এবার মালদ্বীপকে হারালো বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক | রবিবার , ১৭ নভেম্বর, ২০২৪ at ৯:২৭ পূর্বাহ্ণ

ফুটবল মাঠে গোল যেন বাংলাদেশের জন্য সোনার হরিণের মতো বিষয়। কোনভাবেই গোল পাওয়া হয়ে উঠে না। মালদ্বীপের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেও স্বাগতিকরা হেরেছিল ১০ ব্যবধানে। তবে গতকাল শনিবার বাংলাদেশের ফুটবলাররা ঠিক উল্টো চিত্র এঁকেছে মাঠে। দ্বিতীয় ফিফা প্রীতি ম্যাচে তারা ২১ গোলে হারায় সফরকারী মালদ্বীপকে। গতকাল ১১ গোলে সমতায় থাকা ম্যাচের শেষ দিকে এসে বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা মিডফিল্ডার পাপন সিংহকে মাঠে নামান। আর সেই তিনিই হলেন বাংলাদেশের ত্রাতা! শাহরিয়ার ইমনের দারুণ এক ক্রসে পাপন জাল কাঁপান। তাতেই ফিফা প্রীতি ম্যাচের দ্বিতীয় ও শেষটিতে বাংলাদেশ পিছিয়ে থেকে ২১ গোলে মালদ্বীপকে হারিয়ে জয় করায়ত্ব করে নেয়। পাপনের আগে মজিবর রহমান জনি সমতাসূচক গোলটি করেছিলেন। বাংলাদেশ শুরুটা করেছিল কাজেম শাহর জায়গায় মজিবর রহমান জনিকে একাদশে নামিয়ে। আর শুরু থেকে খেলার সুযোগ পেয়ে তার গোলেই বাংলাদেশ সমতায় ফিরেছে। এর আগে অধিনায়ক তপু বর্মণের ভুলে স্বাগতিকরা পিছিয়ে পড়ে। আলি ফাসির গতকালও গোল করে মালদ্বীপকে শুরুতে এগিয়ে নেন।

কিংস অ্যারেনাতে ম্যাচের শুরু থেকে মালদ্বীপ খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসে ৪১ ছকে খেলছে। প্রেসিং ফুটবল তো ছিলই। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিল্ডআপ করে খেলার চেষ্টা করেছে। নিচ থেকে খেলা তৈরি করে আক্রমণ করার চেষ্টা। তবে আগের ম্যাচের মতো সুবর্ণ সুযোগ সেভাবে তৈরি করতে পেরেছে কমই। তাই আক্রমণে মালদ্বীপ ছিল এগিয়ে। ১৯ মিনিটে বঙের বাইরে থেকে ফাসিরের জোরালো শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। আগের ম্যাচে গোল এসেছিল ১৮ মিনিটে। গতকাল হয়েছে ২৩ মিনিটে। তপুর ভুলের মাশুল দিতে হয়েছে। ফাসির আরও একবার বাংলাদেশের হৃদয় ভাঙেন। তপুর শট গিয়ে পড়ে মালদ্বীপের একজনের পায়ে, সেখান থেকে ডিফেন্স চেড়া পাস ফাসির পেয়ে আগুয়ান গোলকিপারের পাশ দিয়ে বাঁ পায়ে আলতো করে জড়িয়ে দেন জালে। তপু আটকানোর চেষ্টা করেন ফাসিরকে, কিন্তু গোল বাঁচাতে পারেননি। তবে পিছিয়ে থেকে বাংলাদেশ বলার মতো দুটি সুযোগ পায়। ২৮ মিনিটে রাকিবের শট পোস্টের অনেক দূর দিয়ে যায়। ৪০ মিনিটে আরও একটি সুযোগ নষ্ট হয়েছে। রাকিবের নিচু ক্রসে ফাহিম চলতি বলে প্লেসিং করলে গোলকিপার একটু পাশে সরে হাত দিয়ে প্রতিহত করেন। ফিরতি বলে মোরসালিনের শট পোস্টের অনেক ওপর দিয়ে যায়। তিন মিনিট পর জনি দারুণ এক গোলে গ্যালারিতে আনন্দের বন্যা বইয়ে দেন। বক্সের বাইরে থেকে মোরসালিনের পাসে এক ডিফেন্ডারকে ডজ দিয়ে চার জনের মাঝ দিয়ে দারুণভাবে জায়গা বের করে নিয়ে দূরের পোস্ট দিয়ে জাল কাঁপান তিনি। গোলকিপার বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়েও গোল বাঁচাতে পারেননি। বিরতির পর আবার বাংলাদেশ ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই নিজেদের কাছে রাখে। ৪৯ মিনিটে ভালো সুযোগ ছিল। রাকিব বক্সের বাইরে এক জনকে ডজ দিয়ে বাঁ পায়ের বুলেট গতির শট জালে জড়ানোর আগ মুহূর্তে গোলকিপার হুসেইন শরীফ এক হাত দিয়ে কোনোমতে প্রতিহত করে ব্যবধান বাড়তে দেননি। ৫৩ মিনিটে মালদ্বীপের একজনের ক্রস থেকে আহমেদ রিজুভানের হেড গোলকিপার রুখে দিয়ে তাদেরকেও এগিয়ে যেতে দেননি। রহমত মিয়া, শাহরিয়ার ইমন, চন্দন রায় নামেন মাঠে। আক্রমণে গতি আরও বাড়ে। ৭৭ মিনিটে আবার মোরসালিনের জায়গায় পিয়াস আহমেদ নোভার অভিষেক হয়। ৮৪ মিনিটে অভিষেকটা স্মরণীয় করতে পারতেন তিনি গোল করে। কিন্তু শাহরিয়ার ইমনের শট গোলকিপার শরীফ ঠিকমতো তালুতে জমাতে পারেননি, ফিরতি বলে সামনে থাকা নোভার দুর্বল শট আস্তে আস্তে বারের পাশ দিয়ে যায়। ৮৮ মিনিটে রহমতের ফ্রি কিকে তপুর হেডও একইভাবে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এরপরই পাপন বদলি হন, সোহেল রানার জায়গায় নামেন। যোগ করা সময়ে তার গোলে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত হয়। শাহরিয়ার ইমনের নিঁখুত ক্রসে পাপন বক্সের ভেতর থেকে দারুণ এক প্লেসিং শটে জালে বল ঠেলে দেন। আর তাতে করেই ফুটবলে বছরটা বাংলাদেশ জয় দিয়ে শেষ করতে পেরেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাংলাদেশের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সিরিজ আশা করছেন উইন্ডিজ কোচ আন্দ্রে কোলি
পরবর্তী নিবন্ধবোলারদের দাপটের দিনে চট্টগ্রাম এগিয়ে ৬১ রানে