আসছে গরমে বাসাবাড়ি কিংবা অফিস–আদালতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের (এসি) তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে না নামানোর অনুরোধ জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
তিনি বলেছেন, আমাদের অনুরোধ উপেক্ষা করলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হতে পারে কিংবা আরও অন্যান্য আইনি যেসব ব্যবস্থা আছে, সেসব আমরা গ্রহণ করব। খবর বিডিনিউজের।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে গতকাল সোমবার জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন ফাওজুল কবির খান। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, জেলা প্রশাসকদের সামনে আমরা সম্পদের সীমাবদ্ধতা তুলে ধরেছি। আমরা অন্তর্বর্তী সরকার একটা খাদের মধ্যে অর্থনীতি পেয়েছি। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ২০২১ সালে ছিল ৪২ বিলিয়ন ডলার, সেখান থেকে ২০ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে; অর্থপাচার হয়েছে। এসব কারণে জ্বালানির মূল্য পরিশোধে আমাদের যেসব সমস্যা হচ্ছে, সেসব তুলে ধরেছি।
তিনি বলেন, শীতে বিদ্যুতের চাহিদা থাকে প্রায় ৯ হাজার মেগাওয়াট। গরমকালে সেটা বেড়ে ১৭ থেকে ১৮ হাজার মেগাওয়াট হয়ে যায়। এই পার্থক্য মূলত দুটি কারণে হয়। একটি হলো সেচ। এখন এসি ঢাকা শহর বা জেলা শহরের নয়, সব জায়গায় পৌঁছে গেছে। আমাদের এসির লোড পাঁচ থেকে ছয় হাজার মেগাওয়াট। এটা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আপনি যদি ২৫ বা তার ওপরে এসি চালান, তাহলে আমরা দুই থেকে তিন হাজার মেগাওয়াট সাশ্রয় করতে পারব।
ফাওজুল কবির বলেন, আমি উপদেষ্টা পরিষদের সবার কাছে চিঠি দিচ্ছি। ধর্ম উপদেষ্টাকে চিঠি দিয়েছি যেন তিনি ইমামদের জানান। আমি বাণিজ্য উপদেষ্টার মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের অনুরোধ জানাব; বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে অনুরোধ জানাব, যেন তারা রমজান ও গ্রীস্মে এসির বিষয়টা দেখেন।
উপদেষ্টা বলেন, এসি ব্যবহারে কোনো বিধিনিষেধ নেই। কিন্তু এটা ২৫ বা তার বেশি ডিগ্রিতে রাখতে হবে। সচিবালয়ের জন্যও একই। কেবিনেট সেক্রেটারিকে আমি আধা সরকারি চিঠি দিচ্ছি যেন সচিবালয়ে এটা করা হয়। কারণ এনফোর্সমেন্টটা শুরু হতে হবে আমাদের ঘর থেকেই। এসির তাপমাত্রায় নজরদারির কৌশল জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও আমাদের যেগুলো ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি আছে, প্রত্যেকটার একাধিক মনিটরিং টিম থাকবে; তারা দেখবে। আমরা বুঝতে পারব কে কীভাবে ব্যবহার করছে। যেসব লাইনে আমরা দেখব বিদ্যুতের ব্যবহার অতিরিক্ত বেড়ে গেছে, সেগুলোয় আমরা লোডশেডিং করব। তিনি বলেন, আমরা যদি বাধ্য হই কোন কারণে লোডশেডিং দিতে, তাহলে আমরা আগেই জানিয়ে দেব। লোডশেডিংয়ের ক্ষেত্রে আমরা শহর এবং গ্রামের মধ্যে পার্থক্য করব না। কেপিআইভুক্ত প্রতিষ্ঠান কিংবা হাসপাতালগুলো বাদ দিয়ে অন্য সব জায়গায় আমরা সমানভাবে লোডশেডিং করব।