ঐতিহাসিক চট্টগ্রাম গণহত্যা দিবস আজ

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২৪ জানুয়ারি, ২০২২ at ৭:৪৩ পূর্বাহ্ণ

নব্বইয়ে স্বৈরাচার পতনের মাত্র দুই বছর আগে বীর চট্টলার মাটি রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল। সেদিনের বীর শহীদদের অপরাধ ছিল স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠা গণতন্ত্র কামী জনতার সমাবেশে তারা অংশ নিয়েছিল। স্বৈরাচারী এরশাদ ভেবেছিল জনতার রক্তে থমকে যাবে সকল প্রতিরোধ, ক্ষমতার সিংহাসন হবে চিরস্থায়ী। কিন্ত মাত্র দুই বছরের মাথায় তাকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করেছিল দামাল জনতা। শেষ পর্যন্ত বিজয় হয় গণতন্ত্রের। আজ ২৪ জানুয়ারি ঐতিহাসিক ‘চট্টগ্রাম গণহত্যা দিবস’।

চট্টগ্রামের কোর্টহিল ও লালদীঘির ময়দানে নারকীয় হত্যাকাণ্ডের লোমহর্ষক ঘটনা সম্বলিত ২৪ জানুয়ারি তাই যতবার আসে ততবার জাতির বিবেকবান হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। সেদিনের ভয়াবহতা ও মানুষের আহাজারি কখনো স্মৃতি থেকে মোছার নয়।যারা সেদিন বুকের তাজা রক্ত ঢেলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেছিলেন দীর্ঘ ৩৩ বছর পর তাদের বিচারের রায় ঘোষিত হয়েছে। ৫ অভিযুক্তের মৃত্যুদণ্ডের সাজা হয়েছে। আদালত রায়ে এটাকে ‘পরিকল্পিত গণহত্যা’ বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন।

কী ঘটেছিল সেই দিন? ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ১৫ দলীয় জোট জনসভা আহ্বান করে। লালদীঘি ময়দানে জনসভা নিয়ে লুকোচুরি খেলছিল প্রশাসন। প্রথমে অনুমতি দিয়ে আবার তা তুলে নিয়ে বল প্রয়োগে সমাবেশ বন্ধের তোড়জোর শুরু হয়। কিন্তু শেখ হাসিনা যেকোনো মূল্যে সমাবেশ আয়োজনের নির্দেশ দেন চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দকে। শেখ হাসিনা ১৫ দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে বিমানে চট্টগ্রাম আসেন। তৎকালীন সিএমপি কমিশনার মির্জা রকিবুল হুদার নির্দেশে শেখ হাসিনার ট্রাক কোতোয়ালী মোড়ে পৌঁছার আগে শুরু হয় বেপরোয়া লাঠিচার্জ, গুলিবর্ষণ। নেত্রীর ট্রাক পুরনো বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে আসার সাথে সাথেই তাকে টার্গেট করে ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি বর্ষণ শুরু হয়। ট্রাকে অবস্থানরত নেতা কর্মীরা মানব ঢাল তৈরি করে নেত্রীকে রক্ষা করেন।

ততক্ষণে নগরীর বিশাল এলাকা জুড়ে নেতা কর্মীদের উপর টানা গুলি চালাতে থাকে রকিবুলের বাহিনী। অসংখ্য নেতাকর্মী লালদীঘি ঘিরে নিউমার্কেট, আমতল, রাইফেল ক্লাব, শহীদ মিনার, আন্দরকিল্লা, সিরাজউদ্দৌলা রোড, কোতোয়ালী মোড় জুড়ে শহীদ হন। আহতের সংখ্যা অগণিত। প্রাথমিক হিসেবে নিহতের সংখ্যা ২৪, আহত ২০০।

আজ সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে চট্টগ্রাম কোর্ট বিল্ডিংস্থ পুরাতন বাংলাদেশ ব্যাংক সম্মুখ চত্বরে ১৯৮৮ সালে চট্টগ্রামে গণহত্যায় নিহত শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শহীদ ব্যাধিতে পুষ্পমাল্য অর্পন করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএকসঙ্গে চার সন্তান প্রসব, বাঁচল না কেউ
পরবর্তী নিবন্ধচবিতে দেয়াল লিখনে বাধার অভিযোগ