২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল গত ১০ জুলাই প্রকাশিত হলো, এবার পাসের হার বিগত বছরগুলোর তুলনায় অনেকটাই কম– অনেকের মতে যা ‘ফলাফল বিপর্যয়’ কৃতিত্বের সাথে যারা কৃতকার্য হয়েছে তাদের মধ্যে জিপিএ–৫ প্রাপ্ত ছাড়া বাকি শিক্ষার্থীরাও কেউই প্রাপ্ত ফলাফল নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করতে পারেনি।
বিভিন্ন জায়গায় ফলাফল বিভ্রাটের মতো বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনা ছাড়াও মাত্র ১ নম্বরের জন্য নানা বিষয়ে অকৃতকার্যতা ও গ্রেড অবনমন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে এবারের ফলাফল নিয়ে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে ষ যারা অকৃতকার্য হয়েছে বা কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন করতে পারেনি সেসকল শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশের শিক্ষাজীবনের ইতি হয়তো এখানেই ঘটবে, যা হয়ত কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জনে সমর্থ হলে হতো না।
এবারের ফলাফল প্রকাশে শতভাগ স্বচ্ছতা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতির কথা বলা হয়েছিল এবং সে অনুযায়ী কোনোপ্রকার বাড়তি মার্ক প্রদানের সুযোগ বা এর অপব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পূর্বেই ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। অনেকে মনে করেন যার ফলশ্রুতিতে ফলাফলের এই বিপর্যয় কিন্তু বাস্তব কথা হলো এর কার্যকারিতা নিয়ে কিছু প্রশ্ন থাকতে পারে। তবে মূল্যায়নের এই কঠোর নিয়ম অবশ্যই ভালো ও যুগোপযোগী একটি উদ্যোগ। কিন্তু সেটার প্রয়োগ এই বৎসরের জন্য কিছুটা শিথিল হলেই ভালো হতো বলে অভিভাবক মহলের মতামত।
তাদের একাংশ এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানান কিন্তু প্রয়োগের ব্যাপারে অন্তত ২০২৫ সালকে এর আওতার বাইরে রাখার ব্যাপারে মত প্রকাশ করেন। কারণ গত বছরে জুলাই আন্দোলনসহ রাজনৈতিক অস্থিরতা ও এক ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে যেতে হয়েছে। যার মধ্যে এই শিক্ষার্থীদেরও ব্যাপক মাত্রায় সম্পৃক্ততা ছিল। এর ফলশ্রুতিতে পড়াশোনায় বেশ খানিকটা ব্যাঘাত এবছরের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের পোহাতে হয়েছে ও তাই ফল প্রকাশের এই ওঠার মানদণ্ড ২০২৭ সাল থেকে শুরু হলেই আরো বেশি গ্রহণযোগ্য ও ফলপ্রসু হত।
শিক্ষার্থীরা অনেকেই তাদের এই ফলাফল রিভিউয়ের জন্য বোর্ড বরাবর আবেদন করছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অন্তত এবারের ফলাফল নিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। অন্ততপক্ষে ১ নম্বরের জন্য যাদের অকৃতকার্যতা বা গ্রেড অবনমন হয়েছে তাদের উক্ত নম্বর প্রদান সাপেক্ষে ফলাফল পুনর্বিবেচনা এখন সময়ের দাবি।
ফলাফল প্রকাশের এই কঠোর মানদণ্ডের পক্ষে সকলেরই অবস্থান রয়েছে কিন্তু কার্যকারিতার ক্ষেত্রে আরো ১–২ বছর সময় নেয়া উচিত– অন্ততপক্ষে এই বছরটিকে এই আওতার বাহিরে রক্ষা করা উচিত আশা করা যায়, শিক্ষামন্ত্রণালয় সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ফলাফল পুনর্বিবেচনার ব্যাপারে আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।