এবার গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া এক ছাত্রের বিরুদ্ধে। আবার যখন ডাকবে তখন না এলে বা এই কথা কাউকে বললে ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছে ওই ধর্ষক ও তার এক বন্ধু।
ধর্ষণের এ দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে ধর্ষকটির বন্ধুটি। বাংলানিউজ
আজ সোমবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে ওই স্কুলছাত্রীর বাবা কোটালীপাড়া উপজেলার পিনজুরী ইউনিয়নের কাশাতলী গ্রামের ডালিম দাঁড়িয়া বাদী হয়ে কোটালীপাড়া থানায় মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেন।
এর আগে, শনিবার (৩ অক্টোবর) উপজেলার ধারাবাশাইল গ্রামের ইব্রাহিম হাওলাদারের মাছের ঘেরপাড়ে ধর্ষণের এ ঘটনা ঘটে। ওই স্কুলছাত্রী কোটালীপাড়া উপজেলার পিনজুরী ইউনিয়নের কাশাতলী মেধাবিকাশ ডিজিটাল স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী।
ধর্ষণের শিকার ওই স্কুলছাত্রী বলে, গত শনিবার সকাল ৯টায় মেধাবিকাশ ডিজিটাল স্কুলের সোহাগ স্যারের কাছ থেকে প্রাইভেট পড়ে স্থানীয় চৌধুরী বাজারে খাতা ও কলম কিনতে যাই। তখন একই উপজেলার পূর্ণবতী গ্রামের মহাসিন উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে আলী হোসাইন হাওলাদার ও একই গ্রামের ইব্রাহিম হাওলাদারের ছেলে মাসুদ হাওলাদার আমাকে ভয় দেখিয়ে নৌকায় করে ধারাবাসাইল গ্রামে অবস্থিত ইব্রাহিম হাওলাদারের মাছের ঘেরে নিয়ে যায়। বিল বেষ্টিত নির্জন ঘেরের একটি টং ঘরে আলী হোসাইন হাওলাদার তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে বলে। এতে রাজি না হওয়ায় আমাকে মারধর করে। মারধরের এক পর্যায়ে ধর্ষণ করে। এ সময় তার বন্ধু মাসুদ হাওলাদার মোবাইল ফোনে ভিডিও করে। সেই সময় ধর্ষণের কথা কাউকে বললে এবং আগামীতে ডাকলে না এলে ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দিবে বলে হুমকি দেয়। পরে দুপুর ২টার দিকে আমি বাড়িতে এসে বিষয়টি মাকে জানাই।
এদিকে, বিষয়টি জানাজানি হলে ধামাচাপা দিতে একটি মহল উঠে পড়ে লাগে।
মহলটি সালিশ মীমাংসা করার উদ্যোগ নেয় কিন্তু ওই স্কুলছাত্রীর পরিবার রাজি না হওয়ায় তাদের চেষ্টা ভেস্তে যায়।
ওইদিন সন্ধ্যায় নির্যাতিত স্কুলছাত্রীর খালু হালিম শাহ বিষয়টি কোটালীপাড়ায় থানায় বিষয়টি জানান।
ওই স্কুলছাত্রীর খালু বলেন, “ঘটনার দিন শনিবার সন্ধ্যায় আমি কোটালীপাড়ায় থানায় গিয়ে জানাই কিন্তু এ কয়দিন থানা থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এরপর পিনজুরী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রাজা হাওলাদার ও সরোয়ার তালুকদার মেয়ের বাবাকে ডেকে নিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন কিন্তু আমরা রাজি না হওয়ায় সোমবার কোটালীপাড়া থানা থেকে পুলিশ এসে খোঁজ খবর নিয়ে যায়। আমাদের থানায় যেতে বলেছে।”
নির্যাতনের শিকার ওই স্কুলছাত্রীর বড় বোন বলেন, “এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে তো কোনো মেয়ে ভয়ে ঘর থেকে বের হবে না। তাই আমি আমার বোনের ধর্ষক ও সহায়তাকারীর গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
কোটালীপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাকারিয়া বলেন, “স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছে। দোষীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ওই স্কুলছাত্রীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে।”