এবার সম্ভাবনা জাগিয়েও হার

ত্রিদেশীয় সিরিজ

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শুক্রবার , ১৪ অক্টোবর, ২০২২ at ৮:৫৪ পূর্বাহ্ণ

শেষ ম্যাচটা রাঙ্গানোর মত মঞ্চ তৈরি করে দিয়েছিল ব্যাটসম্যানরা। লিটন দাসের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস আর সাকিব আল হাসানের টানা দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরির সুবাদে ম্যাচ জয়ের মত অবস্থা তৈরি করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু বাবর আজম আর মোহাম্মদ রিজওয়ানের দায়িত্বশীল ব্যাটিং এর পাশাপাশি বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ন্ত্রণহীন বোলিং; শেষ পর্যন্ত হেরেই সিরিজ শেষ করতে হলো সাকিবদের। চার ম্যাচের চারটিতেই হেরে বিশ্বকাপ প্রস্তুতিটা সারতে হলো টাইগারদের। সিরিজের শেষ ম্যাচে পাকিস্তান জিতেছে ৭ উইকেটে। তিনটি করে ম্যাচ জেতা পাকিস্তান এবং স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড ফাইনালে মুখোমুখি হবে আজ।
ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফেরা লিটনের রানে ফেরার অপেক্ষায় ছিল বাংলাদেশ। সেটা পেয়েছে টাইগাররা বিশ্বকাপের আগে। আর সাকিবতো রয়েছেনই ফর্মে। তবে অন্যরা তেমন মেলে ধরতে পারেনি নিজেদের এই সিরিজে। তারপরও বিশ্বকাপে ভাল কিছু করার আশাবাদ টাইগার শিবিরে। সিরিজে নিজেদের সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর ১৭৩ রান করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দু একটি ক্যাচ ছাড়া ও বোলাররা আরেকটু নিয়ন্ত্রণ করে বল করতে পারলে হয়তো একটি জয় নিয়ে বিশ্বকাপে যেতে পারতো বাংলাদেশ।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের ইনিংস শুরু করতে নামেন শন্তি এবং সৌম্য। কিন্তু সুফল আসেনি। সিরিজের চার ম্যাচেই বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি ভাঙল তৃতীয় ওভারে। নাসিম শাহর বলে শাদাব খানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন সৌম্য মাত্র ৪ রান করে। বিশ্বকাপ স্কোয়াডে জায়গা পাওয়া সৌম্য পারলেন না নিজেকে প্রমাণ করতে। ষষ্ট ওভারে ফিরলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ১২ রান করেন তিনি। লিটনের সাথে ৩৪ রানের জুটিতে লিটনের অবদান ২৩ রান। পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৪১। এরপর জুটি বাধেন সাকিব এবং লিটন। তখন থেকে গল্পটা অন্য রকম। পাকিস্তানের বোলারদের উপর কেবলই বাংলাদেশের এই দুই ব্যাটসম্যানের শাসন। দুই জনের জুটিতে রান আসতে থাকে দ্রুত। দুজনের মধ্যে যেন প্রতিযোগিতা চলছিল রান তোলার। ৩১ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন লিটন আর সাকিব করেন ৩৪ বলে। নাওয়াজকে সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় লিটনের চমৎকার ইনিংস। ভাঙে ৮৮ রানের জুটি। ৪২ বলে ৬টি চার এবং ২টি ছক্কার সাহায্যে ৬৯ রান করে ফিরেন লিটন দাশ। এরপর প্রায় একাই খেলেন সাকিব। আগের দিনের ৭০ রানের ইনিংসকে টপকে যাওয়ার পথে বেশ ভালই এগুচ্ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা আর হলো না। টাইগার অধিনায়ক থামলেন ৬৮ রানে। লিটনের মত তিনিও খেলেছেন ৪২ বল। মেরেছেন ৭টি চার এবং ৩টি ছক্কা। পুরো ইনিংস দুর্দান্ত খেলা বাংলাদেশ শেষ ওভারে নিতে পেরেছে মাত্র ৩ রান। হারাতে হয় দুই উইকেট। ফলে ১৮০-১৮৫ অনুমিত স্কোরটি থামে ১৭৩ রানে।
১৭৪ রান তাড়া করতে নেমে পাকিস্তানের দুই ব্যাটিং ভরসা রিজওয়ান ও বাবর আজম জয়ের দারুণ এক ভিত গড়ে দেন পাকিস্তানকে। মাত্র ৭৫ বলে ১০১ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে দেন টি-টোয়েন্টির এই দুই বিশ্বসেরা ব্যাটসম্যান। বাবরকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙেন হাসান মাহমুদ। ৪০ বলে ৯টি চারের সাহায্যে ৫৫ রান করে ফিরেন পাকিস্তান অধিনায়ক। এক বল পর হায়দার আলিকে বোল্ড করে ম্যাচে উত্তেজনা ফেরানোর আভাস দিয়েছিলেন তরুণ পেসার হাসান মাহমুদ। কিন্তু কে জানতো সেখানেই শেষ হয়ে যাবে বাংলাদেশের বোলারদের সব জারিজুরি। রিজওয়ানের সাথে যোগ দিয়ে নেওয়াজ রানের চাকাকে ঘুরান আরো দ্রুত গতিতে। ৩৬ বলে ৬৪ রানের জুটি গড়ে দলকে নিয়ে যান একেবারে জয়ের কিনারায়। জয় থেকে পাকিস্তান যখন মাত্র ৮ রান দূরে তখন রিজওয়ানকে ফেরান সৌম্য সরকার। তবে ততক্ষণে নিজের আরো একটি হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন টি-টোয়েন্টি এক নম্বর এই ব্যাটসম্যান। ৫৬ বলে ৪টি চারের সাহায্যে ৬৯ রান করেন রিজওয়ান। একবল বাকি থাকতে চার মেরে ম্যাচ শেষ করে আসা নেওয়াজ অপরাজিত ছিলেন ২০ বলে ৪৫ রান করে। ম্যাচ সেরার পুরষ্কারটিও জিতেছেন রিজওয়ান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহিজাব নিয়ে মামলায় ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বিভক্ত রায়
পরবর্তী নিবন্ধকক্সবাজারে নিজ ঘরে ফল বিক্রেতার গলাকাটা লাশ