ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে হাটহাজারীতে হেফাজতে ইসলাম ও পুলিশের সংঘর্ষে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। এতে চট্টগ্রামের তৎকালিন পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক, হাটহাজারী সার্কেলের এএসপি শাহাদাত হোসেন, ডিএসবির এএসপি আব্দুল্লাহ আল মাসুম, হাটহাজারী থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম, ওসি তদন্ত রাজিব শর্মা, ওসি ইন্টেলিজেন্স আমির হোসাইন, পরিদর্শক তৌহিদুল করিম, ডিবির ওসি কেশব চক্রবর্তী, এসআই মুকিব হাসান, মো. কবির হোসেন, মো. জসিম উদ্দিন দেওয়ান, পিবিআই কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ সালামসহ ৪১ জনকে আসামি করা হয়েছে। ১০০ থেকে আরো দেড়শজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। গতকাল চট্টগ্রামের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার ইকবালের আদালতে ভিকটিম শিক্ষার্থীর পিতা কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন মাদারিপুর সদরের হবিগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী মিজানুল করিম আজাদীকে বলেন, আদালত মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণের জন্য হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আরজিতে বলা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের জেরে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ ঢাকার বায়তুল মোকাররমে মিছিল করে মুসল্লিরা। এতে হামলা করা হলে এর প্রতিবাদে হাটহাজারীতে ছাত্র–জনতা প্রতিবাদ মিছিল বের করে। ঢাকার ন্যায় সেখানেও হামলা করে তৎকালীন সরকারের দলীয় ক্যাডার ও পুলিশ বাহিনী। আরজিতে বাদী কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, তার ছেলে হাফেজ মাওলানা কাজী মিরাজুল ইসলাম দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসায় দাওরায়ে হাদিস বিভাগের ছাত্র ছিলেন। ঘটনার দিন সে জুমার নামাজ শেষে মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে চা খাওয়ার জন্য বের হয়েছিল। দুপুর দুটার দিকে তাকে আটকিয়ে মারধর করা হয় এবং পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে পুলিশ ভিকটিমকে বৈদ্যুতিক পিলারের সাথে দাঁড় করিয়ে গুলি করে। এতে ভিকটিম মাটিতে ঢলে পড়লে সেখানেও কয়েকটি গুলি করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য লাথি পর্যন্ত মারা হয়। একপর্যায়ে ভিকিটমকে রাস্তায় ফেলে চলে যায় আসামিরা। মামলার আরজিতে আরো বলা হয়, ঘটনার দুইদিন পর কোন রকম ময়নাতদন্ত ছাড়াই ভিকটিমকে হস্তান্তর করা হয় এবং তাড়াতাড়ি দাফন করার জন্য বলেন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোন মামলা করার চেষ্টা করা হলে খুন করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়।