জাতীয় দলে অনুশীলনে ফিরতে জাহানারাকে করতে হয়েছে লম্বা অপেক্ষা। একসময় বাংলাদেশ নারী দলের নিয়মিত মুখ হয়ে পড়েছিলেন একরকম ব্রাত্য। গত বছরের মে মাসে জাতীয় দলের হয়ে সবশেষ খেলেছিলেন জাহানারা। এরপর এক বছরের বেশি সময় পর আবার ফিরেছেন। এবারের এশিয়া কাপের স্কোয়াডে রাখা হয়েছে তাকে। বিকেএসপিতে ওই টুর্নামেন্ট সামনে রেখে দলের অনুশীলনের আগে জাহানারা জানালেন নিজের ফিরে আসার গল্প। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ এক বছর পর জাতীয় দলে আবার ফিরেছি। এই দীর্ঘ এক বছরের মধ্যে আমি নয় মাস মাস্কো একাডেমিতে অনুশীলন করেছি। সালাউদ্দিন স্যারসহ ওখানে যারা কোচিং স্টাফ ছিলেন তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন আমার সঙ্গে। এবং চেষ্টা করেছেন আমি যেন ভালো পারফরম্যান্স করতে পারি। প্রতিটা সময় আমি চেষ্টা করেছি নিজেকে প্রস্তুত রাখার জন্য। নারী দলের যখনই প্রয়োজন হবে, আমি যেন প্রস্তুত অবস্থায় থাকতে পারি। শেষ প্রিমিয়ার লিগে একটি দারুণ পারফর্ম হয়েছে। দীর্ঘ নয় মাসের পরিশ্রম বলতে পারেন। সবকিছু মিলিয়ে এটা খুব ভালো অনুভূতি যে আমি আবারও বাংলাদেশ দলকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারবো।’
এবারের প্রিমিয়ার লিগে আবাহনী লিমিটেডের অধিনায়ক ছিলেন জাহানারা। ৯ ম্যাচে ২৫ উইকেট নেওয়ার পর জাতীয় দলে জায়গা পান তিনি। বয়স প্রায় ৩১ হয়ে গেছে। এই বয়সেও তার ফিটনেসও বেশ ভালো। এর পেছনের রহস্য
জাহানারা জানালেন, ‘আমি সবসময়ই ফিটনেস–ফ্রিক। ৯ বছর বয়স থেকেই খেলাধুলা করি, সেটা হ্যান্ডবল, ভলিবল সবাই জানেন এসব আন্তস্কুল, আন্তজেলা, আন্তবিভাগ, তখন থেকেই আসলে শুরু। ২০০৭ সালে যখন ক্রিকেট শুরু করি, তখন থেকে চেষ্টা করেছি যেন ফিটনেস ভালো পর্যায়ে থাকে।’ ‘আমি যেহেতু একজন পেস বোলার ২০০৭ সাল থেকে চেষ্টা করেছি একই গতি ধরে রাখতে। বরং গতি বেড়েছে আমার, কমেনি। আমার ফিটেনস ও শক্তি আমাকে সহায়তা করেছে। আপনারা জানেন যে, জিম ও রানিং করতে আমি খুবই পছন্দ করি। বিশেষ করে, এই বয়সে এসে, সাড়ে ১৫ বছর জাতীয় দলকে সার্ভিস দিয়েছি, সাড়ে ১৭ বছর আমার ক্রিকেট ক্যারিয়ার। সবকিছু মিলিয়ে এখনও যে পর্যায়ের ‘ওয়েট ট্রেনিং’ করি বা অনুশীলন করি, ওই ‘পাওয়ার’ আমাকে সহায়তা করে গতি ও ফিটনেস ধরে রাখতে।’ ২০১৮ সালের এশিয়া কাপে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। ওই টুর্নামেন্টের অন্যতম সদস্য জাহানারা। এবার আরও একটি এশিয়া কাপে যাচ্ছেন।
‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের সঙ্গী শ্রীলংকা, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের মেয়েরা। এই গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালে খেলার লক্ষ্যের কথা জানিয়েছেন জাহানারা। তিনি বলেন, ‘এশিয়া কাপে দলের প্রথম লক্ষ্য আমাদের অবশ্যই সেমি–ফাইনাল খুব ভালোভাবে খেলা। এখানে একটা সমীকরণ আছে আমাদের, যেটা আমি মনে করি, আমরা যদি গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমি–ফাইনাল খেলতে পারি, তাহলে পাকিস্তানকে হয়তো পাব। সেদিক থেকে আমাদের জন্য একটু সহজ হতে পারে। আমরা সেটিই চেষ্টা করব।’ ‘কাজেই প্রথম ম্যাচই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে। ইতিবাচক ফল যদি আমরা বাংলাদেশ দলের জন্য আনতে পারি, এটা ভালো হবে এবং অবশ্যই আমরা চেষ্টা আমাদের সুখস্মৃতি ফিরিয়ে আনার জন্য, যেটা আমরা ২০১৮ সালে করেছিলাম।’