এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বাড়িয়েছে সরকার; তবে শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। এই ভাতা ১ হাজার টাকা থেকে ১৫০০ টাকা করে আদেশ জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। তবে শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করে মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া এবং চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা করার দাবিতে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালনের ডাক দিয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
অর্থ বিভাগের প্রবিধি অনুবিভাগের উপসচিব মোছা. শরীফুন্নেসা গতকাল রোববার বিকালে বলেন, ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া ভাতা ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করে আদেশ জারি করে তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগে পাঠানো হয়েছে।’ গত ৩০ সেপ্টেম্বর তারিখে জারি করা ওই আদেশে অর্থ বিভাগ বলছে, প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের আদেশ জারির মাধ্যমে এ ভাতা কার্যকর হবে। এ ভাতা শিক্ষকদের পরিশোধে যাবতীয় আর্থিক বিধি–বিধান অনুসরণ করতে হবে জানিয়ে আদেশে আরও বলা হয়েছে, ভাতা সংক্রান্ত ব্যয়ে ভবিষ্যতে কোনো অনিয়ম দেখা দিলে বিল পরিশোধকারী কর্তৃপক্ষ তার জন্য দায়ী থাকবেন। গত ৭ অগাস্ট শিক্ষা উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাঠানো প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া ভাতা বাড়িয়ে আদেশটি জারি করেছে অর্থ বিভাগ। এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীরা জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন পান। তারা মূল বেতনের সঙ্গে মাসে ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। আর ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া ভাতা পেতেন, যা বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হল।
এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আগে বছরে ২৫ শতাংশ হারে বছরে দুইটি উৎসব ভাতা পেলেও গত মে মাসে বাড়ানোর পর তারা ও এমপিওভুক্ত কর্মচারীরা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে উৎসব ভাতা পাচ্ছেন। এর বাইরে এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীরা বছরে একবার মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বৈশাখী ভাতা পান। শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবিতে গত ১৩ অগাস্ট জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। পরে শিক্ষকদের ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দল সচিবালয়ে গিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরারের সঙ্গে দেখা করে, এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের শতকরা হারে মূল বেতনের কমপক্ষে ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন। ওই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেওয়া এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী গতকাল বলেন, ‘৫০০ টাকা বাড়ি ভাড়া ভাতা বৃদ্ধি আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীরা কমপক্ষে মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া চান। এর সঙ্গে আমাদের চিকিৎসাভাতা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা করা এবং এমপিওভুক্ত কর্মচারীদের উৎসব ভাতা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ করার দাবি জানাচ্ছি। আমাদের দাবি মানা হয়নি, তাই আমরা পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ১২ অক্টোবর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এ শিক্ষক নেতা আরও বলেন, শিক্ষা উপদেষ্টা গত ১৩ অগাস্ট আমাদের বলেছেন, তারা বাড়িভাড়া মাসিক ১ হাজার টাকা থেকে ২ হাজার টাকা করা এবং চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা করতে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। কিন্তু আমরা তা মানিনি। পরে শিক্ষা উপদেষ্টা মূল বেতনের শতকরা হারে বাড়ি ভাড়া দিলে কত টাকা খরচ হবে সে হিসাব শিক্ষকদের দিতে বলেছিলেন, আমরা ওই হিসাব তাদের কাছে দিয়ে এসেছিলাম।












