এবার এমপিওভুক্ত সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে শাহবাগ ছাড়লেন শিক্ষক-কর্মচারীরা

| বৃহস্পতিবার , ১৬ অক্টোবর, ২০২৫ at ৬:৩৪ পূর্বাহ্ণ

আগের তিন দফা দাবি থেকে সরে এসে এবার সব বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে আন্দোলন শুরুর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষককর্মচারীরা। চলমান আন্দোলনের তিন দফা দাবি পূরণে বুধবার (গতকাল) রাতের মধ্যে প্রজ্ঞাপন মেনে নেওয়া না হলে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের এক দাবিতে আন্দোলন শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়।

অপরদিকে মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া ভাতা নির্ধারণসহ তিন দফা দাবি পূরণে সরকারকে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এ সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে তারা শহীদ মিনার থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করবেন। গতকাল বিকালে ‘মার্চ টু যমুনার’ এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠনগুলোর মোর্চা এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী। শাহবাগে দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত তিন ঘণ্টা অবরোধ শেষে শহীদ মিনারে ফিরে এসে সোয়া ৫টায় এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি। তিনি বলেন, বুধবারের মধ্যে আমাদের তিন দফা দাবি মেনে প্রজ্ঞাপন জারি করা না হলে আমরা আর তিন দফায় থাকব না। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে শহীদ মিনারে শিক্ষককর্মচারীরা আন্দোলন করবেন। খবর বিডিনিউজের। মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া ভাতা, এমপিওভুক্ত শিক্ষককর্মচারীদের চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা করা এবং এমপিওভুক্ত কর্মচারীদের উৎসব ভাতা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ করার দাবিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের ব্যানারে গত রোববার থেকে আন্দোলন চালাচ্ছেন শিক্ষককর্মচারীরা। রাজধানীতে সে থেকে প্রতিদিনই সভা, সমাবেশ, বিক্ষোভ, পদযাত্রা ও অবরোধের মত কর্মসূচি পালন করছেন তারা। এর মধ্যে এবার তারা সব বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের এক দফা ঘোষণা দিলেন।

কেন সব প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের এক দফা : সব বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ বলতে আন্দোলনরত শিক্ষককর্মচারীরা দেশের ৩১ হাজার এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্থাবরঅস্থাবর সব সম্পদের মালিকানা সরকারের কাছে হস্তান্তর এবং প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনার দায়িত্ব সরকারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন।

আন্দোলনকারীদের জোটের যুগ্মআহ্বায়ক ও বাংলাদেশ শিক্ষক ফোরামবিটিএফের সভাপতি মো. হাবিবুল্লাহ্‌ রাজু বলেন, জাতীয়করণ বলতে তারা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রায় ছয় লাখ শিক্ষককর্মচারীদের আত্তীকরণের মাধ্যমে রাজস্বখাতে বেতনভুক্ত পদে নিয়োগ ও অন্যান্য সুবিধা দেওয়ার দাবি করছেন। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের স্বল্প খরচে শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করার কথা বলেছেন তারা।

দাবি পরিবর্তনের কারণ বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করা হলে শিক্ষককর্মচারীরা সরকারি নিয়মে সুযোগ সুবিধা পাবেন। সে ক্ষেত্রে ঢাকা ও চট্টগ্রামের শিক্ষক কর্মচারীরা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ, শতভাগ উৎসব ভাতা এবং চিকিৎসা ভাতা পাবেন। আর জাতীয়করণের মাধ্যমে শিক্ষার সুযোগ সমপ্রসারিত হবে।

এদিকে গতকাল বিকালে যখন শিক্ষককর্মচারীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে ছিলেন তখন সেখানে আসেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকি এবং এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। শিক্ষক নেতাদের ভাষ্য, তারা দাবিদাওয়া নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষে দর কষাকষি করতে এসেছিলেন। এ সময় শিক্ষককর্মচারীরা ‘ভুয়া, ভুয়া’, ‘দালাল, দালাল’, ‘২০ পারসেন্ট ২০ পারসেন্ট ঘোষণা দেন। এসময় শিক্ষক নেতারা তাদের স্পষ্ট জানিয়ে দেন তাদের তিন দফা দাবি পূরণ করতে হবে।

তিন দাবিতে গত রোববার থেকে আন্দোলন করছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষককর্মচারীরা। চতুর্থ দিনের মত অবস্থান কর্মসূচি পালন করা শিক্ষককর্মচারীরা গতকাল দুপুর ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত বিকাল রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে সন্ধ্যায় শহীদ মিনারে এসে অবস্থান নেন। দাবি মেনে নিতে গতকাল সরকারকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সময় দিয়েছিলেন এমপিওভুক্ত শিক্ষককর্মচারীরা। দাবি পূরণ না হওয়ায় পূর্বঘোষিত ‘শাহবাগ ব্লকেড’ কর্মসূচি পালনে দুপুর তারা শাহবাগ মোড় আটকে দেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচকরিয়ায় ২০ হাজার ইয়াবাসহ দম্পতি গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধফটিকছড়িতে পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু