষিত প্রকল্প। এতে করে চট্টগ্রামের সার্বিক স্বাস্থ্যসেবা খাত আরো একধাপ এগিয়ে যেতে পারে। এই স্বাস্থ্যসেবা শুধুমাত্র শহরের মানুষের নয় আশেপাশের বিভিন্ন অঞ্চলকেও সেবা প্রদান করে থাকে।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, হাসপাতাল স্থাপনের ব্যাপারে কারো কোনো আপত্তি থাকার কথা নয় এবং নেইও। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো এর স্থান নির্ধারণ। হাসপাতাল প্রকল্পের চাহিদা মোতাবেক জমি ও ভবিষ্যৎ বর্ধিতকরণের জন্য জমি যাতে একত্রে পাওয়া যায় এবং তার সাথে সাথে অন্যান্য সাপোর্টিং সুবিধাও পাওয়া যায় তা বিবেচনায় আনা। কিন্তু চট্টগ্রামের ‘ফুসফুস’ খ্যাত ছায়া সুনিবিড় ঐতিহাসিক সিআরবি এলাকায় হাসপাতাল গড়ে তোলা একেবারে অযৌক্তিক। অন্যদিকে চট্টগ্রাম মহানগরী এলাকার স্ট্র্যাকচার প্ল্যান ও ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানে সিআরবি-কে ‘কালচার অ্যান্ড হেরিটেজ’ হিসেবে সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে। এখানে হাসপাতাল তৈরি হলে এই এলাকায় গড়ে উঠবে নতুন দালান, অবকাঠামো, দোকানপাট, ফার্মেসি, পার্কিং ও আবাসিক ভবন, যার ফলে কাটা পড়বে শতবর্ষ প্রাচীন বৃক্ষ, পরিবেশ হবে দূষিত এবং আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হবে আমাদের প্রাণপ্রিয় এলাকা এই সিআরবি।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন সিআরবি একটি ঐতিহাসিক এলাকা যা ছায়া সুনিবিড় অজস্র শতবর্ষী বৃক্ষ আচ্ছাদিত জায়গা। চট্টগ্রাম শহরের প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে চলেছে এই সিআরবি। ইতিমধ্যেই চট্টগ্রাম নগরীর ফুসফুস হিসেবে খ্যাত সিআরবি জনসাধারণের কাঙ্ক্ষিত স্থানে রূপান্তরিত হয়েছে। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত মানুষ এই স্থানকে অত্যন্ত নিবিড়ভাবে গ্রহণ করেছে।
বিগত কয়েক বছরে চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য কাঙ্ক্ষিত স্থান হিসেবেও আবির্ভূত হয় সিআরবি। দেশের অন্যান্য প্রান্ত থেকে কোনো অতিথি চট্টগ্রাম এলে সিআরবি এলাকা না ঘুরে যান না, যার ফলে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবেও সিআরবি’র একটা গুরুত্ব আছে। এমতাবস্থায়, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট (বাস্তুই), চট্টগ্রাম চ্যাপ্টার অবিলম্বে এই হঠকারী ও আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বাতিল করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবরে অনুরোধ জানাচ্ছে।