চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনের একমাত্র সম্বল এম এ আজিজ স্টেডিয়াম এরই মধ্যে ২৫ বছরের জন্য বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে বরাদ্দ দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। ১২ শর্তে দেওয়া এই বরাদ্দের ফলে জেলা ক্রীড়া সংস্থার বলতে গেলে কোন কতৃত্বই থাকবে না এই স্টেডিয়ামে। ফলে খেলাধুলার আয়োজন করতে হলে জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে নতুন মাঠ খুঁজতে হবে। এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের এই বরাদ্দের ঘোষণার পর থেকে চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গণে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করেছে চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গণ সংশ্লিষ্ট মানুষসহ অনেকেই। গতকাল যেমন স্টেডিয়াম রক্ষা কমিটির ব্যানারে একটি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
যেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে সিটি মেয়র বলেন, আওয়ামী সন্ত্রাসী এবং ফ্যাসিবাদের পর এখন আরেকটি গোষ্ঠী চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে (সিজেকেএস) দখল করতে চাচ্ছে। আওয়ামী সন্ত্রাসী, ফ্যাসিবাদীরা এতোদিন ধরে নেতৃত্ব দিয়েছে। খেলোয়াড়দের তারা কুক্ষিগত করেছে। আবারও আমরা দেখছি, এ ধরনের একটি গোষ্ঠী এসব করতে চাচ্ছে। এটা কখনো চট্টগ্রামের আপামর জনতা, জনসাধারণ, ক্রীড়ামোদি, ক্রীড়া সংগঠকরা মেনে নিবে না। এই স্টেডিয়ামটি সব সময় চট্টগ্রামের খেলোয়াড় সৃষ্টির জন্য একটা ফ্যাক্টরি হিসেবে কাজ করেছে। এই মাঠ থেকে বাংলাদেশের বরেণ্য ক্রিকেটার মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, আকরাম খান এবং তামিম ইকবালদের মতো বাংলাদেশের প্রাক্তন অধিনায়কদের জন্ম হয়েছে। ফুটবলে আশিষ ভদ্র, টিপু, এফআই কামাল, মামুন, নাজিমসহ অনেকেই উঠে এসেছে। যে স্টেডিয়ামটি সিজিকেএসের ৩০ টির মতো ইভেন্ট পরিচালনা করে অথচ কোনো কারণ ছাড়াই আমরা দেখতে পেয়েছি একদিন সকালে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে ২৫ বছরের জন্য ইজারা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা বলতে চাই, চট্টগ্রামের বৃহত্তর স্বার্থে এ মাঠটি শুধুমাত্র চট্টগ্রামের খেলোয়াড়দের জন্যই ব্যবহৃত হবে। চট্টগ্রামের একজন শুধু মেয়র হিসেবে নয়, একজন নাগরিক হিসেবে এবং এ সিজেকেএসের আট বছর আমি কাউন্সিলর ছিলাম। এই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে কখনো আমরা এ ধরনের যে সিদ্ধান্ত আজকে তারা নিয়েছে, এই সিদ্ধান্তকে আমরা কখনো স্বাগত জানাতে পারি না। কারণ এটা চট্টগ্রামের বিরুদ্ধে একটা বৈষম্যের সিদ্ধান্ত। তাই মেয়র হিসেবে আমি বলতে চাই, অনতিবিলম্বে এ ধরনের হটকারী সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে হবে। চট্টগ্রামের সমস্ত খেলোয়াড়রা যারা বিভিন্ন ক্লাবে খেলে, হয়তোবা বছরে তারা খেলে কিছু টাকা পায়, সেই টাকা দিয়ে তাদের সংসার চলে। অনেক খেলোয়াড় আছে বিভিন্ন লীগে খেলে তাদের পরিবার চালায়।
মানববন্ধনে সিজিকেএসে এডহক কমিটির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা দেখেছি একটি এডহক কমিটি হয়েছে সিজিকেএস এর। সেখানে কোন খেলোয়াড়, কোচ কিংবা সিজেকেএসের কোনো কর্মকর্তার নাম আমরা দেখছি না। এটা আমাদের অবাক করেছে। কারণ এতগুলো ইভেন্ট পরিচালনা করার তাদের আদৌ যোগ্যতা কিংবা দক্ষতা আছে কিনা আমাদের সন্দেহ রয়েছে। সেই এরকম কমিটি অনতিবিলম্বে বাতিল করার জন্য আমি বলছি। এখানে যারা কোচ, খেলোয়াড়, প্রাক্তন খেলোয়াড়, সিজেকেএসের কর্মকর্তা এবং সাংবাদিক আছে, তারা এখানে নেতৃত্ব দিবে এবং এটাই হয়ে এসেছে।
ক্রীড়া সংগঠক ও সাবেক কাউন্সিলর মাহবুব আলমের সভাপতিত্বে ও মো. কামরুল ইসলামের পরিচালনায় এতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিয়াজ মো. খান, ইসমাইল বালি, ক্রীড়া সংগঠক ইস্কান্দার মির্জা, মশিউল আলম স্বপন, সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, সিএমইউজের সভাপতি মো. শাহনওয়াজ, সিজেকেএস‘র সাবেক সহ সভাপতি অ্যাড. শাহীন আফতাবুর রেজা চৌধুরী, হাফিজুর রহমান, সৈয়দ আবুল বশর, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন মো. জাহাঙ্গীর, নির্বাহী সদস্য একেএম আব্দুল হান্নান আকবর, আ ন ম ওয়াহিদ দুলাল, সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার শহীদুর রহমান, পেশাজীবী নেতা ইঞ্জি. বেলায়েত হোসেন, ইঞ্জি. জানে আলম সেলিম, ডা. এস এম সারোয়ার আলম, হাজী মো. সালাউদ্দীন, আলহাজ্ব জাকির হোসেন, নারী নেত্রী জেলী চৌধুরী, কামরুন্নাহার লিজা, সিজেকেএস কাউন্সিলর ফরিদ আহমেদ, শর্মিষ্ঠা রায়, মাহমুদুর রহমান মাহবুব, এনামুল হক, সাইফুল্লাহ চৌধুরী, হারুন রশিদ, ওয়াসিম কামাল রাজা, ফারুক আহমেদ, আবুল হাসেম রাজা, শওকত হোসেন, মোমিনুল হক, আবু শামা বিপ্লব, ক্রীড়া সংগঠক এমদাদুল হক বাদশা, জমির উদ্দিন নাহিদ, শাহাবুদ্দিন বাবু, জাতীয় দলের খেলোয়াড় নাজিম উদ্দিন, ক্রিকেট কোচ মাসুম উদ্দৌলা প্রমূখ।